শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

তবু অসন্তুষ্ট শাহরাস্তির সেই মনোহর আলী
মোঃ মঈনুল ইসলাম কাজল ॥

দু’দফায় ৮ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রির পরও সরকারি ঘরে না গিয়ে ভাড়া ঘরে বসবাস করছেন শাহরাস্তির সেই মনোহর আলী। চাঁদপুর-৫ (শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের পক্ষ থেকে প্রতিমাসে ঘর ভাড়া ও অন্যান্য আর্থিক সহায়তা পেলেও মনোহর আলীর আবদার মেটাতে প্রতিনিয়ত বিব্রত উপজেলার কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা।

জানা যায়, ২০১৯ সালে শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের শোরসাক গ্রামের মনোহর আলী দীর্ঘদিন ৩ সন্তান নিয়ে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস ও না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন-এমন সংবাদ বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে প্রকাশের পর চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনের সংসদ মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের নজরে পড়েন তিনি।

সে সময় সংসদ সদস্য তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তারের মাধ্যমে হতদরিদ্র মনোহর আলীর সাথে যোগাযোগ করেন। ওই সময় তার পরিবারকে সংসদ সদস্যের পক্ষে নগদ ৫ হাজার টাকা, চাল, ডাল, লবণ, আলু, ডাল, মুড়ি, চিড়াসহ বিভিন্ন প্রকার শুকনো খাবার প্রদান করেন। মোবাইল ফোনে মনোহর আলী নিজের অনুভুতির কথা জানান সংসদ সদস্যকে।

এলাকায় এসে সংসদ সদস্য দেখতে যান মনোহর আলীকে। ওই সময় তাকে জমিসহ ঘর করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। নতুন ঘরে উঠার আগ পর্যন্ত তিনি মনোহর আলীর জন্যে মোবাইল ফোন, ভাড়া ঘর, খাট, লেপতোষক, সিলিং ফ্যান ও প্রতিমাসে আর্থিক সহায়তা পাঠানো শুরু করেন।

স্থানীয় প্রশাসন ও দলীয় নেতৃবৃন্দ মনোহর আলীর জন্যে তার গ্রামের পাশেই ৩ শতাংশ জায়গা পছন্দ করেন। প্রথমে মনোহর আলীর ওই জায়গাটিই পছন্দ হয়েছে বলে জানান। কিন্তু রাত শেষ হয়ে সকাল হতেই ওই জায়গায় বাড়ি করলে যাবেন না বলে বায়না ধরেন তিনি।

পরে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে শোরসাক গ্রামের জনৈক জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে মনোহর আলীর জন্য ৫ শতাংশ ভূমি ক্রয় করা হলে তিনি সে জায়গা রেজিস্ট্রেশনের পর পছন্দ হয়নি বলে জানান।

এরপর একই গ্রামের জনৈক ফজলুল হকের কাছ থেকে ৩ শতাংশ জায়গা ক্রয় করে তা ভরাট করা হলে মনোহর আলী সেখানে গিয়ে ভূমি দাতাদের সাথে বাদানুবাদে জড়ান।

এসব বায়না ও দাবির পরেও সংসদ সদস্য মনোহর আলীর ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় তাকে উপজেলা পরিষদ থেকে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা করে ২টি ঘরের ১টি তাকে নির্মাণ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নিজের চাহিদামত ডিজাইন না হওয়ায় মনোহর আলী সে ঘর গ্রহণে রাজি হননি। পরে শোরসাক গ্রামের ফকরি বেগম ও মিরোজা বেগম নামের দুই ভূমিহীনকে ঘর দুটি বরাদ্দ দেয়া হয়, যার চাবি বুধবার ৩০ মার্চ তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে মনোহর আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সংসদ সদস্য মহোদয়কে তিনি বাবা ডেকেছেন। বাবা ছেলেকে ঘর দিতে চান, আশপাশের লোকজনের কারণে তা পেতে গড়িমসি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৮ শতাংশ জায়গা রেজিস্ট্রি ও ভূমিহীনদের জন্যে বররাদ্দকৃত ঘর কেন নেননি এ প্রশ্ন করা হলে তিনি ৫ শতাংশ জায়গার কথা অস্বীকার করেন ও সাংবাদিকদের উপর রেগে যান। আরও প্রশ্ন করতে চাইলে তিনি তার বাবার (সংসদ সদস্য) সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।

সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা কামাল মজুমদার জানান, সংসদ সদস্য মহোদয় প্রতিমাসে মনোহর আলীর খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। তার জন্যে জমি ক্রয় করা হয়েছে। মনোহর আলীর জায়গা পছন্দ না হওয়ায় ঘর নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সবুজ জানান, মনোহর আলীর জন্যে ভূমিহীনদের জন্য বররাদ্দকৃত ঘর দেয়া হয়েছে। নির্মাণের সময় সরকারি ডিজাইনের বাইরে তার মনের মতো ডিজাইন করে দেয়ার বায়না করেন তিনি। সরকারি ডিজাইনের বাইরে তা সম্ভব নয় জানালে পরে তিনি তা নেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার লোকজন জানান, মনোহর আলী প্রথমে জায়গা পছন্দ করেন। রেজিস্ট্রেশনের পরে বেঁকে বসেন। অজানা কেউ পেছনে থেকে মনোহর আলীকে ভুল বুঝাচ্ছেন। ফলে তার চাহিদা বেড়েই চলছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়