প্রকাশ : ২৯ মে ২০২২, ০০:০০
আলহাজ্ব মোস্তাক হায়দার চৌধুরী ও মাকসুদ হায়দার চৌধুরীর স্মরণসভায় বক্তাগণ
মরহুমদের রেখে যাওয়া ভালো কাজগুলোই তাদেরকে স্মরণীয় করে রাখবে
চাঁদপুর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক চাঁদপুর নূরিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের দীর্ঘদিনের সভাপতি আলহাজ্ব মোস্তাক হায়দার চৌধুরী ও তাঁর ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মাকসুদ হায়দার চৌধুরীর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ২৮ মে শনিবার সকালে নূরিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন শিক্ষার্থী পুনর্মিলনী উদ্যাপন পরিষদ কর্তৃক বিদ্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত শোকসভার পূর্বে মরহুমদের রুহের মাগফেরাত কামনাপূর্বক কোরআন তেলাওয়াত ও তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
|আরো খবর
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মোঃ হাবিবুর রহমানের সভাপ্রধানে বক্তব্য রাখেন দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ও চাঁদপুরে বিতর্ক একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা রোটাঃ কাজী শাহাদাত, চাঁদপুর গণি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্বাস উদ্দিন, চাঁদপুর নূরিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু তাহের তফাদার, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সুলতানা নাজমে আরা, হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাসান ঈমাম বাদশা, নূরিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মহব্বত হায়দার চৌধুরী প্রমুখ।
অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র বাহার হায়দার চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রেজাউল করিম বিপ্লব, চাঁদপুর পৌরসভার কর্মকর্তা আঃ বাতেন মিয়াজী, পৌরসভার সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ফরিদ আহম্মদ বেপারী, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র আব্দুর রহিম মিয়াজী, কমিউনিটি পুলিশিং অঞ্চল-৮-এর সভাপতি নকিবুল হায়দার চৌধুরী, জেলা পরিষদের প্রাক্তন মেম্বার মুকবুল আহমেদ মিয়াজী, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র কামাল উদ্দিন সরকার, আঃ বাতেন মিয়াজী, আঃ হান্নান মিয়াজী, আনোয়ার হোসেন মিয়াজী, মোঃ মিজানুর রহমান, বিদ্যালয়ের ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস মিথিলা প্রমুখ।
বক্তাগণ মরহুমদের বর্ণাঢ্য জীবন ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে তাদের অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, মরহুম মোস্তাক হায়দার চৌধুরী ছিলেন অসামান্য প্রতিভার অধিকারী। তিনি সকলকে নিয়ে চলতে ভালোবাসতেন। শিক্ষা, সামাজিকতা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সকল ক্ষেত্রে তাঁর ছিলো অসামান্য দক্ষতা। তিনি যে কোনো সমস্যা সমাধানে অতি অল্প সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার মতো মানসিকতাও ছিলো তাঁর জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় অনেক ভালো কাজ করে গেছেন। তাঁর রেখে যাওয়া ভালো কাজগুলোই তাঁকে স্মরণীয় করে রাখবে সমাজের মাঝে। তিনি সমাজের ভালো কাজগুলোর প্রতি যেমন আন্তরিক ছিলেন, তেমনি পরিবারের প্রতিও ছিলেন আন্তরিক। তাঁর পরিবারের সকলেই তাঁকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসতেন। তিনিও ভাইদেরকে জীবনাধিক ভালোবেসেছেন। তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি তার চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। আমরা মনে করি, তিনি তাঁর আপন ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মাকসুদ হায়দার চৌধুরীর মৃত্যু শোক সইতে পারেননি বলেই তার মৃত্যুর ৪ দিনের মাথায় চলে গেলেন না-ফেরার দেশে। যা সত্যিকারভাবে একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। সকলকেই যেতে হবে কিন্তু আপন ভাইয়ের মৃত্যুর চারদিনের মাথায় বড় ভাইয়ের চলে যাওয়ার ঘটনা খুবই কম রয়েছে। আমরা তাদের রুহের শান্তি কামনা করছি।
সভার অতিথি কাজী শাহাদাত তাঁর বক্তব্যে প্রতি বছর আলহাজ¦ মোস্তাক হায়দার চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী পালন ও তাঁর নামে ফাউন্ডেশন গড়ার জন্যে তাঁর পরিবারের প্রতি এবং তাঁর নামে স্মৃতি সংসদ গড়ার জন্যে এলাকাবাসীর প্রতি অনুরোধ জানান। হাসান ইমাম বাদশা তাঁর বক্তব্যে বিদ্যালয় মিলনায়তানকে আলহাজ¦ মোস্তাক হায়দার চৌধুরীর নামে নামকরণের দাবি জানান।
বক্তাগণ মরহুম মাকসুদ হায়দার চৌধুরীর জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। উভয়ই যেনো পরপারে ভালো থাকেন সেজন্যে দোয়া কামনা করেন। স্মরণসভা শেষে দোয়া অনুষ্ঠিত হয় এবং সকলের মাঝে তবররুক বিতরণ করা হয়। স্মরণসভায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষসহ ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাপক উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর করোনাকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাকসুদ হায়দার চৌধুরী ইন্তেকাল করেন। তার ঠিক ৪ দিনের মাথায় ৫ ডিসেম্বর বড়ভাই আলহাজ্ব মোস্তাক হায়দার চৌধুরী না-ফেরার দেশে চলে যান। পর পর দুটি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসী স্তব্ধ হয়ে পড়েন।