প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২২, ০০:০০
জেলা প্রশাসকের প্রেস ব্রিফিং ও মতবিনিময় সভা
চাঁদপুরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের জমি ও ঘর পেয়েছে ১১২২ পরিবার
মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান বিষয়ক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ কার্যক্রমের ৩য় পর্যায়ের (২য় ধাপ) শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে চাঁদপুর জেলার ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দের সাথে জেলা প্রশাসকের ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার ১৯ জুলাই বিকেল ৪টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
|আরো খবর
প্রেস ব্রিফিং-এ জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, আগামী ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ৩য় পর্যায়ের ২য় ধাপে প্রায় ২৬ হাজার ৩শ’ ৯০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন। ১ম পর্যায়ের প্রায় ৬৬ হাজার ১শ’ ৮৯ জনকে, ২য় পর্যায়ে প্রায় ৫৩ হাজার ৩শ’ ৪০ জনকে ও ৩য় পর্যায়ের ১ম ধাপে ৩৩ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান করা হয়েছে। চাঁদপুর জেলায় ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা ১ হাজার ৬শ’ ৬টি। ১ম পর্যায়ে একক গৃহের মাধ্যমে ১৩৫টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ২য় পর্যায়ে এ জেলার একক গৃহের মাধ্যমে ১০৯টি পরিবারকে অর্থাৎ ২টি পর্যায়ে সর্বমোট ২৪৪টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ৩য় পর্যায়ে ১২৩টি একক গৃহ প্রদানের বরাদ্দ পাওয়া যায়। তন্মধ্যে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ৩য় পর্যায়ের ১ম ধাপে একক গৃহের মাধ্যমে ৫১টি ও আশ্রয়ন প্রকল্পের ৬২৯টি অর্থাৎ মোট ৬৮০টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। বাকি ৭২টি গৃহের মধ্যে ২১ জুলাই তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে ৬৫ পরিবারকে যথাক্রমে হাজীগঞ্জে ২৯টি, শাহরাস্তি ২১টি, মতলব দক্ষিণ ১৫টি এবং অবশিষ্ট ৭টি পরিবারকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গৃহ হস্তান্তর করা হবে। ৭টি গৃহ নির্মাণের জন্যে খাস জমিতে মাটি বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। ভালোভাবে মাটির কম্প্রাকশন না হওয়ায় কাজ শুরু করা হয়নি।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, এ সকল পরিবারকে এক টাকা সেলামিতে দুই শতক জমি বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়েছে। উক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে কবুলিয়াত রেজিস্ট্রেশন, নামজারি ও জমাখারিজ খতিয়ান সৃজন, সনদপত্র প্রদানসহ সকল কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সরকার কর্তৃক নামজারি ও খতিয়ান প্রদান বাবদ ১ হাজার ১শ’ ৭০ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এতে নামজারির জন্যেও তাদের কোনো টাকা ব্যয় করতে হয় না। প্রতিটি একক গৃহের আয়তন ৩৯৫ বর্গফুট। দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা গৃহে একটি টয়লেট, একটি রান্নার কক্ষ ও একটি ইউটিলিটি স্পেস রয়েছে।
মূলত চাঁদপুর জেলার খাস জমি উদ্ধার করে এই পুনর্বাসন করা হচ্ছে। নিষ্কণ্টক খাস জমি না পাওয়া গেলে অবশিষ্ট ‘ক’ শ্রেণীর পরিবারকে জমি ক্রয়ের মাধ্যমে পুনর্বাসনের জন্য সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পুনর্বাসনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের জায়গা নির্বাচন, মাটি ভরাটসহ প্রস্তুতি গ্রহণের জন্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ পর্যায়ে হাজীগঞ্জে ১৪টি ও শাহরাস্তিতে ২১টি পরিবারকে অর্থাৎ মোট ৩৫টি পরিবারকে জমি ক্রয়ের মাধ্যমে এবং জমিতে হাজীগঞ্জে ১৫টি ও মতলব দক্ষিণে ১৫টি অর্থাৎ মোট ৩০টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, জেলায় ১ হাজার ৬শ’ ৬টি ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে ৭শ’ ৫৫টি পরিবারকে আশ্রয়ন প্রকল্পে এবং আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে ৩৬৭টি পরিবারকে ইতোমধ্যে পুনর্বাসন করা হয়েছে। অবশিষ্ট ভূমিহীন ৪৮৪টি পরিবারের মধ্যে ১৮৯টি পরিবারকে চরপাথালিয়া ও চরপাথালিয়া আশ্রয়ন-২ প্রকল্পে ৬টি পরিবারকে খাস জমিতে এবং ২৯৯টি পরিবারকে জমি ক্রয়ের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সভায় মতবিনিময়কালে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি সোহেল রুশদী, সাবেক সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সহ-সাধারণ সম্পাদক আল-ইমরান শোভন, দৈনিক ৭১ কণ্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশক কাজী বেলাল, ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি এমএ লতিফ, সাধারণ সম্পাদক কেএম মাসুদ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক তালহা জুবায়ের প্রমুখ।