প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পার্শ্বস্থ সওজের খাল ভরাট করা রুখে দিলো স্থানীয় কৃষকরা। এক এক করে সওজের খাল ভরাট হয়ে যাবার কারণে পানি আটকে থেকে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ কৃষকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি নিয়ে ইতঃমধ্যে সওজের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ঘটনাস্থলে গেছেন। এদিন কৃষকরা খালে ফেলা বালু সরিয়ে নিতে পাশের নির্মাণাধীন ভবনের মালিক মনির হোসেনকে সময় বেঁধে দেন। ঘটনাটি হাজীগঞ্জের কৈয়ারপুল রেল ক্রসিং সংলগ্ন সাতবাড়িয়া এলাকায়।
সরজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশেই সওজের খাল। খালের এই অংশের মাত্র ১০ গজ পূর্বে সওজের একটি সেতু রয়েছে। এই সেতুটি মাত্র কয়েক বছর আগে নতুনভাবে তৈরি করা হয়েছে। আবার সওজের উক্ত সেতুর ৫০ গজ দক্ষিণে রয়েছে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের ওপর আরেকটি সেতু। এই দুটি সেতু দিয়ে সওজ ও রেলপথের উত্তর পাশের পানি দক্ষিণ পাশে প্রবাহিত হয়। বিশেষ করে পুরো বর্ষা মৌসুমে এই দুটি সেতুর নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে থাকে। এ ছাড়াও ইরিগেশন মৌসুমের বেশ ক’টি কৃষি মাঠ বিশেষ করে বেতিয়াপাড়া, সাতবাড়িয়া, ফুলছোঁয়া, সিদলা, নওহাটা কৃষি মাঠের আটকে পড়া পানি সওজের এই খাল ধরে প্রবাহিত হয়ে থাকে। কৃষি মৌসুম ও বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহিত হওয়া খালের মাত্র ৫ গজ পশ্চিমে মূল খাল বালু দিয়ে ভরাট করে খালের মাঝখানে ছোট কালভার্ট তৈরির কাজ শুরু করে খালের অপর পাশের জমির মালিক বাকিলা ইউনিয়নের রাধাসার তফদার বাড়ির মৃত ইসমাইল মিয়ার ছেলে প্রবাসী মনির আহমেদ।
সাতবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ও হাজীগঞ্জের ৫নং সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতালেব হোসেন জানান, সকালে (২ এপ্রিল) আমাদের গ্রামের অনেক কৃষক ভরাটকৃত খাল পাড়ে গিয়ে আমাদেরকে খবর দিয়ে সেখানে নেয়। গিয়ে দেখি পুরো সিএন্ডবির (সওজের) খালটি বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলেছে রাস্তার উত্তর পাশের নির্মাণাধীন ভবনের মালিক। ভরাটকৃত খালের মাঝখান থেকে বালু সরিয়ে খালের তলায় ইট-সিমেন্টের ঢালাই দেয়া হয়েছে। ঢালাই থেকে বক্সের মতো করে কালভার্ট তৈরির জন্য পাশে ইট নিয়েছে কাজ পাওয়া ব্যক্তি।
স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আবুল বাসার জানান, আমাদের ফুলছোঁয়া ও সিদলা মাঠে বিএডিসির সেচ প্রকল্প রয়েছে। বেশ ক’টি কৃষি মাঠের পানি সওজের এই খাল ও পাশের রেল সেতু ধরে নিষ্কাশন হয়। এখন সওজের খালটি এভাবে ভরাট হয়ে গেলে কৃষি মাঠে পানি সবসময় আটকে থাকবে আর কৃষি জমিগুলো স্থায়ীভাবে চাষের অযোগ্য হয়ে যাবে। তাই আজকে কৃষকদের অনুরোধে আমি ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলেছি। স্যার বলেছেন খাল ভরাটের কাজসহ কালভার্ট তৈরির কাজ বন্ধ করে রাখতে।
এ বিষয়ে খালের পাশের জমির মালিক তথা নির্মাণাধীন ভবনের মালিক প্রবাসী মনির হোসেনের ছেলে রায়হান মুঠোফোনে জানান, আমরা কাজ বন্ধ রাখছি। সওজের খাল ভরাট ও বক্স কালভার্ট তৈরির অনুমতি এনে সামনের সপ্তাহে কাজ ধরবো।
সওজের উক্ত অংশের খাল ভরাট ও বক্স কালভার্ট করার অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে চাঁদপুর সড়ক বিভাগ হাজীগঞ্জ-এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী কার্যালয়ের এসএই মোঃ আবু হানিফ জানান, আমি সকালে ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়েছি। আমার লোক থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা আইনি ব্যবস্থা নেবো।