রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

নির্বাচিত হলে ইউনিয়ন পরিষদকে এগিয়ে নিতে চান প্রার্থীরা
প্রবীর চক্রবর্তী ॥

নির্বাচন উপলক্ষে সরগরম হয়ে উঠেছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত জনপদ। গত ২০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ছুটে চলছেন প্রার্থী ও তার সমর্থকরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ের দোকানগুলোতে চলছে নির্বাচনী আড্ডা। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে চায়ের কাপে নির্বাচনী ঝড় বেশ আলোড়ন তুলছে। প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ও সাধারণ ওয়ার্ডের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে কী কী প্রতিশ্রুতি প্রদান করছেন সেই সব বিষয় নিয়ে চলছে বিচার-বিশ্লেষণ। সেই বিচার-বিশ্লেষণকে সামনে রেখে কী ভাবছেন প্রার্থীরা এ নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদন।

গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন : ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোট ৫ জন। এই ইউনিয়নে বিএনপি করেন বা সমর্থন করে এরকম কোনো প্রার্থী নেই। মূল আলোচনায় রয়েছেন ৩ প্রার্থী। এরা হলেন : আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলাউদ্দিন ভূঁইয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী এমরান হোসেন ভূঁইয়া ও আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী।

আলাউদ্দিন ভূঁইয়া : গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রার্থী তিনি। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমানের ইউনিয়ন প্রতিনিধিও। তার পিতা মরহুম খাজে আহমেদ ভূঁইয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তিনি আগামী ৫ জানুয়ারি ইউপি নির্বাচনে নৌকা মার্কা নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচন নিয়ে প্রত্যাশা ও ভাবনা বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আলাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আমার বাবা খাজে আহমেদ ভূঁইয়া দীর্ঘদিন চেয়ারম্যান হিসেবে মানুষের সেবা করেছেন। তার সময়ে তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম চেয়ারম্যান। তিনি কর্ম দিয়ে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছেন। তিনি সফল চেয়ারম্যান হিসেবে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত ও শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার উত্তরসূরি হিসেবে মাননীয় এমপি মহোদয় ও খাজে আহমেদ মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বছর আগে থেকে জনগণের কাছে গিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের কাজ ও আমার বাবার দিক বিবেচনা করে জনগণ আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। আমি নির্বাচিত হলে জনগণের মৌলিক সেবাগুলো আগে দেয়ার চেষ্টা করবো। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা দলের নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচন করছেন, জনগণই তাদের রায়ের মাধ্যমে বিচার করবে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী : ১৬ জন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী। তার বাবা, চাচা, দাদা, নানা সকলেই মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত ছিলেন। নানা দীর্ঘদিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে রূপান্তরিত করবো।

স্বতন্ত্র প্রার্থী এমরান হোসেন ভূঁইয়া : গোবিন্দপুর ভূঁইয়া পরিবারের সদস্য তিনি। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নিকটাত্মীয়। তিনি বলেন, আমি নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করছি না, মাঝির বিরুদ্ধে নির্বাচন করছি। আমি নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। মনোনয়ন সঠিক স্থানে না পড়ায় জনগণের চাপে ও ভালোবাসায় বাধ্য হয়ে নির্বাচনে নেমেছি। বহু আগে থেকে জনগণের সুখে-দুঃখে ছিলাম। তাই জনগণ নির্বাচন করার জন্যে উৎসাহ প্রদান করছে। আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে জনগণ যে মামলা-হামলায় জর্জরিত তা থেকে তাদের মুক্তি করবো।

রূপসা উত্তর ইউনিয়ন : জমিদারদের ইউনিয়ন খ্যাত ঐতিহ্যবাহী রূপসা উত্তর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে প্রার্থী ৪ জন। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ৩ জনের মধ্যে। এরা হলেন : আওয়ামী লীগ প্রার্থী ওমর ফারুক ফারুকী, স্বতন্ত্র প্রার্থী নূরের রহমান সুমন ও কাউছারুল আলম কামরুল।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক ফারুকী বর্তমান চেয়ারম্যান। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বলেন, বিগত ৫ বছরে আমি সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করেছি ইউনিয়ন পরিষদে। যাতে জনগণকে দ্রুত সেবা দেয়া যায়। ফলে এলাকায় বাড়ি বাড়ি যাওয়া কম হয়েছে। এবার বিজয়ী হলে ডিজিটাল ইউনিয়ন করার সাথে সাথে বাড়ি গিয়ে মানুষের সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের চেষ্টা করবো।

স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরের রহমান সুমন : বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। বিজিত হলেও মানুষের পাশে ছিলেন দাবি করে বলেন, আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান, যে নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক উন্নয়নের প্রতীক আমি নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করি না। আমি ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্বাচন করছি। আমার নানা মহান মুক্তিযুদ্ধের আগে আলী আকবর দীর্ঘ ১৮ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন। বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের জন্য আমরা ৫১ শতক ভূমি দান করেছি। জনগণের ভোটে আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে প্রথমে আমার কাজ হবে ইউনিয়নবাসীকে পারিবারিক কলহমুক্ত করা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী কাউছার আলম কামরুল : রূপসা বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এবছর নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বলেন, এলাকার জনগণের আশা-ভরসা নিয়ে আমি নির্বাচন করছি। যেহেতু বিএনপি নির্বাচন করছে না, তাহলে আমাদের নির্বাচন করতে সমস্যা কোথায়। বিএনপি নির্বাচন করলে আমি দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে যেতাম না। নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য আমি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আমি নির্বাচিত হলে ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়নে রূপান্তরিত করবো।

পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়ন : পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নে মোট প্রার্থী ৬ জন। এরা হলেন : আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম সর্দার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তাহের পাটওয়ারী, তোফায়েল আহমেদ, মোঃ মহসীন ও তোফায়েল ইসলাম। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ত্রিমুখী।

মোহাম্মদ আলাউদ্দিন : আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে চমকে দেয়া প্রার্থী তিনি। অনেক বর্ষিয়ান মনোনয়ন প্রত্যাশীকে পেছনে ফেলে তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি বলেন, গত ৭ বছর আগে থেকেই আমার চিন্তাধারা আমি চেয়ারম্যান নির্বাচন করবো। সে আলোকে ইউনিয়নে জনগণ কী কী সমস্যা নিয়ে পরিষদে আসে সেদিকে আমি নজর দিই। সে আলোকে আমি নিজেকে তৈরি করি। জনগণ যেনো আমার কাছে আসলে সকল কিছুর সমাধান পায়। উন্নয়নকে জনগণের কাছে নিয়ে গিয়ে গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করবো। নির্বাচিত হলে আমার প্রথম কাজ হবে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে কার কী অবস্থা জেনে তা ডাটা এন্ট্রি করা। ইউনিয়ন থেকে কোন ব্যক্তি কী পাওয়ার যোগ্য তার তালিকা করা, সে তালিকা অনুযায়ী তার হক তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া।

স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম সর্দার : সম্ভবনাময় এক তরুণ সাইফুল ইসলাম সর্দার। নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আমি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। জনগণ চাইলে সব কিছুই সম্ভব। বয়সে আমি ছোট হতে পারি। জনগণের ভালোবাসা কারণে আমি প্রার্থী হয়েছি। আমি নির্বাচিত হলে সকল উন্নয়ন জনগণের কাছে পৌঁছে দিবো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়