প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
![একুশে টিভিতে আসছে ধারাবাহিক নাটক ‘বসের চেয়ার’](/assets/news_photos/2023/02/16/image-29688.jpg)
বাংলাদেশে প্রায় ৪০ লক্ষ পেশাজীবী রয়েছে যারা সেলস্ এন্ড মার্কেটিং পেশার সাথে জড়িত। বিশ্বের আন্যান্য দেশে সেলস্ এন্ড মার্কেটিং পেশার ওপর নির্মিত হয়েছে একাধিক নাটক, টেলিফিল্ম ও চলচ্চিত্র। বাংলাদেশে এই প্রথম ড. জে আলীর রচনায় দীর্ঘ ধারাবাহিক ‘বসের চেয়ার’ নাটকটি পরিচালনা করেছেন এনায়েত উল্লাহ সৈয়দ। নাটকটি খুব শীঘ্রই একুশে টেলিভিশনে প্রচারিত হবে। সম্প্রতি উত্তরার বিভিন্ন লোকেশনে ২৬ পর্বের শুটিং সম্পন্ন হয়েছে। নাটকে বস চরিত্রে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান এবং তার স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন দীপা খন্দকার। বসের সহকারী হিসেবে বাদল চরিত্রে রয়েছে সৈয়দ শিপুল।
বসের চেয়ার নাটক সম্পর্কে বাংলাদেশের প্রখ্যাত মার্কেটিং গবেষক রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহআজম শান্তনু বলেন, নগরায়নের ধারা ও উন্নয়নের গতিতে দেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে ভালো পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, যার সাথে মানুষ এবং বসতিতে চিরায়ত পেশাবৃত্তির যে ধারা, সে ধারায়ও পরিবর্তন এসেছে। নতুন নতুন পেশা যুক্ত হয়েছে। সেলস্ এন্ড মার্কেটিং সেই পরিবর্তিত ধারার একটি পেশা এবং সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ বিষয়টি সত্য হলেও আমরা আমাদের সাম্প্রতিককালের চলচ্চিত্র, নাটক কিংবা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে এই পেশার উপস্থাপন খুব বেশি লক্ষ্য করা যায় না। সেক্ষেত্রে ড. জে. আলীর রচনায় ‘বসের চেয়ার’ নাটকটির উদ্যোগ প্রয়োজনীয় এবং বাংলাদেশের যে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সে বৈচিত্র্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রে এটি অভিনব উদ্যোগ হিসেবে পরিগণিত হবে বলে আমার বিশ্বাস। একটি বৃহৎ শ্রেণী বাংলাদেশে যারা সম্প্রতি করোনাকালে পেশা হিসেবে তাদের অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছে। আর এই নাটক দেখে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
নাটকের রচয়িতা ড. জে. আলী আশা প্রকাশ করেন, ‘নাটকটি প্রচারিত হলে শুধু সেলস্ এন্ড মার্কেটিং পেশাজীবীগণই না, অন্য পেশাজীবীগণও উপকৃত হবেন।’
নাটকের নির্মাতা সৈয়দ শিপুল বলেন, ‘একটা লোক এতটা পরিশ্রম করেও শুধু তেলবাজি করতে পারে না বিধায় চাকরিচ্যুত হচ্ছে, আর তাই সে জেদ করে আর চাকরি করবে না, উদ্যোক্তা হবে। তার অধীনে হাজার হাজার বেকার চাকুরি করবে। মার্কেটিং জগতে এ ধরনের নাটক কর্মের প্রতি বেকার জনগোষ্ঠীকে অনুপ্রাণিত করবে।’
নাটকটিতে আরও অভিনয় করেছেন আরফান আহমেদ, মিলা, জয়রাজ, তারিক স্বপন, আকাশ রঞ্জন, ড. চঞ্চল, তাবাসসুম মিথিলা, তানভীর, মাহদিয়া কামাল ইউশা, তমাল মাহাবুব, লিটন খন্দকার, ঐশি, মহসিন রনি, শরীফ চৌধুরী, ইমরান হাশো, জাদু ফরিদ, নিথর মাহাবুব, জাফর, রনি, নিঝুম, ক্লিনটন, প্রণব ঘোষ, রুবেল, ফারহান প্রমুখ।
নাটকের কাহিনী সংক্ষেপ : রহমত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেও কোনো চাকুরিতেই স্থায়ী হতে পারে না, পায় না প্রমোশন। পূর্বের ন্যায় এবারও অন্যায়ভাবে তার চাকুরি চলে গেলে সে সিদ্ধান্ত নেয় আর চাকুরি করবে না, নিজে উদ্যোক্তা হবে, এবার চাকুরি দিবে। যথারীতি আপনআলো ডটকম নামে একটা অনলাইন শপ চালু করে রহমত। যেখানে শুরুতে অর্গানিক ফুড আইটেম নিজেই ডেলিভারি করে ব্যবসা শুরু করে। ধীরে ধীরে বিক্রি বাড়তে থাকে, জুতা থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্যই পাওয়া যায় তাদের কাছে। একটা পর্যায়ে মার্কেটিং টিম, এডমিন, অ্যাকাউন্টস, সিইও নিয়োগ দেয়।
চারিদিকে যখন আপনআলো ডটকমের জয়জয়কার, তখন প্রতিযোগী ব্যবসায়ী হাওলাদার ডটকমের মালিক শুরু করে দেয় নানান অপতৎপরতা। আপনআলো ডটকমের লোকদেরকে ভয়-ভীতি, চাঁদা দাবি এমনকি কিভাবে তারা এতোটা সফল হলো সেজন্য তথ্যচুরির অপচেষ্টা করতে থাকে। অফিসের ভেতর আবার একটা অপরাধ চক্র তৈরি হতে থাকে। তারা সাপ্লায়ারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে ২ নাম্বার মাল বিক্রি করে। সেলস-এর পতনের কারণে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তবে এতো কিছুর পর ব্যবসা যখন আরও বৃদ্ধি পায়, তখন রহমত আর একা সামাল দিতে পারে না। আর তখনই স্ত্রীর পরামর্শে ছোট ভাই রায়হানকে তার কোম্পানিতে জিএম পদে নিয়োগ দেয়। রায়হান ঢাকা ভার্সিটি থেকে মার্কেটিং-এ এমবিএ পাস করা এবং ইতোমধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ পদে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। রায়হান তার ভাইয়ের অফিসে আসতেই ধীরে ধীরে অফিসের রং বদল হতে শুরু করে। এভাবেই মার্কেটিং-এর নানান উত্থান-পতনের বাস্তব চিত্রগুলো ফুটে উঠে ‘বসের চেয়ার’ নাটকের গল্পে।