প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
মতলব দক্ষিণ উপজেলার পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মুরাদ হোসেন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে গ্রাহকের স্বাক্ষর জাল করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে ব্যাংকের গ্রাহক রুমি আক্তার ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন।
সরজমিনে জানা যায়, শাখা ব্যবস্থাপক মুরাদ হোসেন ওই গ্রাহকের পরিবারের ছয় সদস্যের বিপরীতে প্রথম কিস্তিতে ছয় লক্ষ টাকা এসএমই ঋণ পাস করলেও গ্রাহককে তিনি দুই লক্ষ টাকা দিয়ে বাকি চার লক্ষ টাকা নিজের কাছে রেখে দেন। দুই লক্ষ টাকার বিপরীতে রুমি আক্তার ও তার পরিবারের সদস্যরা ঋণের ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেন। পরবর্তী সময়ে গ্রাহক রুমি আক্তার জানতে পারেন, শাখা ব্যবস্থাপক মুরাদ হোসেন পূর্বের ৬ লক্ষ টাকার ঋণ পরিশোধ করে পুনরায় পরিবারের ছয় সদস্যের বিপরীতে ৯ লক্ষ টাকা ঋণ অনুমোদন করিয়ে নেন। কিন্তু এই নয় লক্ষ টাকার ঋণের বিষয়ে মাঠকর্মী এবং গ্রাহক জানতেন না বলে দাবি করেন রুমি আক্তার। পরবর্তীতে ঘটনা জানাজানি হলে তার ছেলের বিয়ের সময় ১ লক্ষ টাকা, মতলব উত্তরে কর্মকালীন সময়ে ৫০ হাজার টাকা এবং পরে মতলব দক্ষিণে কর্মকালীন সময়ে ৩০ হাজার টাকা প্রদান করেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অর্থ আত্মসাতের এমন বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে ব্যাংকে অডিট আসলে রুমি আক্তারের বিপরীতে ৯ লক্ষ টাকা প্রদানের বিষয়টি জানাজানি হলে শাখা ব্যবস্থাপক ওই গ্রাহককে ম্যানেজ করে এবং অর্থনৈতিক সুবিধা দিবে বলে প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষর করে নেন। বর্তমান সময়ে ঋণের টাকার জন্যে শাখা ব্যবস্থাপক মুরাদ হোসেন গ্রাহক রুমি আক্তারকে চাপ প্রয়োগ করলে ঘটনার দিন বিকেলে উভয়ের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা ও হাতাহাতি সৃষ্টি হলে মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশের সদস্যগণ ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন।
রুমি আক্তারের পরিবারের ছয় সদস্যের বিপরীতে নয় লক্ষ টাকা ঋণ প্রদানের বিষয়ে মাঠকর্মী অমল চন্দ্র মণ্ডল জানান, নয় লক্ষ টাকা ঋণ প্রদানের বিষয়ে আমি জানি না। ঋণ নেয়ার ৬ মাস পরে শাখা ব্যবস্থাপক আমাকে জোর করে কাগজপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেন।
গ্রাহক রুমি আক্তার বলেন, আমাদেরকে না জানিয়ে আমি, আমার স্বামী, দুই ছেলে ও আমার ভাই এবং ভাবীসহ ছয়জনের নামে শাখা ব্যবস্থাপক নয় লক্ষ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে। তার দায় এখন আমার পরিবারের উপর চাপাতে চাচ্ছে। আমি জেলা কার্যালয়ে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছি। জেলা কার্যালয় মীমাংসার জন্যে ডাকলেও ঘটনার মীমাংসা হয়নি।
মতলব দক্ষিণ থানার এসআই শফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে শাখা ব্যবস্থাপকের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি এসেছে। এ বিষয়ে ইউএনও স্যার ব্যবস্থা নিবেন।
শাখা ব্যবস্থাপক মুরাদ হোসেন বলেন, নিয়ম মেনে তার পরিবারের বিপরীতে নয় লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। যার মধ্যে সে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা কিস্তি পরিশোধ করলেও বাকি টাকা পরিশোধ করছে না। তিনি এখন উল্টাপাল্টা কথা বলছেন।