শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

লেংটার মেলা যেনো মাদকের স্বর্গরাজ্য
মাহবুব আলম লাভলু ॥

মতলব উত্তর উপজেলার বদরপুর (বেলতলী) শাহসূফী সোলেমান লেংটার মাজারে চলছে ১০৩তম ওরস। ৩১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে, চলবে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। মেলায় চলছে অশ্লীল নৃত্য ও মাদকের রমরমা আসর। এ মেলায় মাদকের রয়েছে পাঁচ শতাধিক দোকান। প্রকাশ্যে মাদকের রমরমা হাটের বিষয়টি চোখে পড়ার মতো। মাদক বিক্রেতা নেশাখোরদের দেখলেই মনে হয় এটা যেনো মাদকের স্বর্গরাজ্য।

প্রতিদিন অশ্লীল নৃত্যের তালে তালে ছিটানো হচ্ছে টাকা। স্থানে স্থানে পাগলের ভক্তরা গাঁজার আসর বসিয়ে গাঁজা সেবন করছেন। মাদক সেবনে যোগ দিচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যুবকরা। তারা মনে করে লেংটার মেলায় এসেছে আর গাঁজা খাবে না তা কি করে হয়? সব মিলিয়ে এ যেনো ওরসের নামে মাদকসেবীদের মহামিলন।

শাহ সোলেমান লেংটা একজন খ্যাতিমান সাধক ও অলি বলে জনশ্রুতি রয়েছে। বাংলা ১২৩০ সালে কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার গোবিনাদপুর ইউনিয়নের আলীপুর নামক গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে শাহ্সুফি সোলেমান লেংটা জন্মগ্রহণ করেন। তার জীবনের অধিকাংশ সময়ই কাটিয়েছেন মতলবের বিভিন্ন অঞ্চলে। সোলেমান লেংটার বোনের বাড়ি বদরপুরে তার মাজার অবস্থিত।

১৩২৫ বাংলা সনের ১৭ চৈত্র শাহ্সুফি সোলেমান লেংটা তার বোনের বাড়ি বদরপুর গ্রামে মৃত্যুবরণ করলে সেখানে কবর দিয়ে মাজার স্থাপন করা হয়। প্রতি বছর চৈত্র মাসের ১৭ তারিখে তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপী ওরস এবং মেলা বসে সেখানে। ৭ দিনের এ মেলায় আসা প্রতিটি দোকান থেকে ৫-১০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। মাজারে মানতে দেয়া হচ্ছে গরু, ছাগল, নগদ অর্থ, আগরবাতি ও মোমবাতি। প্রতিদিন উঠছে কোটি টাকা। সবমিলিয়ে এখানে বাণিজ্য হচ্ছে কয়েক কোটি টাকা। এ টাকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার। অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন।

সরজমিনে দেখা যায়, মাদকসেবীরা মাজারের পশ্চিম অঞ্চলের পুকুর পাড় ও পুকুর সংলগ্ন কাঠের বাগান এলাকা, ধনাগোদা বেড়িবাঁধ লাগোয়া বাঁধের ভিতর-বাহির, নদীরপাড়সহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পাঁচ শতাধিক মাদক বিক্রি ও সেবনের আস্তানা গেঁড়ে বসেছে। সকল প্রকার মাদক দ্রব্যই পাওয়া যায় এ মেলায়। আর প্রতিদিন বিকেল থেকেই জমতে থাকে এইসব মাদকের দোকান। চলে সারারাত। মেলা প্রাঙ্গণ যেন নেশার স্বর্গরাজ্য ও নিরাপদ স্থান। দলে দলে আস্তানায় চলছে মাদক সেবন। মেলা প্রাঙ্গণের বাতাসে বইছে গাঁজার গন্ধ।

উপজেলার চরকালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ইসলামে মাদকের কোনো সুযোগ নেই। আর বদরপুর মেলায় যদি মাদকের আস্তানা বসে থাকে তা ইসলাম কোনো ভাবেই সমর্থন করে না।

মেলার আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা মতলব উত্তর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ জানান, এ মেলায় লাখ লাখ লোকের সমাগম হয়। অনেক পাগলও আসে। মাদক বিক্রি ও সেবনের সময় আমরা সামনে গেলে তারা পালিয়ে যায়। আর এভাবে আমরা কতজনকে আটক করবো?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়