মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

এক কর্মদিবসে পেনশন মঞ্জুরের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন
মহিউদ্দীন ও মেহেদী হাসান ॥

কচুয়া উপজেলার উত্তর শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খালেদা আক্তার গত ১৮ জুন ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না.....রাজিউন)। মৃত্যুর পর তার স্বামী জালাল উদ্দীন পেনশনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে ৯ আগস্ট সোমবার কচুয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার এএইচএম শাহরিয়ার রসুলের কাছে জমা দেন। খবর শুনে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাহাব উদ্দীন উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রক্রিয়া শেষ করে ফাইলটি দ্রুত চাঁদপুর জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণের জন্যে নির্দেশ প্রদান করেন। নির্দেশ পেয়ে প্রক্রিয়া শেষে ১২ আগস্ট বৃহস্পতিবার ফাইলটি জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হয়। তিন দিন সরকারি বন্ধ থাকার কারণে ১৬ আগস্ট এক কর্মদিবসের মধ্যেই সকল প্রক্রিয়া শেষে পেনশন আবেদন মঞ্জুর করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। ওই দিন বিকেলে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি কচুয়া উপজেলা শাখার সভাপতি ওমর খৈয়াম বাগদাদী রুমি ও সহকারী শিক্ষক প্রয়াত খালেদা আক্তারের স্বামী এবং সন্তানদের নিকট পেনশন মঞ্জুরের আদেশ কপি তুলে দেন তিনি।

এতে তাঁকে মানবিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে আখ্যায়িত করে তাঁর কর্তব্যপরায়ণতায় অভিভূত হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মহল অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। তিনি প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের অফিসিয়াল সমস্যা দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করে ইতিপূর্বে প্রশংসিত হয়েছেন বলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এক প্রতিক্রিয়ায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাহাব উদ্দীন জানান, এটা আমার কর্ম জীবনের দায়িত্ব। দীর্ঘদিন ধরেই প্রয়াত সহকারী শিক্ষিকা ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে ভুগছিলেন। আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে তার এবং তার পরিবারের সাথে সব-সময় যোগাযোগ রেখেছি। তার মৃত্যুর দিন রাত ৩টায় অক্সিজেন প্রয়োজন হলে এক শিক্ষক নেতার মাধ্যমে তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছি। এই মর্মান্তিক ঘটনা আমার জীবনেও ঘটতে পারতো। আমি আমার দায়িত্ববোধ থেকেই এ সকল কাজ করেছি। আমি গত সোমবার তার দুই সন্তানদের দেখে জড়িয়ে ধরে কান্না থামাতে পারিনি। আমি তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার এএইচএম শাহরিয়ার রসুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কচুয়া উপজেলার উত্তর শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রয়াত খালেদা আক্তারের ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তার পরিবারকে সমবেদনা জানাই এবং তার স্বামী জালাল উদ্দীনকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়াত খালেদার পেনশনের জন্যে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র নিয়ে আবেদন করতে অনুরোধ জানাই। গত ৯ আগস্ট প্রয়াত খালেদার পেনশনের আবেদন আমার হাতে আসলে জেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে দ্রুত সময়ে সকল প্রক্রিয়া শেষে আমি ১২ আগস্ট জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করি।

তিনি আরো জানান, অসুস্থকালীন সময়ে তিনি যে ছুটি কাটিয়েছিলেন আজ ১৭ আগস্ট (মঙ্গলবার) তা পাস করে একাউন্টস অফিসে প্রেরণ করেছি।

প্রয়াত খালেদার স্বামী জামাল হোসেন জানান, কচুয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্যারের নিকট আমি কৃতজ্ঞ। আমার স্ত্রী অসুস্থ থাকার সময়ও সবসময় খোঁজখবর নিয়েছেন। আমার স্ত্রীর জীবন সায়াহ্নে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে অক্সিজেন প্রয়োজন এমন খবরে তিনি রাত ৩টার দিকে সহকারী শিক্ষক নেতা ওমর খৈয়াম বাগদাদী রুমিকে দিয়ে আমার স্ত্রীর জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রেরণ করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে পেনশন আবেদন মঞ্জুর হওয়ায় মহান আল্লাহতালার নিকট তাঁদের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি কচুয়া উপজেলা শাখার সভাপতি ওমর খৈয়াম বাগদাদী রুমি আমার স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আমাদের সাথে সব-সময় যোগাযোগ রেখেছেন এবং সহযোগিতা করেছেন। আমি তাঁর নিকটও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি কচুয়া উপজেলা শাখার সভাপতি ওমর খৈয়াম বাগদাদী রুমি জানান, এক কর্মদিবসের মধ্যে আমার সহকর্মী প্রয়াত শিক্ষক খালেদা আক্তারের পেনশন আবেদন মঞ্জুর করায় আমি কৃতজ্ঞচিত্তে চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাহাব উদ্দীন স্যার এবং কচুয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার এএইচএম শাহরিয়ার রসুল স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাঁরা চাঁদপুরের ইতিহাসে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্যে মহান আলাহর কাছে তাঁদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়