প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
সংস্কার চেয়ে ১১ দফা দাবি
চাঁদপুর জেলা পুলিশের বিক্ষোভ
সংস্কার চেয়ে চাঁদপুরেও ১১ দফা দাবি জানিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেসব পুলিশ সদস্য মারা গেছেন তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কর্ম বিরতিতে থাকার কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলা পুলিশ লাইন্সে এই বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকেলে পোশাকবিহীন অবস্থায় জেলা পুলিশের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা 'পুলিশে সংস্কার চাই' প্ল্যাটফর্মের ব্যনারে এ বিক্ষোভ করেন।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ ইয়াসির আরাফাত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রিভার) শ্রীমা চাকমাসহ কর্মকর্তাগণ এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ সদস্যরা ‘আমাদের দাবি, আমাদের দাবি, মানতে হবে, মানতে হবে’, ‘আমাদের কর্মসূচি চলবে চলবে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘১১ দফা মানতে হবে, মানতে হবে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘জেগেছেরে, জেগেছে, পুলিশ এখন জেগেছে’ স্লোগান দেন।
দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষত অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সার্বিক সামাজিক এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হচ্ছে : ১. চলমান ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশ হত্যাসহ সব পুলিশি স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে অতি দ্রুত বিচারের আওতায় আনা। ২. নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে এককালীন আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান, আজীবন পেনশন-রেশন প্রাপ্তি এবং পরিবারের একজন সদস্যের সরকারি চাকরি নিশ্চিত করা। আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা এবং গুরুতর আহত পুলিশ সদস্যদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা। ৩. পুলিশের নিয়োগ বিধিমালা বিশেষত সাব-ইন্সপেক্টর এবং সার্জেন্ট নিয়োগ পিএসসির অধীনে এবং পুলিশ হেড কোয়ার্টারের অধীনে কনস্টেবল নিয়োগে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। ৪. সাব-ইন্সপেক্টর/সার্জেন্ট পদে বিদ্যমান পদোন্নতি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করা। সেক্ষেত্রে পুলিশ পরিদর্শক পদ থেকে সহকারী পুলিশ কমিশনার পদে ৩০ শতাংশ সরাসরি এবং ৭০ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ এবং সেটি যথাসময়ে নিশ্চিত করা। সাব-ইন্সপেক্টর/সার্জেন্ট থেকে ইন্সপেক্টর পদে পিএল হওয়ার ১ বছরের মধ্যে পদোন্নতি দেওয়া। এ ছাড়া কনস্টেবল/নায়েক/এটিএসআই/এএসআই পদোন্নতির ক্ষেত্রে পরীক্ষায় পাসকৃতদের পরবর্তী বছর পুনঃপরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা বাতিল এবং পদোন্নতি প্রদানের ক্ষেত্রে পাসকৃতদের সিনিয়রিটি অনুসরণ করা। ৫. আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী, পুলিশের কর্মঘণ্টা কমিয়ে ৮ ঘণ্টা করা এবং অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার জন্য ওভারটাইম দেওয়ার ব্যবস্থা করা অথবা বছরে ২টি বেসিকের সমপরিমাণ অর্থ দেওয়া। ৬. পুলিশের ঝুঁকিভাতা বৃদ্ধিকরণ, টিএ/ডিএ বিল প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে প্রদান এবং প্রযোজ্য সব সেক্টরে সোর্স মানি নিশ্চিত করা। ৭. পুলিশ সদস্যদের বার্ষিক ২০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি বৃদ্ধি করে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ৬০ দিন করা। দেশ এবং জনগণের স্বার্থে ছুটি ভোগ সম্ভব না হলে অভোগকৃত ছুটির বিনিময়ে আর্থিক সুবিধা প্রদান করা। ৮. পুলিশ বাহিনীর প্রচলিত পুলিশ আইন এবং পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল সংস্কার করে যুগোপযোগী এবং কার্যকরী করা, যার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর মর্যাদা এবং অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকার নিশ্চিত হয়।৯. পুলিশ বাহিনীকে যেন কোনো দলীয় সরকার তার রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্যে স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করা। ১০. পুলিশের সব থানা, ফাঁড়ি এবং ট্র্যাফিক বক্স আধুনিকায়ন করা এবং অধস্তন অফিসারদের জন্যে সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। ১১. নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের অধস্তন কর্মকর্তাদের জন্যে আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সব ব্যারাকে বিদ্যমান আবাসন সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করে ব্যারাকগুলোকে আধুনিকায়ন করা।