প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে এক ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ নিয়ে নানা কৌতূহল
স্ত্রীর দাবি হার্ট অ্যাটাক ॥ বোনের দাবি হত্যা
পারিবারিক বিরোধের জের ধরে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে স্ত্রীর দাবি, তার স্বামীর হার্ট অ্যাটাকজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে চাঁদপুর আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানা গেলেও কোনো পক্ষই তা স্বীকার করেনি। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের ধানুয়া গ্রামের শেখ বাড়ির।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের ধানুয়া গ্রামের শেখ বাড়ির স্বামী সেলিম শেখের সাথে স্ত্রী লিপি বেগমের পরিবারিক বিষয় নিয়ে বিবাদ চলছিল। সর্বশেষ গত ২৪ মার্চ রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আবারো কথা কাটাকাটি হয়। যা সেলিম শেখ ওই রাতেই ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির সামনে থাকা দোকানে গিয়ে পাড়া প্রতিবেশীকে জানায়। ওই রাতেই প্রায় ৩টার দিকে হঠাৎ চিৎকার শুনে পাশের ঘরের লোকজন এসে দেখেন সেলিম শেখ নিচে পড়ে রয়েছে। দ্রুত স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক নিয়ে আসলে তিনি তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত সেলিম শেখের মাথার মধ্যস্থানে, কানের কাছে ও চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে স্থানীয়রা জানায়। ঘরের ফ্লোর রক্তে ভিজে লাল হয়ে গেছে। সকালে দ্রুত দাফন করে পরিবারের লোকজন। এমনকি স্থানীয় লোকজন জানাজার সময় লাশের মাথা থেকে রক্ত পড়তে দেখে।
লাশের গোসলকারী আইউব আলী বলেন, আমি বহু বছর ধরে এই গ্রামের কোনো লোক মারা গেলে গোসল করিয়ে থাকি। সেলিমের গোসল করাতে গিয়ে দেখি তার মাথার মধ্যস্থান বরাবর, মাথার পাশে ও চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন। রক্ত পড়তে দেখে তারা আমাকে মাথা সেলাই করতে বলেছিল। আমি নিষেধ করে দিয়েছি।
মৃত সেলিম শেখের বড় বোন লাভনী ও ভাইয়ের স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, আমার ভাইকে আমার ভাবী মেরে ফেলেছে। সে তার বাবা মনা খান ও ভাই নয়ন মিলে রাতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার ভাইয়ের মাথায়, ঘাড়ে, মাজায় ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।
এদিকে সেলিম শেখের স্ত্রী লিপি বেগম বলেন, আমার স্বামী হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছে। ভোররাতে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক করে শোকেসের সাথে আঘাত পায়। সেজন্যে তার মাথায় ও অন্যস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অপর প্রশ্নের জবাবে বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হয়ে থাকে, এটাতো কম-বেশি সকলের হয়। তারা জমি সংক্রান্ত বিরোধের কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।
ইউপি সদস্য জসিম বলেন, আমরা লোকমুখে শুনেছি তাকে হত্যা করা হয়েছে। সেলিম শেখের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রক্ত টপ টপ করে পড়তে দেখেছি। ঘটনা সত্য হলে যে-ই অপরাধ করে থাকুক তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হোক।
এদিকে বিশ্বস্ত সূত্র জানা যায়, উক্ত ঘটনায় গত ২৭ মার্চ চাঁদপুর আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। আদালত এই ঘটনা তদন্তের জন্যে পিবিআইকে দিয়েছে। তবে কোনো পক্ষই তা স্বীকার করছে না।