শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

কচুয়ায় ঝড়ে বিধ্বস্ত অর্ধশতাধিক ঘর-বাড়ি ॥ ভুট্টার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

মোহাম্মদ মহিউদ্দিন/ ফরহাদ চৌধুরী ॥
কচুয়ায় ঝড়ে বিধ্বস্ত অর্ধশতাধিক ঘর-বাড়ি ॥ ভুট্টার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

কচুয়ায় ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট-বড় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি। ২৪ মার্চ রোববার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ সদর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নের গ্রামের উপর দিয়ে টর্নেডো রূপী ঝড় আঘাত আনে। এ সময় বহু ঘরের চাল ও টিন উড়ে যায়। শত শত গাছ উপড়ে যায় এবং বসত ঘরসসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ডাল-পালা পড়ে তছনছ হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ১৫ থেকে ২০ মিনিটের এই ঝড়ে ও তুমুল বৃষ্টির মধ্যে ৫ থেকে ৬ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা ঘর-বাড়ি, গাছপালা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশর্^বর্তী গ্রামগুলোতে বৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু তেমন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমণ্ডউত্তর দিক থেকে পূর্ব-দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়। যেদিকে ঝড় গেছে সেদিকে গাছপালা, বাড়ি-ঘর, মুরগী খামার, টিনশেডের মসজিদ ঘর ও ফসলি জমি ভুট্টা এবং বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হঠাৎ ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের জিলহজ্ব বেগম, এমরান হোসেন, হক মিয়া, আলী আহমেদের বসত ঘর, লতিফপুর গ্রামের উত্তর-পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদ, নোয়াগাঁও গ্রামের ওহাবা বেগম, তেতৈয়া সোহরাব হোসেন মেম্বার, কাউছার আলম, জলা তেতৈয়া অরুণ বৈদ্যর দোকানঘর, সিংড্ডা, খিড্ডা, সদর দক্ষিণ ইউনিয়নের ধলি কচুয়া, কোমরকাশা, রাজাপুর গ্রামের বিভিন্ন পরিবারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, রোববার রাতে হঠাৎ করে গ্রামের উপর বয়ে যাওয়া ঝড়ে গ্রামকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে। অনেকেরই ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তারা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। শুধু তাই নয়, ফলের গাছ ও ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বিধবা জিলহজ্ব বেগম বলেন, হঠাৎ পশ্চিম দিক থেকে শোঁ শোঁ শব্দ করে কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার একমাত্র বসতঘর উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমার স্বামী ও কোনো ছেলে সন্তান নেই, আল্লাহ ছাড়া আমার আর কেউ নেই। ভিক্ষা করে রাস্তার পাশে ছোট ঘরটা করেছি, ঝড়ে আমার সবকিছু নিয়ে গেছে। বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি।

তেতৈয়া গ্রামের সোহরাব হোসেন বলেন, রাতে কোনো কিছু বোঝার আগেই হঠাৎ বিকট শব্দ হয়, কিছুক্ষণের মধ্যেই থেমে যায়। ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে দেখি আমার পোল্ট্রি ফার্মের ঘর ভেঙ্গে পুকুরে পড়ে অনেক মুরগী মারা গেছে। এতে আমার প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

কচুয়া পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম বেলায়েত হোসেন বলেন, সন্ধ্যার ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি। তবে এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বা কত সংখ্যক গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।

কচুয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, হঠাৎ ঝড়ে ফসলি জমি বিশেষ করে ভুট্টা ও বোরো ধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করছেন।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসান বলেন, হঠাৎ ঝড়ে উপজেলার বিশেষ করে ২টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পেয়েছি। ইউপি সদস্যদেরকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী তাদের সহযোগিতা করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়