শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে চাই। সেই সোনার মানুষ গড়ে তোলার জন্যে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন নিয়ে এসছি। সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ লাগবে। আমি আশা করি আমাদের শিক্ষার্থীরা সেই শিক্ষাই পাবে। যারা যুদ্ধাপরাধী, ’৭৫-এর হত্যাকারী, ২০০১ থেকে ২০০৬-এর হত্যাকারী, নারী নির্যাতনকারী, ২১ আগস্টের হামলাকারী, ২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসংযোগকারী কিংবা তাদের দোসর, তাদের হাতে আমাদের ভবিষ্যৎ তুলে দিতে পারি না। আমরা তাদের হাতেই তুলে দিবো যারা আমাদের ভবিষ্যৎ ও দায়িত্ব নিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নারীর উন্নয়ন, যোগাযোগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অর্থনৈতিক ও কৃষি উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বৈষম্যহীন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। সে লক্ষ্যে ’৭২-এর সংবিধানে নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেই লক্ষ্যে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি আমাদের ঘাড়ে চেপেছিল। তারা ছিলো দেশ বিরোধী ও নারী বিদ্বেষী। সেই মৌলবাদীরা নারীর অধিকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে অপশক্তির দোসর হিসেবে দেশকে পরিচালিত করতে চেয়েছিল। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সকল ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে চলছে। সারা পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশ যতগুলো কারণে এগিয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, নারীর ক্ষমতায়ন। জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং দেশ এগিয়ে যাবে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। এই অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হলে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর মনোনীত প্রার্থীকে জয়যুক্ত করতে হবে।

তিনি গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদের রত্নগর্ভা মা শাহজাদী বেগমের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

ড. সেলিম মাহমুদের সভাপতিত্বে ও কচুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সালাউদ্দীন সরকারের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান এমপি। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। এটা সম্ভব হয়েছে টানা ১৩ বছর সরকার স্থিতিশীল থাকার কারণে। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তুলবো। তিনি আরো বলেন, ড. সেলিম মাহমুদের মা যুগ যুগ ধরে যেন আমাদের মাঝে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন। মরহুমা শাহজাদী বেগমের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে আমরা সুনাগরিক গড়ে তুলবো। ড. সেলিম মাহমুদের মানুষের প্রতি রয়েছে অপরিসীম মমত্ববোধ। এই মমত্ববোধ থেকে তিনি কর্ম জীবন থেকে সরে এসে মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করার জন্যে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছেন।

বিশেষ অতিথি পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ড. সেলিম মাহমুদ একজন বিশেষ দক্ষ-অভিজ্ঞ ও গুণী ব্যক্তি। তিনি পিতাণ্ডমাতার প্রতি খুবই দায়িত্ববান এবং তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা-ভালোবাসার পরিচয় দিয়ে আসছেন। পিতাণ্ডমাতার প্রতি ভালোবাসার ন্যায় সমাজের মানুষের প্রতিও তাঁর রয়েছে অপরিসীম ভালোবাসা। এই গুণী ব্যক্তি সাংগঠনিকভাবে দলে অবদান রেখে আসছেন। ভবিষ্যতে দলের গুণগত মানে আরো বেশি অবদান রাখবেন বলে প্রত্যাশা করছি।

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোঃ খসরুজ্জামান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মকবুল হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক বিষয়ক ইঞ্জিঃ এমএ সবুর, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী, সদস্য গোলাম রাব্বানী চিনু ও আজিজুস সামাদ ডন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, বাংলাদেশ বিমানের চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মঈনুদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মাকসুদ কামাল, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ও উপাচার্য আবদুল মান্নান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র, কুমিল্লা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান রিয়ার এডমিরাল এমএ তাহের, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ¦ আইয়ুব আলী পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী সোহাগ, কচুয়া পৌরসভার মেয়র নাজমুল আলম স্বপন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুব আলম, কচুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মানিক ভৌমিক ও ইউপি চেয়ারম্যান হাবিব মজুমদার জয়।

স্মরণ সভায় বরুড়া আসনের সংসদ সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোসেন আকন্দ, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোতাছেম বিল্যাহ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ইবনে আল জায়েদ হোসেন ও কচুয়া থানা পরিদর্শক (ওসি) মোঃ মহিউদ্দিনসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাণ্ডকর্মী এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, রত্নগর্ভা শাহজাদী বেগমের স্বামী হচ্ছেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মরহুম রোস্তম আলী। তাঁর ৪ ছেলে ও ১ মেয়ে। বড় ছেলে আনম জাহাঙ্গীর আলম পটুয়াখালীর জেলা ও দায়রা জজ, দ্বিতীয় ছেলে আবুল কালাম আজাদ জার্মান প্রবাসী, তৃতীয় ছেলে ড. সেলিম মাহমুদ বাংলাদেশ আওয়াম লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং চতুর্থ ছেলে সালাহউদ্দীন মাহমুদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং কর্মকর্তা এবং ১ মেয়ে মরিয়ম আক্তার লাকী। স্মরণ সভা শেষে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে রত্নগর্ভা শাহজাদী বেগম বৃত্তি প্রদান করা হয় এবং রত্নগর্ভা এক মাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।