বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

শেষ হইয়াও হইল না শেষ
প্রবীর চক্রবর্তী ॥

দুই বছর পূর্বে নদীর ওপর মূল সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। তারপর থেকে এখনও ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেতুটি। দুই পাশের সংযোগ অংশসহ সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় এখন পর্যন্ত ব্যবহার করা যাচ্ছে না ডাকাতিয়া নদীর ওপর নির্মিত ২৭৭ মিটার দীর্ঘ ভাষাবীর এম এম ওয়াদুদ সেতুটি। সর্বশেষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগকে চলতি বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষে হস্তান্তর করার কথা বললেও কবে নাগাদ তারা তাদের নির্মাণ কাজ শেষ করবে, তা কেউই বলতে পারছে না। যদিও ওই সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারকি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সেতুর অ্যাপ্রোচ অংশসহ সড়কের কাজ শেষ হবে, সেই লক্ষ্যে তিনি নিয়মিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দিচ্ছেন।

জানা গেছে, এককালের প্রমত্তা ডাকাতিয়া নদীর ওপর ২০১৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের চররনবলিয়া গ্রাম ও চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ছোটসুন্দর গ্রামের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বগার গুদাড়া এলাকা দিয়ে ২৭৭ মিটার দীর্ঘ ভাষাবীর এম এম ওয়াদুদ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে কাজ শুরু হয়। ৩৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার নবারুণ ট্রেডার্স লিঃ নদীর ওপরের মূল কাজটি সম্পন্ন করে। পরে ২০২০-২১ অর্থ বছরে দ্বিতীয় ধাপের কাজের জন্যে ২৮কোটি ৯৫ লক্ষ ৮২ হাজার ৮৫৪ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিজভী কনস্ট্রাকশন ও ইউনুছ আল মামুন (জেবি) যৌথভাবে কাজ শুরু করে।

সরেজমিন সেতুর নির্মাণ কাজ এলাকায় গেলে দেখা যায়, সেতুর চাঁদপুর সদর অংশের ভায়াডাক্টের কাজ অনেকটা শেষ হলেও ফরিদগঞ্জ অংশের কাজ এখনো অনেকটাই বাকি। চাঁদপুর সদর উপজেলা অংশের সড়কের কাজ এখনো শুরু হয়নি। অন্য দিকে রাস্তাতো দূরের কথা ভায়াডাক্টের কাজ এখনো বাকি রয়েছে ফরিদগঞ্জ অংশের। এরপর রাস্তা নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজ রয়েছে।

এভাবে দিনের পর দিন ঠিকাদারি কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনার কারণে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। নিজেদের জমি দিয়েও মানুষ এলাকার উন্নয়নে ২০১৭ সাল থেকে সেতুটির জন্যে অপেক্ষা করছে। তাদের ধারণা ছিল সেতুটি দুই পাড়ের মানুষদের মিলন ঘটানো ছাড়া অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাবে। কিন্তু সেই আশায় গুড়েবালি। ২০২৩ সালের তিন মাস পার হলেও সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার লক্ষণ নেই। মানুষজনকে এখনও নৌকা দিয়েই নদী পারাপার হতে হচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের চর রনবলিয়া গ্রামের নুর মোহাম্মদ (৬৫) জানান, নিজেদের জমি দিয়েছি এই সেতুর জন্যে। সেতু হলে দুই পাড়ের মানুষের জন্য সুবিধা হবে এই ভেবে। কিন্তু বছরের পর বছর যাচ্ছে, সেতুর কাজ শেষ হয় না। মরার আগে দেখতে পারবো কিনা জানি না।

চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ছোটসুন্দর গ্রামের বাসিন্দা মাধব দাস (৪৫) বলেন, সেতুর ওপর দিয়ে আমরা কবে চলাচল করবো জানি না। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়সারাভাবে নির্মাণ কাজ করায় সেতুর শেষ অংশ নির্মাণে গতি নেই। তারা এক সপ্তাহ ঠিকমতো কাজ করলেও পরের সপ্তাহে কোনো কাজ করে না। কবে যে এই সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হবে তা কেউই বলতে পারছে না। ইতোমধ্যেই দিন মাস বছর পার হচ্ছে।

চাঁদপুর এলজিইডির এসও এবং সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইউব খান জানান, ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদ সেতুর দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের ডিসেম্বর ২০২১ সালে মেয়াদ শেষ হয়। পরবর্তীতে মেয়াদ বৃদ্ধি করে জুন ২৩ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগেই পুরোপুরি সম্পন্ন হওয়ার আশা করছি। উল্লেখ্য, চাঁদপুর-হাইমচর আসনের এমপি শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির পিতা ভাষাসৈনিক মরহুম এম. এ. ওয়াদুদের নামানুসারে সেতুটির নামকরণ করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়