চাঁদপুর জেলায় শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক হলেন সরকার মোহাম্মদ সেলিম

শিক্ষার্থীদের মধ্যে শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের জাদুর মাধ্যমে আলো ছড়ানোর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবার চাঁদপুর জেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক হয়েছেন সরকার মোহাম্মদ সেলিম। তিনি চাঁদপুর শহরের মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। ৩০ অক্টোবর বুধবার দুপুরে জেলা শিক্ষা অফিসে তাঁর হাতে সম্মাননা স্মারক ও কৃতিত্বের সনদ তুলে দেন জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ জেলা কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা প্রাণ কৃষ্ণ দেবনাথ। যা গত ৬ মে সোমবার রাতে তাঁর স্বাক্ষরিত এক পত্রে সরকার মোহাম্মদ সেলিমকে নিশ্চিত করেছেন।

শিক্ষার্থীরা উল্লাস প্রকাশ করে বলেন, ক্লাসে অনেক সময় পড়ায় একঘেঁয়েমি লাগলেও সেলিম স্যার যখন বাংলা বিষয়ে ক্লাস নেন, কখনোই আমাদের একঘেঁয়েমি মনে হয় না। স্যার হাসির ছলে পাঠদান করেন এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়া আদায় করে নেন। ক্লাসে দুর্বল শিক্ষার্থীরাও যেনো স্যারের আন্তরিকতাময় পড়ার জাদুতে মেধাবী হয়ে উঠে। সেলিম স্যারের এমন সাফল্যে আমরা তাঁর শিক্ষার্থী হয়ে আনন্দে উৎফুল্লতা প্রকাশ করছি।

জানা যায়, সরকার মোহাম্মদ সেলিম ২০০১ সালে শিক্ষকতা পেশার সাথে জড়িত হন। সে হিসেবে তিনি শিক্ষকতা জীবনে প্রায় দুযুগ অতিবাহিত করছেন। ২০০৬ সালে চাঁদপুর সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদানের মাধ্যমে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি জীবন শুরু করেন তিনি। তবে চাকুরি জীবনে এবারই তিনি জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষকের মর্যাদা পেলেন।

চাঁদপুর সদরের ৩নং কল্যাণপুর ইউনিয়নের কল্যান্দী গ্রামের সরকার বাড়ির ছেলে সরকার মোহাম্মদ সেলিম। তাঁর পিতা মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন সরকার ও মাতা শাহানারা বেগম। সংসারে ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ের মধ্যে তিনি হচ্ছেন ৩য় সন্তান। বর্তমানে তাঁর দাম্পত্য জীবনে স্ত্রীসহ ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে।

এক সাক্ষাৎকারে নিজের পাঠদান করা বাংলা বিষয় নিয়ে সরকার মোহাম্মদ সেলিম বলেন, আমি বাঙালি এবং বাংলায় কথা বলি। গদবাঁধা মুখস্থের কোনো বিষয় না থাকায় নতুন কারিকুলামের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলা পড়িয়ে ভালো লেগেছে। শিক্ষক- শিক্ষার্থীর মাঝে আনন্দঘন পরিবেশে এই শিক্ষাক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বুঝে বুঝে পড়ার সুযোগ পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা আরো দক্ষ হচ্ছে এবং এভাবেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে।

জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করায় সরকার মোহাম্মদ সেলিম আরো বলেন, শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আত্মনিয়োগের মাধ্যমে আমি যেনো মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে অবদান রেখে দেশের সেবা করতে পারি সেজন্যে এ ধরনের স্বীকৃতিতে আমার মনোবল দৃঢ় হবে। পাশাপশি কাজে আরো উদ্যমী হতে আরো অনুপ্রেরণা জোগাবে। আমার জন্যে দোয়া চাই, জেলা পর্যায়ের এ ধারা যেনো বিভাগীয় পর্যায়েও অব্যাহত রাখতে পারি।

উল্লেখ্য, চাঁদপুর জেলায় এবার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ৯৬জনকে পুরস্কার দেয়া হয়।