প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৪, ০০:০০
পুরাণ ঢাকায় জানাজা ও দাফন
শেষ শয্যায় দানবীর হাজী মোঃ কাউছ মিয়া
বাংলাদেশের শীর্ষ করদাতা, প্রবীণ ব্যবসায়ী ও দানশীল হাকিমপুরী জর্দার মালিক, চাঁদপুরের কৃতী সন্তান হাজী মোঃ কাউছ মিয়া আর নেই (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। ২৪ জুন সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে হাজী মোঃ কাউছ মিয়ার বয়স হয়েছিলো ৯৪ বছর। মৃত্যুকালে স্ত্রী, ৮ ছেলে ও ৮ মেয়ে রেখে গেছেন কাউছ মিয়া। তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।
২৫ জুন মঙ্গলবার বাদ জোহর আরমানিটোলা মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
জানাজার নামাজে ও দাফনে নির্বাচন কমিশনার ও সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান, লালবাগের সাবেক এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম, তাঁর ছেলে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সোলায়মান সেলিম, মৌলভীবাজারসহ পুরাণঢাকার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, পরিবারের সদস্য, শুভাকাঙ্ক্ষী, ব্যাংক কর্মকর্তাগণসহ চাঁদপুর-শরিয়তপুরের সর্বস্তরের মানুষ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
কাউছ মিয়ার জানাজার নামাজে ইমামতি করেন মৌলভীবাজার জামে মসজিদের পেশ ইমাম আলহাজ্ব মাওঃ মাইজউদ্দিন সাহেব।
কাউছ মিয়ার সন্তানরা জানান, তাদের আব্বা বার্ধক্যের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সম্প্রতি সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসার পর দেশে আনা হয়। পুরাণ ঢাকার বাসভবনে শয্যাশায়ী ছিলেন। ২২ জুন শনিবার হাজী মোঃ কাউছ মিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে নেয়া হয়। দুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে দুনিয়া থেকে চিরবিদায় নেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে সন্তানরা তাদের বাবা কাউছ মিয়ার জন্যে সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
হাজী মোহাম্মদ কাউছ মিয়া চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন। তিনি দীর্ঘদিন চাঁদপুর পুরাণবাজারে ব্যবসা করেন। পরে হাজীগঞ্জ, সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জ এবং পুরাণ ঢাকার আরমানিটোলায় ব্যবসা করেন। হাকিমপুরী জর্দার ব্যবসার পাশাপাশি তাঁর বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা ছিলো। ২২ বছর বয়স থেকে ব্যবসা শুরু করেন এবং টানা ৭১ বছর এককভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার পর ২০২৪ সালের ২৪ জুন রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
হাকিমপুরী জর্দার মালিক, দেশসেরা শীর্ষ করদাতা ও একজন দানশীল মানুষ হিসেবে হাজী মোহাম্মদ কাউছ মিয়ার সুনাম ছিলো দেশজুড়ে। তাঁর মৃত্যুতে দেশের মানুষ একজন প্রবীণ ব্যবসায়ী ও সমাজসেবককে হারালো।
উল্লেখ্য, চাঁদপুরের কাউছ মিয়া স্বাধীনতার পূর্বে একবার এবং পরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর যতবার সেরা করদাতার সম্মাননা দিয়েছে ততবারই অর্থাৎ টানা ২০বার তিনি শীর্ষ করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন। মুজিববর্ষেও কাউছ মিয়া সেরা করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন।