প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৯
কমিউনিটি পুলিশিং টহল সদস্যদের সাফল্যকে মূল্যায়ন করা হোক

চাঁদপুর পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ডের জিটি রোড এলাকায় মো. আলাউদ্দিন মোল্লার বাড়িতে চুরির ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (৫ জুলাই ২০২৫) বিকেলে আলাউদ্দিন মোল্লার বাড়ির ভাড়াটিয়া সুফিয়া বেগমের ঘরে চুরি করতে গেলে সুমন নামের এক চোরকে হাতেনাতে ধরে ফেলে কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির টহল সদস্যরা। পরে চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চুরির সরঞ্জামসহ সুমনকে আটক করে। তাকে ঘরের ভেতর থেকে তালা ভেঙ্গে বের করা হয়। জানা যায়, সুফিয়া বেগম (৬০) পেশায় একজন গৃহকর্মী। কিছুদিন আগে তিনি তার মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। তার ঘরে রাখা বিয়ের স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও ফ্রিজে রাখা কোরবানির গরুর মাংস চুরি হয়ে যায়। তিনি জানান, চোর টয়লেটের পাইপ ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। দুদিন ধরে তার অনুপস্থিতির সুযোগে চোর ধীরে ধীরে সব কিছু নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, ঘটনাটি জানার পরই আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং অভিযুক্ত সুমনকে চুরির সরঞ্জামসহ আটক করি। সে এর আগেও কয়েকবার এ ধরনের অপরাধে জড়িত ছিলো বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের তৎপরতায় এলাকাবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে জননিরাপত্তার স্বার্থে ভবিষ্যতে এমন চুরি প্রতিরোধে আরও সচেতন ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ওসি মো. বাহার মিয়া। আমরা মনে করি, চাঁদপুর মডেল থানার ওসির পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশিংয়ের টহল সদস্যকে চোর ধরার সাফল্যের জন্যে পুরস্কৃত করা দরকার। বর্তমানে এই পুরস্কারের বিষয়টি দেখা না গেলেও একসময় দেখা যেতো। কমিউনিটি পুলিশিং টহল সদস্যদের যে কোনো কৃতিত্বে পুলিশ সুপার নগদ অর্থ পুরস্কার ও সনদ প্রদান করতেন। গত ক’বছর ধরে সেটি নেই। অথচ চাঁদপুর শহরে গত ২৬ বছর ধরে রাতের বেলা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় আছে এই টহল সদস্যদের কারণে। মাত্র ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা মাসিক বেতনে এরা যে দায়িত্বটি পালন করে, সেটা দ্রব্যমূল্যের বর্তমান ঊর্ধ্বগতির বাজারে খুবই সামান্য। তারপরও কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির কর্মকর্তাদের কাউন্সেলিংয়ে তারা যৎসামান্য বেতনে চাকুরি করছে এবং রাতের বেলা চাঁদপুর শহরকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে, যেটা চাঁদপুর মডেল থানা কর্তৃপক্ষকে নির্ভার রাখছে। চাঁদপুর শহরে ১৯৯৯ সালের আগে যখন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের টহল কার্যক্রম ছিলো না, তখন চাঁদপুর শহরে চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই রোধে মডেল থানাকে ভীষণ ব্যস্ত থাকতে হতো। বর্তমানে তার দশ ভাগও ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে না। সে বিবেচনায় কমিউনিটি পুলিশিংয়ের যে কোনো সাফল্যে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে মূল্যায়নধর্মী কিছু করার কথা ভাবাটা সর্বদাই সমীচীন। অন্যথায় স্বল্প বেতনভুক টহল সদস্যরা নিরুৎসাহ বোধ করবে বলে আমরা মনে করি।