প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ভ্যালেন্টাইন’স্ ডের নামে যা চলছে-
১৪ ফেব্রুয়ারি সাধু ভ্যালেন্টাইন’স্ ডে, যা বর্তমানে ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ নামে ব্যাপক উদ্দীপনার সাথে আমাদের দেশেও পালিত হচ্ছে। মূলত দিবসটি ছিলো প্রাচীন ইউরোপীয় গ্রীক-রোমান পৌত্তলিকদের একটি ধর্মীয় দিবস। এ গ্রীক-রোমান পৌত্তলিকগণ মধ্য ফেব্রুয়ারি ভূমি ও নারী উর্বরতা এবং নারীদের বিবাহ ও সন্তান কামনায় প্রাচীন দেব-দেবীদের বর লাভ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে বিভিন্ন নগ্ন ও অশ্লীল উৎসব পালন করতো এবং প্রকৃতির পূজা করতো, যা লুপারকালিয়া (খঁঢ়বৎপধষরধ) উৎসব (ভবধংঃ ড়ভ খঁঢ়বৎপধষরধ) নামে প্রচলিত ছিলো। ইউরোপে খ্রিস্টান ধর্মের প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা লাভের পরেও এ সকল অশ্লীল উৎসব অব্যাহত থাকে। পরে এ লুপারকালিয়া উৎসবকে ‘খ্রিস্টিয়’ রূপ দেওয়া হয়।
বস্তুত হযরত ঈসা (আঃ)-এর প্রস্থানের কয়েক বছর পর শৌল নামক এক ইয়াহুদী, যিনি পরে পৌল নাম ধারণ করেন; হযরত ঈসা (আঃ)-এর শরীয়তকে বিকৃত করেন। শৌল প্রথমে হযরত ঈসা (আঃ)-এর প্রতি যারা ঈমান এনেছিলেন তাদের উপর কঠিন অত্যাচার করেন। হঠাৎ তিনি দাবি করেন যে, যীশু তাকে দেখা দিয়েছেন এবং তাকে ধর্ম প্রচারের দায়িত্ব দিয়েছেন। ফিলিস্তিনে হযরত ঈসা (আঃ)-এর প্রকৃত অনুসারীরা তার বিষয়ে সন্দেহ করলে (তার দ্বিমুখী আচরণের কারণে), তিনি এশিয়া মাইনর ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গিয়ে খিস্টান ধর্ম প্রচার করেন। বর্তমান প্রচলিত খিস্টান ধর্মের তিনিই (পৌল নামে শৌল) প্রতিষ্ঠাতা। পৌল প্রবর্তিত এ ধর্মের মূলনীতি হলো, ঈশ্বরের মর্যাদা রক্ষার জন্যে যত খুশি মিথ্যা বল। প্রয়োজন মত যত ইচ্ছা পরিবর্তন, পরিবর্ধন করো এবং মিথ্যা বলে মানুষকে ‘খিস্টান’ বানাও। পৌল নিজেই বলেছেন, ‘ঋড়ৎ রভ ঃযব ঃৎঁঃয ড়ভ এড়ফ যধঃয সড়ৎব ধনড়ঁহফবফ ঃযৎড়ঁময সু ষরব ঁহঃড় যরং মষড়ৎু; যিু ুবঃ ধস ও ধষংড় লঁফমবফ ধং ধ ংরহহবৎ?’ ‘কিন্তু আমার মিথ্যায় যদি ঈশ্বরের সত্য তাঁহার গৌরবার্থে উপচিয়া পড়ে, তবে আমিও বা এখন পাপী বলিয়া আর বিবেচিত হইতেছি কেন?’ (বাইবেল, রোমান ৩/৭)
হযরত ঈসা (আঃ) যেখানে এক আল্লাহতে বিশ্বাস করতে, সালাত আদায় করতে, সিয়াম পালন করতে, শূকরের মাংস ভক্ষণ না করতে, তাওরাতের সকল বিধান পালন করতে, ব্যভিচার বর্জন করতে, অশ্লীলতা ত্যাগ করতে, সততা ও পবিত্রতা অর্জন করতে নির্দেশ দিয়েছেন, সেখানে পৌল এ সকল বিধান বাতিল করে ধর্মের মধ্যে নতুন নতুন অনুষ্ঠান ও নিয়মকানুন জারি করেছেন এবং যে সমাজে ও যুগে যা প্রচলিত ছিলো তাকে একটি ‘খ্রিস্টিয়’ নাম দিয়ে ধর্মে বৈধ করার ব্যবস্থা করেছেন। এজন্যে জে. হিকস (ঔ. ঐরপশং) তার লেখা (ঞযব গুঃয ড়ভ এড়ফ ওহপধৎহধঃব) গ্রন্থে বলেন, ‘ঈযৎরংঃরধহরঃু যধং ঃযৎড়ঁমযড়ঁঃ রঃং যরংঃড়ৎু নববহ ধ পড়হঃরহঁড়ঁংষু মৎড়রিহম সড়াবসবহঃ ড়ভ ধফলঁংঃসবহঃং’
এ পরিবর্তনের ধারায় ৫মণ্ড৬ষ্ঠ খ্রিস্টিয় শতকে রোমান পৌত্তলিকদের এ লুপারকালিয়া (খঁঢ়বৎপধষরধ) উৎসবকে ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’স্ ডে বা সাধু ভালোবাসা দিবস’ নামে ধর্মে চালানোর ব্যবস্থা করা হয়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামক ব্যক্তিটি কে ছিলেন তা নিয়ে অনেক কথা আছে। উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, ২৬৯ সালে ইতালির রোমে জুলিয়াস ভ্যালেন্টাইন নামে একজন খিস্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচারের অভিযোগে তৎকালীন রোম স¤্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাকে বন্দি করেন। কারণ তখন রোমান সা¤্রাজ্যে খিস্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দী অবস্থায় তিনি কারারক্ষীর দৃষ্টিহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে তাঁর জনপ্রিয়তা আরো বেড়ে যায়। তাই রাজা ক্রাডিয়াস ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি এ দণ্ড কার্যকর করা হয়। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও, জুলিয়াস ভ্যালেন্টাইন স্মরণে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’স্ ডে বা ‘সাধু ভালোবাসা দিবস’ নামে পালনের ঘোষণা দেন। এভাবে আমরা দেখছি যে, এ দিবসটি একান্তই পৌত্তলিক ও খ্রিস্টানদের ধর্মীয় দিবস। কিন্তু বর্তমানে আন্তর্জাতিক সা¤্রাজ্যবাদীরা এ দিবসকে ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ নাম দিয়ে এটিকে ‘ধর্ম নিরপেক্ষ’ বা সার্বজনীন রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের উদ্দেশ্য ‘ভালোবাসা দিবসের’ নামে যুবক-যুবতীদেরকে মাতিয়ে ব্যাপক বাণিজ্য করা, যুবক-যুবতীদের নৈতিক ও চারিত্রিক ভিত্তি নষ্ট করে দেয়া এবং তাদেরকে ভোগমুখী করে স্থায়ীভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সা¤্রাজ্যবাদের অনুগত করে রাখা।
আরবীতে ‘মুহাব্বত’, ইংরেজিতে ‘খড়াব’, বাংলায়-‘ভালোবাসা’ একটি হৃদয়ের কর্ম। দর্শন, শ্রবণ ও পানাহার ইত্যাদি কর্মের মত ভালোবাসাও ইসলামের দৃষ্টিতে কখনো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং কখনো কঠিন নিষিদ্ধ হারাম কর্ম। আল্লাহকে ভালোবাসা, তাঁর রাসূল (সাঃ)কে ভালোবাসা, পিতা-মাতাকে ভালোবাসা, স্বামী-স্ত্রীকে ভালোবাসা, ভাইবোনকে ভালোবাসা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের ভালোবাসা, সৎ মানুষকে ভালোবাসা, সকল মুসলিমকে ভালোবাসা, সকল মানুষকে ভালোবাসা, সর্বোপরি মহান আল্লাহর সকল সৃষ্টিকে ভালোবাসা ইসলাম নির্দেশিত কর্ম। এরূপ ভালোবাসা মানুষের মানবীয় মূল্যবোধ উজ্জ্বীবিত করে, হৃদয়কে প্রশস্ত ও প্রশান্ত করে এবং সমাজ ও সভ্যতার বিনির্মাণে কল্যাণময়, গঠনমূলক ভূমিকা ও ত্যাগ স্বীকারে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে। শুধু তাই নয়, আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্যে এরূপ ভালোবাসা অপরিহার্য। হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘যারা আমার (আল্লাহর) সন্তুষ্টির আশায় পরস্পরকে ভালোবাসে, আমার রেজামন্দির আশায় পরস্পর বৈঠকে মিলিত হয়, আমার সন্তুষ্টি কামনায় পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ করে এবং আমার ভালোবাসার জন্যেই নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদেরকে ভালোবাসা আমার জন্যে ওয়াজিব হয়ে যায় (মুসলিম)।’ কিন্তু আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সা¤্রাজ্যবাদদের প্রচারিত তথাকথিত এ ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে’ ভালোবাসার এ দিকগুলো একেবারেই উপেক্ষিত, অথচ সংঘাতময় এ পৃথিবীকে মানুষের বসবাসযোগ্য করার জন্যে এরূপ ভালোবাসা প্রচার, প্রসার ও প্রতিষ্ঠার কতই না প্রয়োজন।
ভালোবাসার একটি বিশেষ দিক নারী ও পুরুষের জৈবিক ভালোবাসা। আন্তর্জাতিক বেনিয়া সা¤্রাজ্যবাদীরা ভালোবাসা দিবসের নামে শুধু যুবক-যুবতীদের বিবাহিতের এরূপ জৈবিক ভালোবাসায় উস্কে দিচ্ছে। যুবক-যুবতীদের বয়সের উন্মাদনাকে পুঁজি করে, তাদেরকে অশ্লীলতায় ডুবিয়ে আমাদের পারিবারিক ব্যবস্থা, সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি, ধর্ম ও মূল্যবোধ ধ্বংস করে তাদের স্থায়ী অনুগত করে রাখতে চায়। যদি কোন সমাজে পারিবারিক বন্ধনের বাইরে নারী-পুরুষের এরূপ অশ্লীল সম্পর্ক শুরু হয়ে যায়, তাহলে সে সমাজ ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হয়ে যায়। তাই সকল আসমানী ধর্ম, সভ্য সমাজ ও মানুষ ব্যভিচার ও বিবাহিতের ‘ভালোবাসা’ কঠিনতম পাপ ও জঘন্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে। আর ইসলাম শুধু ব্যভিচার নিষিদ্ধই করে নি, বরং ব্যভিচারের নিকটে নিয়ে যায় বা ব্যভিচারের পথ খুলে দেয় এমন সকল কর্ম নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, ‘বল, আমার প্রতিপালক হারাম করেছেন সকল প্রকার অশ্লীলতা, তা প্রকাশ্য হোক আর অপ্রকাশ্য হোক।’ (সূরা আরাফ-৩৩) তিনি আরো বলেছেন, ‘তোমরা নিকটবর্তী হয়ো না ব্যভিচারের, নিশ্চয়ই তা অশ্লীল এবং নিকৃষ্ট আচরণ।’ (সূরা বানী ইসরাঈল-৩২) রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘চক্ষুদ্বয়ের ব্যভিচার দৃষ্টিপাত, কর্ণদ্বয়ের ব্যভিচার শ্রবণ, জিহ্বার ব্যভিচার কথা বলা, হাতের ব্যভিচার স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার পদক্ষেপ, অন্তরের ব্যভিচার কামনা।’ (মুসলিমণ্ড৪/২০৭৪)
ভালোবাসা দিবসের নামে যা কিছু করা হয় সবই এ পর্যায়ের ব্যভিচার, যা অধিকাংশ সময় চূড়ান্ত ব্যভিচারের পঙ্কিলতার মধ্যে নিমজ্জিত করে। আর এ ভয়ঙ্কর পাপের জন্যে পরকালেতো হবেই, দুনিয়াতেও নেমে আসবে ভয়ঙ্কর শাস্তি। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘যখন কোনো জাতির মধ্যে অশ্লীলতা এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে, তারা প্রকাশ্যে অশ্লীলতায় লিপ্ত হতে থাকে, তখন তাদের মধ্যে এমন সব রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে যা তাদের পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিলো না।’ (ইবনু মাজাহ)
এই ‘ভালোবাসা দিবস’ এটি শুধু অশ্লীলতাই নয়, অপসংস্কৃতির বিষাক্ত ছোবলও। এ উপমহাদেশের হিন্দু, মুসলিম কোন ধর্ম, সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে এটি পালনের রীতি ছিলো না। এটি আমাদের ধর্মবিশ্বাস, সভ্যতা, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ পরিপন্থি। কারণ সংস্কৃতির পরিচয় হলো-ঈঁষঃঁৎব রং ঃযব নবষরবভং, ধিু ড়ভ ষরভব, ধৎঃ ধহফ পঁংঃড়সং ঃযধঃ ধৎব ংযধৎবফ ধহফ ধপপবঢ়ঃবফ নু ঢ়বড়ঢ়ষব রহ ধ ঢ়ধৎঃরপঁষধৎ ংড়পরবঃু. (খড়হমসধহ উরপঃরড়হধৎু) অর্থাৎ সুনিদিষ্ট কোন সমাজে বসবাসরত মানুষের বিশ্বাস, জীবন প্রণালী, শিল্প, সাহিত্য, সংগীত এবং প্রথা যা ঐ সমাজের মানুষের নিকট গ্রহণীয় তা-ই সংস্কৃতি।
তাইতো ‘ভালোবাসা দিবস নামের অপসংস্কৃতি’ ভারতের নিজস্ব সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যায় বলে ভারতে এটি নিষিদ্ধের জন্য আন্দোলন করেন ডানপন্থি হিন্দু সংগঠন ‘অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা’ সহ আরো অনেক সংগঠন। এমনকি ১৭৭০ সালে ফ্রান্স সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এটি নিষিদ্ধ করা হয়। তাই একজন বিশ্বাসী মানুষ হিসেবে আমাদেরকে এ দিবস সম্পর্কে ভাবতে হবে। স্বামী-স্ত্রী, বাবা-মা, সন্তান, বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজন, ছোট-বড় একে অপরকে উপহার দেওয়া, ম্যাসেজ দেওয়া, শুভ কামনা করা, খোঁজ-খবর নেওয়া, ভালো কর্ম ও পুণ্যের কাজ। তবে শুধু নির্দিষ্ট করে এ দিবসেই (১৪ ফেব্রুয়ারি) নয়, শুধু এ দিবসকে কেন্দ্র করে এরূপ করলে আমরা ঈমানের দৌলত হারাবো। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির অনুকরণ করবে, সে ওই জাতির মধ্যে গণ্য হবে।’ (মুসনাদে আহমদ) কারণ এ দিবসটি প্রাচীন গ্রীক-রোমান পৌত্তলিকদের ‘লুপারকালিয়া’ নামের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের দিবস। আসুন আমরা নিজস্ব ধর্ম, স্বকীয়তা ও মূল্যবোধে উদ্ভাসিত হই, আল্লাহর দেওয়া দ্বীন (ইসলামী জীবন ব্যবস্থায়) ও গুণাবলিতে নিজেদেরকে সজ্জিত করি। আল্লাহ তা’আলার বাণী- ‘তোমরা আল্লাহর রঙে (আল্লাহ প্রদত্ত দ্বীন ও গুণাবলিতে) নিজেদেরকে রঙিন কর। আল্লাহর রঙের চেয়ে উত্তম রঙ আর কার?’ (সূরা আল বাকারা-১৩৮)
লেখক : নূর মোহাম্মদ, প্রভাষক (ইসলাম শিক্ষা), বলাখাল মকবুল আহমেদ ডিগ্রি কলেজ, বলাখাল, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।