প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
গ্রামীণ জনপদের বহু সড়ক অন্ধকারে
চাঁদপুরে দুই-তৃতীয়াংশ স্ট্রিট লাইট দীর্ঘদিন অচল
গ্রামীণ জনপদের রাস্তা, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও স্থাপনা রাতের বেলা আলোকোজ্জ্বল রাখতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী সোলার হোম সিস্টেম ও স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকি না থাকায় এ প্রকল্পের কার্যক্রম অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়ে।
প্রায় ১০ বছর পূর্ব থেকে দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় চাঁদপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয় এসব সোলার হোম সিস্টেম লাইট। যার ফলে গ্রামীণ জনপদ, বাজার, মসজিদ, বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রাতের বেলা বেশ আলোকিত থাকে। সন্ধ্যার পর অটোমেটিক এসব লাইট জ্বলে উঠে। বিনামূল্যে সরকারি ব্যয়ে এসব স্থাপন করা হয়।
চলতি সপ্তাহে জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখার এক রিপোর্টে দেখা যায়, চাঁদপুর জেলায় এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৪শ’ ৬১টি সোলার হোম সিস্টেম স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে বর্তমানে অচল অবস্থায় আছে ৫ হাজার ৩শ’ ৮৬টি। এছাড়া পুরো জেলায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয় ৭ হাজার ৭শ’ ৩৪টি। বর্তমানে এর মধ্যে অচল হয়ে আছে ৪ হাজার ৭শ’ ৪৫টি। দেখা যাচ্ছে প্রায় ৭০/৮০ ভাগ হোম সোলার সিস্টেম ও স্ট্রিট লাইট নষ্ট বা অচল হয়ে আছে।
চাঁদপুর সদরের কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, ব্যাটারী, প্যানেল সমস্যা কিংবা সার্ভিসিংয়ের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বিভিন্ন যন্ত্রাংশ অকেজো হয়ে এই স্ট্রিট লাইট অচল হয়ে কিংবা নষ্ট হয়ে আছে। সদর উপজেলার উত্তর পশ্চিম মৈশাদী-বাহের খলিশাডুলি-ওয়াপদা সড়কের কয়েকটি স্ট্রিট লাইট অচল হয়ে আছে প্রায় দেড় বছর যাবৎ বলে জানা যায়। অথচ এসব লাইট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কিংবা উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিলে পুনরায় এসব সচল করা সম্ভব বলে জানান অনেকে।
ওই গ্রামের ফারুক নামে একজন জানান, তাদের বাড়ির সামনের মসজিদে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করা হয়। দুই-তিন বছর পর ব্যাটারীসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ অচল হয়ে যাওয়ায় এখন আর মসজিদের আলোর জন্যে কাজে আসছে না। তাছাড়া সড়কে স্ট্রিট লাইটও অকেজো হওয়ায় রাতের বেলা রাস্তা অন্ধকার থাকে। একই অবস্থা শাহরাস্তি উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেও বিরাজমান বলে জানান সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।
এসব বিষয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, এ প্রকল্পটি অনেক আগেই অর্থাৎ ২০২০ সালেই বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় ৮০ ভাগ স্ট্রিট লাইট অচল হয়ে আছে বলে তিনি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমাদের কাছে এ সবের বর্তমান অবস্থা ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে। আমরা সরজমিনে দেখে এসবের অবস্থা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠিয়েছি।
চাঁদপুরের একজন সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, এ প্রকল্পটি গ্রামীণ জনপদের জন্যে অত্যন্ত উপকারী। তাই এটি সংস্কার ও মেরামত করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।