বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

ফেলে দেয়া প্লাস্টিক সামগ্রী প্রক্রিয়াজাত করে স্বাবলম্বী শাহআলম

প্রবীর চক্রবর্তী ॥

রোদের তীব্র উত্তাপে আপনি গরমে অস্থির। খুব তৃষ্ণা পেয়েছে। তৃষ্ণার্ত চোখের দৃষ্টিতে কাছেই কনফেকশনারী বা খাদ্যসামগ্রীর দোকান। সেখানে গিয়ে পানীয় কিনে পান করে তৃষ্ণা মেটালেন। বোতলটি খালি হওয়ায় আপনি তা ফেলে দিলেন রাস্তার পাশে। আবার গৃহস্থালি সামগ্রীর মধ্যে প্লাস্টিকের বালতিসহ কিছু জিনিস ভেঙ্গে যাওয়ায় আপনি তা ফেলে দিলেন ঘরের পাশে। আপনার কাছে মূল্যহীন এসব প্লাস্টিক সামগ্রী অনেকের কাছে আয়ের উৎস।

ফেলে দেয়া প্লাস্টিক সামগ্রী প্রক্রিয়াজাত করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুনরায় বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ফরিদগঞ্জের শাহআলম। তার প্লাস্টিক প্রক্রিয়াজাতের মধ্যে ইতিমধ্যেই যুক্ত হয়েছেন বেশ কিছু বেকার নারী-পুরুষ। ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া চরমান্দারি গ্রামে কারখানা গড়ে তুলেছেন শাহ আলম। কারখানার নাম দিয়েছেন ‘মা-বাবার দোয়া রিসাইক্লিং’।

জানা গেছে, ২০১০ সালে মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে প্রথমে ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল কেনা শুরু করেন শাহ আলম। পরে সেগুলো বস্তাবন্দি করে ঢাকায় বিক্রি শুরু করেন। এরপর ধীরে ধীরে ব্যবসার উন্নতি হলে নিজেই রিসাইক্লিং মেশিন কিনে যাত্রা শুরু হয় কাটিংয়ের (চিপ) কাজ। বর্তমানে এসব পণ্য ঢাকার ইসলামবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছেন।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্লাস্টিকের বোতলগুলো তিনি বাড়ির সামনে বস্তাবন্দি করে রেখেছেন। অন্যদিকে মেশিনে ভাঙ্গা সম্ভব এমন প্লাস্টিকের বালতিসহ নানা সামগ্রী মেশিন ঘরের পাশে স্তূপাকারে রয়েছে। এর পাশেই রিসাইক্লিং করা প্লাস্টিক সামগ্রীর চিপ রোদে শুকাচ্ছেন।

শাহআলম চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, প্রায় ১০/১১ বছর ধরে তিনি এ কাজ করছেন। প্রথমে হকার/টোকাইদের কাছ থেকে প্লাস্টিকের সামগ্রী কিনে তা ঢাকায় বিক্রি করতেন। কিন্তু বর্তমানে চিপ করে তা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন। তিনি বলেন, পরিবেশের ক্ষতিকারক এসব সামগ্রী আমরা সংগ্রহ করে শুধু পরিবেশকে ভালো রাখছি না, এগুলো দিয়ে নতুন সামগ্রী তৈরির উপাদান জোগান দিচ্ছি।

গ্রামে গ্রামে ঘুরে ফেরিওয়ালারা চানাচুর, আচার, সুঁই-সুতা ও চকলেটের বদলে এসব প্লাস্টিকের বোতল ও ভাঙ্গা জিনিসপত্র কেনেন। পরে কেজি দরে তা আমাদের কাছে বিক্রি করেন। প্রকারভেদে প্রতি কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করেন তারা। বাছাই করে প্রকার ও রঙ ভেদে আলাদা করে মেশিনের সাহায্যে তা প্রক্রিয়াজাত (কাটিং) করে পাউন্ড হিসেবে বিক্রি করা হয়। প্রক্রিয়াজাত করার পর তা প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। এছাড়া পানি ও পানীয়ের বোতল সংগ্রহ করে এখানে কেটে রেখে দিলে ঢাকা থেকে লোকজন এসে কিনে নিয়ে যায়। প্রতি মাসে তার আয় হয় লক্ষাধিক টাকা। আনুষঙ্গিক খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকে অর্ধেকের বেশি।

প্লাস্টিকের বোতল প্রক্রিয়াজাতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানিয়ে শাহআলম বলেন, পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ব্যবসা আরও প্রসার করা সম্ভব হবে। স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে গ্রামের মানুষের বেকারত্ব দূর হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়