মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুর শহর সত্যিই নান্দনিক হচ্ছে!
চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥

নির্বাচনী অঙ্গীকার বা ইশতেহার যে সস্তা বাহ্বা নেয়ার জন্যে নয়, বাস্তবে যে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব তার প্রমাণ দিলেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল। আর মাইলফলক কোনো কিছু বাস্তবায়ন করতে হলে যে নিজের সদিচ্ছা আর দৃঢ় মনোবলই যথেষ্ট তারও প্রমাণ রাখলেন মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল। তাঁর নেতৃত্বে বর্তমান পৌর পরিষদের মাত্র তিন বছরে চাঁদপুর শহরের চেহারা বদলে যেতে বসেছে। যে শহরটিতে দেখা যেতো ঘিঞ্জি পরিবেশ, সড়ক ও সড়ক মোড় ছিলো একেবারে সরু, সে শহরের সড়ক, সড়ক মোড় এখন প্রশস্ত। শহরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্টে নান্দনিক কাজ করা হচ্ছে। শহরের অভিজাত এলাকায় দৃষ্টিনন্দন কাজ করা হচ্ছে। যা জোড়পুকুর পাড় এলাকার দিকে তাকালেই বুঝা যায় এমন বদলে যাওয়ার দৃশ্য। যা দেখে শহরবাসী মেয়রকে সাধুবাদ দিচ্ছে।

শত বছরেরও অধিক প্রাচীন এবং তিন নদীর মোহনা ঘেঁষে গড়ে ওঠা চাঁদপুর শহরে এই ক বছর দৃশ্যমান ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে এবং বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রথম শ্রেণির পর্যটন সম্ভাবনাময় এই শহরকে নান্দনিক করে গড়ে তুলতে বর্তমান পৌর পরিষদ যেনো দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তারা উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রেখেছেন। মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েলের নেতৃত্বে বর্তমান পরিষদ গত ৩ বছরে প্রায় ৭০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেছে। আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত পৌরসভায় ১০০ কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র। বর্তমান পৌর পরিষদের মেয়াদের মধ্যেই সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে চাঁদপুর শহরকে নান্দনিক করে গড়ে তোলা হবে। প্রশস্ত সড়ক, প্রশস্ত মোড়, ড্রেন, ওয়াকওয়ে, প্রশস্ত ফুটপাত, হরিজনদের বাসস্থান, পানি সংকট দূরীকরণসহ ইতোমধ্যে পরিকল্পনার বেশ কিছু কাজ দৃশ্যমান।

চাঁদপুর পৌরসভার প্রকৌশল শাখাসহ উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৌরসভার বর্তমান মেয়র ২০২০ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৬ মাসের সাড়ে ৭ কোটি টাকা বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছেন। বর্তমানে বেতন হালনাগাদ। বিদ্যুতের ৫ কোটি টাকা বকেয়া বিল পরিশোধ করে বিদ্যুৎখাতে ব্যয় সংকোচন করেছেন। সবচাইতে বেশি বেহাল ছিল সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার। নিজস্ব অর্থায়ানে ইতোমধ্যে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক, ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আরো উন্নয়ন কাজ চলমান।

শহর ঘুরে দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ স্টেডিয়াম রোড, মিশন রোড, শপথ চত্বর, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, কুমিল্লা সড়ক, হাজী মহসীন রোড ও জেএম সেনগুপ্ত রোডের সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি আব্দুল করিম পাটওয়ারী সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়ক, নিউ ট্রাক রোডসহ বেশ কয়েকটি সড়কের উন্নয়ন কাজ চলমান। একইসঙ্গে সড়কের দুই পাশে ওয়াকওয়েসহ সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ করা হচ্ছে এই প্রথম। পৌরসভার বিভিন্ন স্থাপনাকেও তিনি নান্দনিক করছেন। যেমন নতুন বাজার এলাকার জলাধার স্থাপনার বাউন্ডারী ও গেইট এবং রেড ক্রিসেন্ট ভবন সংলগ্ন পৌরসার মালঘরের সামনে গেইট। দু’টিকে খুবই সুন্দর করে সংস্কার করা হয়েছে। সড়ক এবং মোড় প্রশস্তকরণের কাজে প্রশংসিত হয়েছেন মেয়র।

শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের বাসিন্দা কবির হোসেন জানান, মেয়র মহোদয় খুবই সাহসিকতার সঙ্গে শহরের সড়কগুলো প্রশস্ত করছেন। যানজট নিরসনে এই উদ্যোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিগত কোনো মেয়রই সড়ক প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নিতে পারেননি।

শহরের ট্রাক রোড এলাকার বাসিন্দা মোঃ আলম জানান, রহমতপুর আবাসিক এলাকা, পালপাড়া, নাজির পাড়া ও ট্রাক রোডে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সড়ক প্রশস্ত করণসহ জনদুর্ভোগ কমাতে বর্তমান মেয়রের পরিকল্পিত কাজগুলো শতভাগ বাস্তবায়ন হলে সত্যিকারে নান্দনিক শহর হবে চাঁদপুর পৌরসভা। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কাজ দৃশ্যমান।

শহরের জোড়পুকুর পাড় এলাকার লেপ-তোষক ব্যবসায়ী সিয়াম কটন সপের স্বত্ত্বাধিকারী খলিলুর রহমান খোকন বলেন, মেয়রের কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়। পুকুরটির চারপাশকে ঘিরে যে দৃষ্টিনন্দন কাজ তিনি শুরু করেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। একই সাথে রাস্তার দু’পাশে মার্কেটের সামনে যে ফুটপাত নির্মাণ করছেন তা খুবই ভালো কাজ। যদিও আমিসহ সকল দোকানের সামনে কিছু অংশ ছাড়তে হয়েছে। তারপরও শহরকে নান্দনিক করতে তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এ.এইচ.এম শামসুদ্দোহা জানান, বর্তমান মেয়র ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত খুবই গুরুত্ব দিয়ে কাজ সম্পন্ন করছেন। পৌরসভার যেসব এলাকায় উন্নয়ন হয়নি এবং পিছিয়ে পড়া জনবসতি এলাকাগুলোর দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ৫ কিলোমিটার ড্রেন। ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর (হরিজন) জন্য নির্মাণ হয়েছে দুটি ৫ তলা ভবন। পানির সংকট নিরসনে উন্নয়ন কাজ হয়েছে ৪ কোটি টাকা। ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সড়ক নির্মাণ হয়েছে।

তিনি আরও জানান, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে শহরের অন্ধকার এলাকাগুলো এখন রাতের বেলায় আলোকিত। ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০টি সৌর বিদ্যুৎ বাতি লাগানো হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থয়ানে ইচলী ও ঘোড়ামারা আশ্রয়ণ কেন্দ্রে নির্মাণ হয়েছে রাস্তা ও ড্রেন। এতে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি টাকা।

চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, দেশের চরম সংকটময় অবস্থা কোভিডের মধ্যে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। এরপর বিশ্বময় সংকট। পৌরসভার অনেক বছর আগ থেকেই যে সমস্যাগুলো ছিল- কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বকেয়া, গ্র্যাচুইটি টাকা বকেয়া, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, ঠিকাদারদের বিল বকেয়া। পৌরসভার অভ্যন্তরীণ এসব সমস্যা সমাধান করে একটি অবস্থানে আনতে প্রায় ৩ বছর সময় পার হয়েছে। ইতোমধ্যে পৌরসভার অপচয় রোধ করে আয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমাদের রাজস্ব আয় পূর্বে ছিল ২৫ কোটি টাকা। এখন সেটি বৃদ্ধি হয়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ কোটি টাকা। রাজস্ব আয় বৃদ্ধি অবশ্যই পৌরবাসী ভালোভাবে দেখবে। আমরাও এটাকে সাফল্য মনে করছি।

মেয়র বলেন, আমরা এখন যে কাজটি করছি সেটি হচ্ছে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন। আমাদের যে সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা তৈরি করা অর্থাৎ নান্দনিক শহর গড়ে তোলা, সেই কাজগুলোই এখন করা হচ্ছে। এই পৌরসভার ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে এগিয়ে যাবো। ইতোমধ্যে প্রায় ৭০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে আমাদের ১০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হবে। এর আগে ১০-১৫ বছরে এত উন্নয়ন কাজ হয়নি। পিছিয়ে থাকা এবং উন্নয়ন হয়নি এমন এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করে আমরা বেশি কাজ করেছি। কারণ সেসব এলাকার লোকজন নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। সুবিধা না দিয়ে আমরা কর আদায় করতে পারি না। আশা করি সকলের সহযোগিতায় আমাদের পরিষদের মেয়াদের মধ্যেই নান্দনিক পৌরসভার কাজ সম্পন্ন হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়