প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ) উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাব ভবনের নিচতলায় চাঁদপুর জেলা পরিষদের আয়োজনে ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা ও ৩০ লক্ষ শহীদ আর নির্যাতিত ৩ লক্ষ মা-বোনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতো। তিনি সবসময় বাংলার মানুষের কথা বলেছেন। তিনি চেয়েছেন একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, চাঁদপুরের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের স্থান হলো চাঁদপুর প্রেসক্লাব। সাংবাদিকদের সেই আস্থার জায়গাটি ধরে রাখতে হবে। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানাতে হবে। এর জন্যে সাংবাদিকদের জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এখনও চক্রান্তকারীরা গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার জন্যে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। যা হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধী চক্র তাঁকে স্বপরিবারে হত্যা করে। ধ্বংস করা হয় দেশের সকল উন্নয়ন কার্যক্রম, বাধাগ্রস্ত করা হয় দেশের অর্থনীতিকে। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হলে সংবাদ মাধ্যমকে প্রাধান্য দিতে হবে। দেশবাসীকে সত্য জানাতে হবে। আর এজন্যে প্রয়োজন গণমাধ্যম। তাই তিনি সকল ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে প্রাধান্য দিয়েছেন। আজ জাতির জনকের স্বপ্ন পূরণে সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে দেশের সকল বড় বড় মেগা প্রকল্প। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করবে বাংলাদেশ, স্বপ্ন পূরণ হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। কিন্তু আজ দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেশকে এগিয়ে নিতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে গণমাধ্যম।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ গিয়াস উদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের সাথেই রয়েছে গণমাধ্যম। গণমাধ্যম একটি রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে। জাতির জনকের ৭ মার্চের ভাষণের সময় হ্যান্ড মাইক, মোবাইল, টিভি ও রেকর্ডার ছিল না। আবুল খায়ের নামে একজন সংবাদকর্মী ৩০ মিনিট মঞ্চের নিচে পুরো সময় ক্যামেরা নিয়ে শুয়ে ভাষণটি রেকর্ড করেছিলেন। তার জন্যই বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ মানুষ শুনতে পায়। বঙ্গবন্ধু সংবাদ মাধ্যমকে একটি প্রক্রিয়ায় আনতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যম শক্তিশালী হলে সমাজের অপশক্তিগুলো কমে আসবে।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌসের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া জীবন, কাজী শাহাদাত, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, এএইচএম আহসান উল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান শোভন, মাহবুবুর রহমান সুমন, ক্রীড়া সম্পাদক ফারুক আহমেদ, সিনিয়র সদস্য শওকত আলী, মোশাররফ হোসেন লিটন, চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশ, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সদস্য মিজানুর রহমান লিটন ও এনটিভির চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম।
সাংবাদিকরা তাদের বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু ও গণমাধ্যম মুদ্রার এপিট-ওপিট। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে গণমাধ্যম একজন অভিভাবককে হারিয়েছে। কারণ, তিনি সবসময় গণমাধ্যমের কথা ভাবতেন। আলোচনা সভায় জাতীয়, স্থানীয় ও টেলিভিশনে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের সংবাদকর্মী উপস্থিতি ছিলেন।