প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর সদর উপজেলার ঢালিরঘাটে বালিয়া-রামপুর খাল ইজারা নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতারণার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এ অভিযোগ থেকে জানা যায়, বালিয়া-রামপুর খাল ইজারা নেয়ার জন্যে অকার্যকর সমিতির নামে ইজারা নেয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে।
অভিযোগে বলা হয়, বাগাদী মৎস্যজীবী সমিতি অকার্যকর ও বন্ধ থাকার পরও সেই সমিতির নামে ইজারা নেয়ার জন্য আবেদন করা হয়। যারা বাগাদী অকার্যকর সমিতির নামে খাল লীজ নেয়ার জন্য ইজারা নেয়ার জন্যে কাগজপত্র জমা দেন এদের মধ্যে কেউ মৎস্যজীবী নয়। একটি সূত্র জানায়, বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মোঃ জাহিদ হাসান খান ওরফে জাহিদ মেম্বার বাগাদী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে বালিয়া-রামপুর খাল ও বালিয়া দীঘির ইজারা নেয়ার পাঁয়তারা করে আসছেন। জেলা সমবায় অফিস থেকে এ সমিতিকে অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে। এ অকার্যকর সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে খাল ও দিঘি ইজারা নেয়ার পাঁয়তারা চলছে। অথচ এ সমিতির সভাপতি বর্তমানে প্রবাসে আছেন। আর সাধারণ সম্পাদক মারা যান। একটি প্রভাবশালী মহলের সাথে আঁতাত করে বাগাদী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে খাল ও দিঘি ইজারা নেয়ার পাঁয়তারা চলছে।
এ নিয়ে বাগাদী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি রতন কুমার দাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার অনুলিপি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসককে প্রদান করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ক’ব্যক্তি বলেন, বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহিদ মেম্বারের সহায়তায় বাগাদী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে খাল ও দিঘি ইজারা নেয়ার পাঁয়তারা চলছে। কিন্তু যারা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ইজারা নেওয়ার পাঁয়তারা করে আসছে, তাঁরা প্রকৃত পক্ষে কোনো মৎস্যজীবী নয়। তাদের মাধ্যমে ইজারা এনে জাহিদ মেম্বার নিজে ভোগদখল করাসহ মাছ চাষাবাদ করার জন্যে অন্য লোক ব্যবহার করে। প্রশাসন প্রকৃত মৎস্য জীবীদেরকে খাল ও দিঘি লীজ প্রদান করবেন। এমনকি বাগাদী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কার্যক্রম আছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করে বিহিত ব্যবস্থা নিবেন-এটাই প্রত্যাশা।
এ ব্যাপারে সাবেক বাগাদী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি রতন কুমার দাস বলেন, আমাদের মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে এবং সমবায় অফিস থেকে সমিতিকে অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ জাহিদ হোসেন খান জাহেদ মেম্বার অন্যের নামে খাল ও দিঘি ইজারা নেয়ার পাঁয়তারা করে আসছে। ইজারাকে কেন্দ্র করে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। জাহিদ মেম্বারের ভুয়া তৈরিকৃত কাগজপত্র দেখে প্রশাসন প্রকৃত মৎস্যজীবীদেরকে ইজারা দিলে কোনো সমস্যা হবে না। না হলে দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার কে নিবে ?
এ ব্যাপারে বাগাদী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন মানিক বলেন, ওয়ার্ড যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের লোকজন ইজারা নিয়ে মাছ চাষাবাদ করে। কিন্তু বালিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য মোঃ জাকির হোসেন খান ওরফে জাহিদ মেম্বার বাগাদী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিটিকে অকার্যকর ঘোষণা করা সত্ত্বেও এ অকার্যকর সমিতির নামে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে হোটেল ব্যবসায়ীকে সভাপতি বানিয়ে ইজারা নেয়ার পাঁয়তারা করে আসছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন তদন্ত করে প্রকৃত ব্যক্তিদেরকে ইজারা দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি। ইজারাকে কেন্দ্র করে দু ইউনিয়নবাসীর মধ্যে হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটতে পারে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের আশু দৃষ্টি কামনা করছি।