শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

মতলবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষাগুরু এমএ ইউসুফ স্যার আর বেঁচে নেই
মাহবুব আলম লাভলু ॥

চাঁদপুর জেলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষাগুরু মতলবের এমএ ইউসুফ স্যার আর বেঁচে নেই। ১৫ ডিসেম্বর বুধবার বেলা ১২টা ৩০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহ...রাজেউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮৫ বছর। তিনি ৫ ছেলে, ৩ মেয়ে ও অনেক গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় ফরাজীকান্দি মাদ্রাসা মসজিদের সামনে এবং সকাল ১০টায় মরহুমের নিজ বাড়ি সংলগ্ন রামদাশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ২য় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নাউরী আহম্মদীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ছিলেন।

বরেণ্য শিক্ষাগুরু এমএ আবু ইউসুফ মতলব উত্তর উপজেলার এখলাশপুর ইউনিয়নাধীন বোরোচর গ্রামে মরহুম লাল মিয়া সরকারের সংসারে ২ আগস্ট ১৯৪৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বোরোচর থেকে স্থানান্তরিত হয়ে তারা পরবর্তীতে বাড়ি করেন বর্তমান আবাসস্থল ১২নং ফরাজীকান্দি ইউনিয়নাধীন রামদাশপুর গ্রামে। পিতার সংসারে পাঁচ বোনের একমাত্র ভাই এমএ ইউসুফ ছিলেন সকলের মধ্যমণি। তৎকালে জগন্নাথ কলেজের প্রফেসর প্রখ্যাত লেখক প্রয়াত হাফেজ হাবিবুর রহমান (এমএনএ-মেম্বার অব ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি) তার ভাতিজা এমএ ইউসুফ দিয়েছেন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা। ধীরে ধীরে মেধার প্রসার ও লেখাপড়ায় মনোযোগী হয়ে উঠে কিশোর এমএ ইউসুফ। ১৯৫৯ সালে ছেঙ্গারচর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিকুলেশন (বর্তমান এসএসসি) পাস করেন। ১৯৬২ সালে সিলেটের সরকারি মুরারী চাঁদ কলেজ (বর্তমান সরকারি এমসি কলেজ) থেকে আইএ সম্পন্ন করেন লাখো হৃদয়ের প্রিয় শিক্ষাগুরু মোঃ আবু ইউসুফ।

১৯৬৪ সালে সরকারি মুরারী চাঁদ কলেজ থেকে বিএ সম্পন্ন করেন এম.এ. ইউসুফ। ১৯৬৪ সালের আগস্টে এমএ ইউসুফ প্রিয় শিক্ষক শিক্ষানুরাগী প্রয়াত বদিউর রহমান পাটোয়ারীর অনুরোধে ছেঙ্গারচর উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন শিক্ষকতার মহান পেশায়। শিক্ষকতার পাশাপাশি ১৯৬৮ সালে কুমিল্লা বিএড কলেজ থেকে বিএড সম্পন্ন করেন। ১৯৬৯ সালে চাঁদপুরের পুরাণবাজারস্থ নুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। নানা গুণে গুণান্বিত ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এমএ ইউসুফ ১৯৭২ সালে নুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত হন। তিনি সততা, শিক্ষার কৌশল ও পরিচালনায় ছিলেন দারুণ পারদর্শী। তাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেন সকলের কাছে। ১৯৭৭ সালে ১৬ জানুয়ারী হাজারো মানুষের অনুরোধে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন মতলবের ঐতিহ্যবাহী নাউরী আহম্মদীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। তখন বিদ্যালয়ে ছাত্রসংখ্যা ছিলো সব মিলিয়ে প্রায় ২৭০ জনের মতো।

অজ¯্র ভালোবাসায় সিক্ত আবু ইউসুফ ২০০০ সালে চাঁদপুর জেলায় শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০০ সালে মতলব দক্ষিণ উপজেলার পিংড়ায় অবস্থিত হযরত শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদে যোগদান করেন। ২০০২ সালে ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন প্রধান শিক্ষকের পদে। ২০০৩ সালে হজ্ব পালন করেন ধর্মভীরু এমএ ইউসুফ। ২০০৪ সালে অবসর নেন শিক্ষকতা থেকে। সংসারজীবনে পাঁচ পুত্র সন্তান ও তিন কন্যাসন্তানের জনক ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর চিরতরে হারিয়েছেন তাঁর সহধর্মিণীকে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়