শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

বলাখাল জেএন উবি এন্ড কারিগরি কলেজ মাঠে কৌশলে ফের মেলার প্রস্তুতি!

কামরুজ্জামান টুটুল ॥
বলাখাল জেএন উবি এন্ড কারিগরি কলেজ মাঠে কৌশলে ফের মেলার প্রস্তুতি!

কৌশল অবলম্বন করে বলাখাল জেএন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ মাঠে ফের বাণিজ্যিক মেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে একটি চক্র। মাঠে মেলা হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান, পরিবেশ ও খেলাধুলার বিঘ্ন সৃষ্টি হবে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এর আগে গত দুই বছর মাসব্যাপী বিদ্যালয় মাঠে মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) খোদেজা বেগম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বলাখাল যোগেন্দ্র নারায়ণ (জেএন) উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের নিজস্ব মাঠটি একাডেমিক ভবনের পূর্ব পাশে অবস্থিত। এই মাঠেই শিক্ষার্থীদের সকল খেলাধুলা হয়, স্কাউট কার্যক্রম চলে। এমনকি সকাল-বিকেল এলাকার শিশু-কিশোর ও যুবকরা নিয়মিত খেলাধুলা করে এবং বৈকালীন আড্ডা ও সন্ধ্যায় এলাকার মানুষ ফাঁকা মাঠে হাঁটাহাঁটি করেন। এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নিয়মিত ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতা এবং স্থানীয় ও এলাকাবাসীর বিভিন্ন টুর্নামেন্ট হয়ে থাকে এই মাঠে।

গেলো বছরগুলের মতো এবারে বিদ্যালয় মাঠটিতে বিভিন্ন জাতীয় দিবসের নাম ব্যবহার এবং কুটির ও হস্ত শিল্পের নামে ও বিদ্যালয়ের মাঠ উল্লেখ না করে বলাখাল হাই স্কুলের পূর্ব পাশে চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়কের পাশের জমি উল্লেখ করে মেলার আযোজন করার অনুমতি নেবার জন্য একটি পক্ষ উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কোনো প্রকার মেলা, সার্কাস বা বাণিজ্যিক অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া যাবে না বলে ২০০৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে।

‘সরকারি প্রজ্ঞাপন থাকা সত্ত্বেও কীভাবে স্কুল মাঠে মেলার অনুমতি নেয়া হয়’ এমন প্রশ্নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, মাঠটি স্কুলের ক্যাম্পাসের ভেতরে না থাকার সুযোগকে কাজে লাগায় মেলার আয়োজক কমিটি। তারা মেলার অনুমতির জন্যে প্রশাসনের কাছে যে আবেদন করে, ওই আবেদনপত্রে স্কুল মাঠ উল্লেখ না করে স্কুল সংলগ্ন মাঠের কথা উল্লেখ করে। এমন কৌশল অবলম্বন করে সহজেই মেলার অনুমতি নেয় তারা।

বিদ্যালয় সূত্রে আরো জানা গেছে, ২০২১ সালে এক মাসের কথা বলে প্রায় ৯ মাস মেলার সরঞ্জাম স্কুল মাঠে রাখা ছিলো। ওই সময়ে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে। এ নিয়ে অনেক দেন-দরবার করা হয়েছিলো, কিন্তু লাভ হয়নি। এরপর চাঁদপুর কণ্ঠসহ একাধিক পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর তৎকালীন জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়। তাঁর নির্দেশনায় স্কুল মাঠ থেকে মেলার সরঞ্জাম অপসারণ করে সে সময়ের আয়োজকরা।

ফের একই কৌশল অবলম্বন করে ২০২২ সালে মাসব্যাপী মেলার অনুমতি নেয়া হয়। ওই মেলাটিরও স্থায়িত্ব ছিল দুই মাস। অর্থাৎ স্টল স্থাপন, এক মাসের স্থলে দেড়মাস মেলা ও মেলা শেষে স্টল অপসারণসহ মাঠটি পরিষ্কার করতে দুই মাসের বেশি সময় লেগে যায়। এছাড়াও মেলার সরঞ্জাম অপসারণ শেষে মাঠের গর্তসহ উঁচুনিচু স্থান সমান হতে আরও মাসখানেক লেগে যায়। এতে শিক্ষা ও খেলাধুলার পরিবেশ নষ্ট হয়।

আবু তাজের লিটন ভূঁইয়া নামের স্থানীয় সচেতন এক ব্যক্তি বলেন, এমনিতে কিশোর-তরুণরা মোবাইল ফোনে আসক্ত। এর মধ্যে যদি মাঠটিতে মেলা হয়, তাহলে এলাকার কিশোর-তরুণেরা আরও বেশি আসক্ত হয়ে পড়বে। অলস সময় পার করবে। এতে তারা বিপথগামী হয়ে যেতে পারে।

এদিকে আবারও নতুন করে মেলার প্রস্তুতির বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) খোদেজা বেগম বলেন, মেলা থেকে গত বছর যে টাকা নেয়া হয়েছে তা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কাজে লাগানো হয়েছে। স্কুল মাঠে মেলা করার জন্যে আমার কাছে যারা এসেছিলো, আমি তাদেরকে সভাপতির অনুমতি নেয়ার জন্যে বলেছি। এ সময় তিনি জানান, স্কুল মাঠে মেলা হলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট ও ক্রীড়ার (খেলাধুলা) বিঘ্ন ঘটে।

এক প্রশ্নের জবাবে ২০২১ সালের কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ওই সময়ে এক মাসের অনুমতি নিয়ে মেলার সরঞ্জাম ৯ মাস স্কুল মাঠে ছিলো। এরপর ২০২২ সালে মেলার অনুষ্ঠানসহ সরঞ্জাম সরাতে দুই মাসের বেশি সময় লেগে যায়। এতে আমাদের বাৎসরিকসহ বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিঘ্ন ঘটে। তাছাড়া মেলা শেষে মাঠটি খেলার উপযুক্ত করতেও অনেক সময় লেগে যায়।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস শীল মুঠোফোনে বলেন, স্কুল মাঠে মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়