বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২২, ০০:০০

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস থেকে বঞ্চিত হয়েছি
বিমল চৌধুরী ॥

সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরবাসীও নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে স্মরণ করেছেন বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তারা উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্যাপন করেন জাতির পিতার ১০২তম জন্মবার্ষিকী। জাতীয় শিশু দিবস হিসেবেও দিনটি উদ্যাপিত হয়। জন্মবার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে জেলা আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনও ব্যাপক কর্মসূচির আয়োজন করেন।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসন কর্তৃক জাতির পিতার জন্মদিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের প্রথম দিন গত ১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় চাঁদপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এই মহান নেতার মৃত্যুর পর আমরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির শিকার হয়েছি। সঠিক ইতিহাস থেকে বঞ্চিত হয়েছে জাতি। দেশের স্বাধীনতা অর্জনে জাতির জনকের অবদান, শিশু-কিশোরদের প্রতি তাঁর অনবদ্য ভালোবাসা, দেশ গঠনে তাঁর যে চিন্তা-চেতনা তা আমাদের প্রজন্মকে জানাতে হবে। শুধু বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি, শেখ হাসিনাকে ভালোবাসি, দেশকে ভালোবাসি বললেই হবে না, তা কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে, মাটি কাটার বিরুদ্ধে, বালু কাটার বিরুদ্ধে, জাটকা নিধনের বিরুদ্ধে, মাদক, ইভটিজিং, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। প্রশাসনের স্বল্প সংখ্যক লোক দিয়ে সবকিছু সবসময় মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এজন্যে প্রয়োজন আপনাদের সহযোগিতা। এক্ষেত্রে আপনাদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। আপনাদের জনশক্তি কাজে লাগাতে পারলেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়া সম্ভব হবে। এজন্যে প্রয়োজন আপনাদের সহযোগিতা। তিনি রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে দেশে জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বেড়েছে উল্লেখ করে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধে বেশ কিছু ব্যবস্থাগ্রহণ করেছেন। ১ কোটি ৪৭ জনকে ফ্যামিলি কার্ড প্রদান করা হবে। এ কার্ডের মাধ্যমে রোজার আগে ও পরে প্রতিজন ২ বার করে টিসিবির ডাল, তেল, চাল, পেঁয়াজ পাবেন। আশা করি আমরা সকলেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সমস্যা থেকে উত্তরণ পাবো। বঙ্গবন্ধু জাতি গঠনে ও দেশের উন্নয়নে নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন। বর্তমানে তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও তাঁর দেখানো পথে এগিয়ে চলছেন। দেশ আজ এগিয়ে চলছে পিতার কন্যার হাত ধরে। আমাদেরকে উন্নয়নের এই ধারাবাহিতা অব্যাহত রাখতে হবে।

আলোচনা সভায় অতিথিদের মাঝে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব নাছির উদ্দীন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন, ডিডি এনএসআই এবিএম আরমান, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, জেলা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তপন সরকার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট সংগঠক ও সাংবাদিক এম আর ইসলাম বাবু। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন মোঃ শাহাদাত হোসেন ও পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করেন চাঁদপুর কণ্ঠের চীফ রিপোর্টার বিমল চৌধুরী। আলোচনা শেষে জাতির পিতার ১০২তম জন্মদিনের কেক কাটেন জেলা প্রশাসকসহ অতিথিবৃন্দ। পরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয় এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় উৎসবমুখর পরিবেশে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের ব্যাপক উপস্থিতিতে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে মুক্তির উৎসব ও সুবর্ণজয়ন্তী মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। এ সময় পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, রাজনীতিক নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধিসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে জেলা প্রশাসকসহ অতিথিবৃন্দ মেলায় অংশ নেয়া জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, জেলা পরিষদ, চাঁদপুর পৌরসভা, চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়, উপজেলা প্রশাসন, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, চাঁদপুর সরকারি কলেজ, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ, গণপূর্ত বিভাগ, সড়ক ভবন, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, জেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর, নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চল, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, জেলা শিক্ষা অফিস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর, জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অফিস, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স, বিআরটিএ চাঁদপুর সার্কেল, বিআইডব্লিউটিসি চাঁদপুর অঞ্চল, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ, জেলা খাদ্য বিভাগ, বিটিসিএল, জেলা সমবায় কার্যালয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, জেলা নির্বাচন অফিস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো, চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২, চাঁদপুর প্রধান ডাকঘর, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, বিআরডিবি, সকল সরকারি বেসরকারি ব্যাংক, চাঁদপুর নদী বন্দর, জেলা আনসার ও ভিডিপি, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, জেলা তথ্য অফিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, চাঁদপুর বন বিভাগ, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, সমাজসেবা অধিদপ্তর, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল, মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল, চাঁদপুর শিল্পকলা কেন্টিন, বদলাও ইয়ুথ ফাউন্ডেশন, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রসমূহের স্টলগুলো পরিদর্শন করেন। উদ্বোধন শেষে ৫০টি জাতীয় পতাকাবাহী ৫টি সুসজ্জিত গাড়িতে করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি জেলা শহর প্রদক্ষিণ করে। এ সময় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রশাসনিক নেতৃবৃন্দ তাদের গাড়ি বহরে যোগ দেন। জেলা প্রশাসন আয়োজিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনকের ১০২তম জন্মজয়ন্তীতে এমন সুসজ্জিত সুবর্ণজয়ন্তী র‌্যালিতে সকলেই অভিভূত হয়ে পড়েন। র‌্যালিটি চাঁদপুর জেলা শহর প্রদক্ষিণ শেষে জাতীয় পতাকাবাহী গাড়ির একেকটি চাঁদপুর জেলার একেক উপজেলায় গিয়ে পৌঁছে। সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদেরকে স্বাগত জানান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়