প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে রেলিংবিহীন অর্ধশত সেতু ॥ মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলছে যান
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ-ব্রহ্মপাড়া সড়কের গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের খাজুরিয়া বাজারের হামচাপুর বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিন দেওয়ান বাড়ি সংলগ্ন সেতু। উপজেলার পূর্বাঞ্চলের সাথে যোগাযোগ রক্ষাকারী সড়কের ৯০ ডিগ্রি কোণে থাকা সেতুটির রেলিং গত এক যুগের বেশি সময় ধরে নেই। ফলে দূরদূরান্ত থেকে আসা এবং প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনগুলো সর্বদা দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখেই চলতে হয়। এই সেতুর মতো উপজেলায় অন্তত অর্ধশত সেতু রয়েছে, যেগুলোর রেলিং প্রায় নেই বললেই চলে। এভাবে বছরের বছর রেলিংবিহীন সেতু দিয়ে মৃত্যুভয় নিয়ে চলছে যান। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ তো দূরের কথা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানগণও এ নিয়ে কোনো ভ্রূক্ষেপ করছেন না।
জানা গেছে, খাজুরিয়া বাজরের রেলিংবিহীন সেতু ছাড়াও বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের খাঁড়খাদিয়ার চান্দ্রা ঔষধবাড়ি রাস্তার ব্রিজ, বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের ইসলামপুরে তাফাজ্জলের দোকান হতে চান্দ্রা বাজার অভিমুখী রাস্তার ভরাডোল খালের ওপর ব্রিজ, ইসলামপুর শিকদার বাড়ি হতে কাজীবাড়ি অভিমুখী রাস্তার জমাদ্দার বাড়ির পাশের খালের ওপর ব্রিজ, ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের কাটাখালি ব্রিজ, পাইকপাড়া দক্ষিণের দায়চারা গ্রামে সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের কামতাবাজার ব্রিজসহ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে আরো অনেক সেতু রয়েছে, যেগুলোর রেলিং নেই দীর্ঘদিন যাবত।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে এই ব্রিজগুলো নির্মাণ করা হলেও দীর্ঘদিন সেতুগুলো মেরামত না করার কারণে দু পাশের রেলিং ভেঙ্গে যাওয়ার পাশাপাশি ব্রিজের বিভিন্ন জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সরজমিনে খাজুরিয়া বাজারের অদূরে হামচাপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিন দেওয়ান বাড়ি সংলগ্ন ব্রিজটিতে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কটিতে ৯০ ডিগ্রি কোণে সেতুটি দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয়রা জানায়, জরাজীর্ণ সেতুটির স্থলে নতুন সেতু নির্মাণ দূরের কথা, সেতুটির দুই পাশের রেলিং নেই। যে কোনো সময় হয়তো বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনাই কর্তৃপক্ষকে এই সেতুটি মেরামত বা নতুন করে নির্মাণের কথা ভাবতে বাধ্য করবে।
একইভাবে বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের চান্দ্রা ঔষধবাড়ি সংলগ্ন সেতুটির একই অবস্থা। যানবাহন এবং পথচারীরা মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এ সময় স্থানীয় ক’জনের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আরো অনেক আগেই ব্রিজের দু পাশের রেলিং ভেঙ্গে গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক’জন বলেন, সেতুর রেলিংগুলোতে ভালো ভালো রড ছিলো। কিন্তু রাতের আঁধারে এলাকার গাঁজাখোর, ইয়াবাখোর ও জুয়াড়িরা রডগুলো নিয়ে গেছে। বাকি রডগুলোও যে কোনো সময় নিয়ে যেতে পারে বলে তারা জানান। একই অবস্থা উত্তর কৃষ্ণপুর ভরাডোল খালের ওপর নির্মিত সেতু ও ইসলামপুর জমাদ্দার বাড়ির নিকটস্থ সেতুর।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবরার আহমেদ জানান, বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন, তিনি ঝুঁিকপূর্ণ সেতুগুলোর তালিকা করে সংস্কার বা নতুন করে করার ব্যবস্থা নিবেন।