প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:৫৪
গুলশানে টিউলিপ সিদ্দিকের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের সন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে নতুন মোড়।
বিলাসবহুল ফ্ল্যাট: চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
![বিলাসবহুল ফ্ল্যাট: চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস](/assets/news_photos/2025/02/09/image-58791-1739109461bdjournal.jpg)
ডিসিকে/এমজেডএইচ
|আরো খবর
রাজধানী ঢাকার গুলশানে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের খোঁজ পাওয়া গেছে। এই ফ্ল্যাটটি টিউলিপের নামে তালিকাভুক্ত এবং তার পরিবারের নামে নামকরণ করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, তারা টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পত্তি নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে ঢাকার গুলশানে অবস্থিত এই ফ্ল্যাটের বিষয়ে জানতে পারে।
লন্ডন থেকে গুলশানে: টিউলিপের বিলাসবহুল জীবনযাপন
যুক্তরাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করা টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে সেখানকার লেবার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) এবং সাবেক সিটি মিনিস্টার ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। তবে, সম্প্রতি আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারের দুর্নীতির সঙ্গে তার নাম জড়িয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত হয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) ধারণা করছে, টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের সদস্যরা রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে আত্মসাৎকৃত বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যবহার করে লন্ডনে বিলাসবহুল সম্পত্তি কিনেছেন। তার নিজস্ব ফ্ল্যাট ছাড়াও, তার পরিবারের অন্য সদস্যদের উত্তর লন্ডনে সাড়ে ৬ লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি ফ্ল্যাট ও ১৫ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ড মূল্যের আরও একটি সম্পত্তি রয়েছে।
অর্থ পাচারের অভিযোগ: বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া
অভিযোগ উঠেছে যে, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অবৈধ অর্থ স্থানান্তর করে লন্ডনে এই সম্পত্তি কেনা হয়েছে। তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, গোপন তদন্তে এসব অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, এবং তাদের বিশ্বাস এটি একটি বড় অর্থ পাচারের ঘটনা।
দুদকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, "আমাদের কাছে প্রমাণ আছে যে, টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতি ও আর্থিক অসদাচরণের সঙ্গে জড়িত। তিনি বাংলাদেশে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়ে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।"
নতুন তদন্ত: ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোপন বৈঠক
এদিকে, ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) গোয়েন্দা কর্মকর্তারা টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে। বাংলাদেশের দুদকের সঙ্গে সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত গোপন বৈঠকে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সাবেক সিটি মিনিস্টারের বিরুদ্ধে ব্রিটেনে আইনি পদক্ষেপ
এনসিএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যদি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে ব্রিটেনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্রিটেনের ব্রাইবারি অ্যাক্ট ২০১০ অনুযায়ী, বিদেশে ঘুষ গ্রহণ করলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
তদন্তের পরিণতি: ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
যদি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তার রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত জীবনে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। তবে, এখনো তদন্ত চলমান এবং ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশের দুদক যৌথভাবে এই বিষয়টি গভীরভাবে অনুসন্ধান করছে।
তদন্তের পরিণতির দিকে তাকিয়ে রয়েছে টিউলিপ সিদ্দিকসহ তার পরিবারের সদস্যদের ভবিষ্যৎ, এবং শিগগিরই এ বিষয়ে আরও তথ্য প্রকাশিত হতে পারে।
ডিসিকে/এমজেডএইচ