সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

পুলিশের অভিযানে নারী-শিশুসহ আটক ৬ ॥ এখনো আটক হয়নি ঘটনার মূল নায়ক
গোলাম মোস্তফা ॥

গত ২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে মাদক উদ্ধারের অভিযানে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে। আর এ ঘটনায় নিরাপত্তার স্বার্থে নারী ও শিশুসহ ৪ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

ঘটনার সূত্রে জানা যায়, রেহানা বেগমের পরিবারের সাথে বিউটি বেগমের পরিবারের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে দীর্ঘদিন যাবৎ। এই বিরোধকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যে বিউটি বেগমের পরিবারকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর জন্যে রেহানা বেগম তার আপন ছোট বোনের জামাই আলমগীরের সহযোগিতায় ইয়াবা সংগ্রহ করে। পরে আলমগীরের পরামর্শ মোতাবেক রেহানা বেগম কৌশলে বিউটি বেগমের ঘরে ইয়াবা রেখে পুনরায় আলমগীরকে জানায়। আলমগীর পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়িকে মোবাইল ফোনে অনুরোধ জানায়, তার বউয়ের বড় বোন পুলিশকে একটি বাসায় মাদক আছে এ মর্মে তথ্য দেয়ার জন্যে ফোন করবে, পুলিশ যেনো বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করে। এর পরপরই রেহানা পুলিশকে ফোন করে বিউটি বেগমের ঘরের কোথায় কী অবস্থায় মাদক রয়েছে সেটি বলে পুলিশকে মাদক উদ্ধারের বিষয়ে অনুরোধ করে।

এদিকে পুলিশ রেহানার দেয়া তথ্যমতে উক্ত বাসায় গিয়ে মাদক উদ্ধার করে। এতে পুলিশের সন্দেহ সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় পুলিশ ওই বাসায় অভিযান পরিচালনাকালে জানতে পারেন, সেই বাসায় অন্তঃসত্ত্বা নারীর প্রসব ব্যথা উঠেছে। এ কথা শুনে তাৎক্ষণিক পুলিশের ব্যবহৃত একটি গাড়ি দিয়ে ওই অন্তঃসত্ত্বা নারীকে চিকিৎসার জন্য আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। এর ফাঁকে পুলিশ কৌশল অবলম্বন করে মাদক উদ্ধার করার জন্যে অনুরোধকারী সোর্স রেহানার বাসায় গিয়ে তার প্রদত্ত তথ্যের সত্যতার বিষয়ে রেহানার পরিবারের সাথে কথা বলে-কীভাবে রেহানা এ মাদক ওই বাসায় রয়েছে এটি জেনেছে এবং প্রকৃত ঘটনা আসলে কী। এমতাবস্থায় খবর আসে অন্তঃসত্ত্বা নারীটি মৃত্যুবরণ করেছে।

এরপর স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল পুলিশের উপর দোষ চাপিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালায়। কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সচেতন জনগণ ও পুলিশের তৎপরতায় এক পর্যায়ে সেটি বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে ঘটনা নিয়ে যখন নানামুখি বিতর্ক চলছে, তখন জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ দীর্ঘ সময় বৈঠক করে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন ও ঘটনার নেপথ্যে নায়কদের গ্রেফতারে অভিযানে নামেন।

অপরদিকে অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যুর ঘটনার পর পরই একটি মহলের ইন্ধনে পুলিশকে মাদকের তথ্য দেয়া রেহানার বাড়িতে হামলার চেষ্টা চালায়। এ খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক রেহানার বাড়িতে গিয়ে রেহানার ছোট বোন শাহিনুর বেগম ও ৩ শিশু সন্তানকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

রাতে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশকে মাদক সংক্রান্ত বিষয়ে ফোন করে প্রথম তথ্য দেয়া রেহানার ছোট বোনের জামাই আলমগীর ও তার ভাই জাহাঙ্গীরকে আটক করে।

এ ঘটনায় পুলিশ বলছে, ঘটনা উদ্ঘাটনে বা একটি বাসায় কোথায় কীভাবে কত পিচ মাদক রয়েছে এমন তথ্য পুলিশকে দিয়ে বির্তকের মধ্যে ফেলার চেষ্টার বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের পরে এ বিষয়ে কর্মকর্তাগণ কথা বলবেন।

পুলিশ জানায়, ঘটনার মূল নায়ক রেহানাকে আটকের বিষয়ে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে শাহিনুর বেগম ও তাদের ৩ শিশু সন্তান পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এছাড়া ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহভাজন হিসেবে জাহাঙ্গীর ও আলমগীর নামক দুভাইকে আটক করা হয়েছে। তবে ঘটনার বিষয়ে মামলা দায়ের প্রক্রিয়া চলমান।

নিহত অন্তঃসত্ত্বা নারীকে গতকাল ৩ জানুয়ারি সকালে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে বলে নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়