শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মী সমাবেশ
  •   নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে ফরিদগঞ্জে অবাধে ইলিশ বিক্রি
  •   পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মেঘনায় ভেসে উঠলো দুদিন পর
  •   নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি না করার শপথ করিয়েছেন এমএ হান্নান
  •   বিকেলে ইলিশ জব্দ ও জরিমানা

প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

কোনো নাগরিকের জন্যে আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করা যাবে না : জেলা ও দায়রা জজ এসএম জিয়াউর রহমান
চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম ॥

‘বিনা খরচে নিন আইনী সহায়তা, শেখ হাসিনার সরকার দিচ্ছে এই নিশ্চয়তা’-এই স্লোগানে সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত হয়েছে। ২৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে দিবস উপলক্ষে র‌্যালি, মেলা, আলোচনা সভা ও ডকুড্রামা প্রদর্শন এবং শ্রেষ্ঠ দুজন প্যানেল আইনজীবীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

সকাল ৯টায় জেলা জজ আদালত চত্বরে কবুতর ও বেলুন ওড়ানোর মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান এবং জেলা ও দায়রা জজ এসএম জিয়াউর রহমান। উদ্বোধন শেষে আদালত চত্ব্র থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়ক হয়ে বাসস্ট্যান্ড ইলিশ চত্বর ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়। এরপর চত্বরে সংস্থার আয়োজনে লিগ্যাল এইডের মেলা উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ। দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান এবং জেলা ও দায়রা জজ এসএম জিয়াউর রহমান।

জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (সহকারী জজ) মোঃ সাকিব হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী, জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস, পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ শামছুল ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফারহানা ইয়াসমিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডঃ কামাল উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডঃ সাইয়েদুল ইসলাম বাবু, জিপি অ্যাডঃ আব্দুর রহমান, শ্রেষ্ঠ প্যানেল আইনজীবী নূরুল হক কমল, রেহেনা ইয়াসমিন কচি প্রমুখ। বিনামূল্যে আইনী সহায়তা পাওয়া উপকারভোগীর অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ফরিদগঞ্জের মোসাম্মৎ খাদিজা আক্তার ও চাঁদপুর সদর উপজেলার উম্মে কুমকুম ইভা।

আলোচনা শেষে জেলা লিগ্যাল এইডের শ্রেষ্ঠ প্যানেল আইনজীবী নূরুল হক কমল ও রেহেনা ইয়াসমিন কচিকে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন সংস্থার চেয়ারম্যানসহ অতিথিবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (১) শাহেদুল করিম, যুগ্ম জেলা জজ (২) অরুণ চন্দ পালসহ বিচারক, আইনজীবীবৃন্দ।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা ও দায়রা জজ এসএম জিয়াউর রহমান বলেন, জাতির পিতা আমাদের এই দেশ স্বাধীন করার পরে দেশ পরিচালনার জন্যে সংবিধান প্রণয়ন করেন। যা সারাদেশে উন্নত ও শ্রেষ্ঠ সংবিধান হিসেবে স্বীকৃত। আমাদের সংবিধানে প্রত্যেক নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। কোনো নাগরিকের জন্যে আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করা যাবে না। কিন্তু অনেক সময় মানুষের অধিকারও ক্ষুণœ হয়। আদালতের মাধ্যমে যেন একজন ব্যক্তির মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়, সেজন্যে কাজ করা হচ্ছে। আর এজন্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ২০০০ সালে লিগ্যাল এইড আইন পাস করেন এবং নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ২০১৩ সালে সরকার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০ কার্যকরের তারিখ ২৮ এপ্রিলকে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ ঘোষণা করেন।

জেলা জজ আরো বলেন, দিবস পালনের উদ্দেশ্যে হচ্ছে আইনী সেবা বঞ্চিত জনগণকে বেশি বেশি করে সম্পৃক্ত করা। লিগ্যাল এইডের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করার জন্যে আইন মন্ত্রণালয় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে বেশ কয়েকটি অ্যাপস রয়েছে, যার মাধ্যমে সেবা নেয়া যায়। ১৬৪৩০ টোল ফ্রি নম্বরে কল করে যে কোনো সময় আমরা সহায়তা নিতে পারি। আমাদের জেলা লিগ্যাল এইডের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, সরকার দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। দেশ অনেক উন্নত হয়েছে। উন্নতির ফল পেতে হলে আমাদেরকে আইনের শাসন অব্যাহত রাখতে হবে। সরকারের সুযোগ্য নেতৃত্বে আমরা অনেকদূর এগিয়ে যাচ্ছি। লিগ্যাল এইড কার্যক্রমের মাধ্যমে আইনগত সেবার মান যাতে বৃদ্ধি হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণ হবে। বিচারপ্রার্থী জনগণের জন্যে আমরা সকলে কাজ করে যাবো। তাহলেই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, আমরা ২০৪১ সালের টার্গেট নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। সেখানেও কিন্তু বৈষম্যহীন একটি সমাজব্যবস্থার কথা বলা আছে। বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করার পর ঘোষণা দিয়েছিলেন একটি বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা। এখন আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। সে কারণে আমরা ২০১৩ সাল থেকে লিগ্যাল এইড দিবস পালন করে যাচ্ছি। লিগ্যাল এইড দিবস পালন করা যেমন জরুরি, তেমন জনগণকে জানানো দরকার আইনী সহায়তা নিয়ে গরিব ও দুঃখী মানুষের পাশে সরকার আছে। সংবিধানে যে ধারা রয়েছে সেটিই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমাদের সমাজে যারা গরিব-দুঃখী আছেন, যাদের আর্থিক কোনো সামর্থ্য নেই মামলা করার এবং সে ভুক্তভোগী। তখন আল্লাহর কাছে বিচার দেয়া ছাড়া তার আর কী করার থাকে। কিন্তু তার পাশে যদি সরকার দাঁড়ায়, তখন তার মধ্যে একটি আস্থার জায়গা তৈরি হয় এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারি। তখন সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস আরো বৃদ্ধি পায়। এই কাজটি করার জন্য লিগ্যাল এইডের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। আমরা জানি এই লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে অনেক মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়