মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মিশরে ঈদে মিলাদুন্নবীর ঐতিহ্য ‘আরুসাত-আল-মোলিদ’ : জন্মদিনের পুতুল
  •   'বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনার রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ অপরিহার্য'
  •   চাঁদপুরের ২৪তম পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব
  •   ফরিদগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শোভাযাত্রা
  •   ওয়াইফাই সংযোগ দিতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবকের

প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:২০

অভিভাবকহীনতায় দিশেহারা চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা

চাঁদপুর কন্ঠ রিপোর্ট
অভিভাবকহীনতায় দিশেহারা চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা

পাঁচ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পতিত সরকার দল তথা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা খুবই বেকায়দায় পড়েছে। তারা অভিভাবকশূন্যতায় বলতে গেলে দিশেহারা অবস্থায় রয়েছে। দলটির প্রধান শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় দল যেমনিভাবে চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে, তেমনি দলটির সর্বোচ্চ থেকে একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত নেতা-কর্মীরা চরম বিপর্যয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। দলের এমন একটা বিপর্যয়ের জন্যে তারা কোনোভাবেই প্রস্তুত ছিলেন না।

দলের অনেকেই বলছেন, পঁচাত্তরের পরও দল এতোটা বিপর্যয়ে পড়েনি। দলের নেতা-কর্মীরা ঘরবাড়ি ছাড়া।হামলা-মামলায় জর্জরিত হয়ে চরম বিপর্যয় এবং বেকায়দায় তারা। বিশেষ করে গত ১৫ বছর ৬ মাস দলের যারা ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন, তারা যেমনি বিরোধী দলগুলো এবং জনগণের রোষানলে পড়েছেন, তেমনি ক্ষমতাসীন দলের বঞ্চিত নেতা-কর্মীদের রোষানলেও তারা পড়েছেন। এমন রোষানলে পড়ার কারণ হলো--ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করা, ক্ষমতার উত্তাপে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা, দলের বড় অংশ নেতা-কর্মীকে সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রাখা।

ক্ষমতা থেকে দুনিয়া কাঁপানো বজ্রপাতের ন্যায় ছিটকে পড়ার পর দলের প্রায় সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মী মামলা-হামলায় জর্জরিত হয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছে। বিশেষ করে অভিভাবকহীনতায় তারা বলতে গেলে এখন দিশেহারা।

এমন অভিভাবকহীনতায় চরম বেকায়দায় এবং দিশেহারা অবস্থায় আছে চাঁদপুরের আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও। পাঁচ আগস্টের পর চাঁদপুরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে ব্যাপক হারে। এমনকি অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। তবে এই অগ্নিকাণ্ড পাঁচ আগস্টের আগে জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাসায় দুই দুইবার আগুন দেয়ার জেরই মনে করেন সচেতন মহল। পাঁচ আগস্ট বেলা আড়াইটার পর থেকে শুরু হয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট। এ অবস্থায় জীবন বাঁচাতে পালিয়েছেন সবাই। হামলার পর শুরু হয় মামলা। এ পর্যন্ত চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা হয়েছে তিনটি। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় হয়েছে তিনটি। সদর মডেল থানায় তিনটি এবং কচুয়া থানায় দায়ের করা একটি মামলায় আসামী করা হয়েছে দীপু মনি, মায়া চৌধুরী, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সেলিম মাহমুদ, নূরুল আমিন রুহুল, ডাঃ টিপুসহ কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের। তাদের সাথে স্থানীয় অসংখ্য নেতা-কর্মী এবং মাঠ পর্যায়ের সাধারণ কর্মী-সমর্থকরাও মামলার নামীয় আসামী হয়েছেন। নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাত আসামী রয়েছে সহস্রাধিক। মামলার আসামী হওয়ায় নেতা-কর্মীরা ঘরবাড়ি ছাড়া। নানা জায়গায় তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এমন অবস্থায় তারা কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবার কেউ কেউ সংবাদকর্মীদের কাছে ফোনে চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, গত সাড়ে পনর বছর যারা দুই হাতে অর্থ সম্পদ কামিয়েছেন তারা এখন কোথায়? দুঃসময়ে তারা এখন আমাদের পাশে নেই কেনো!? কেউ বালু মহাল দিয়ে কামিয়েছেন, কেউ পরিবহন সেক্টর দিয়ে, মনোনয়ন বাণিজ্য করে, তদবির করে এবং দলের পদ-পদবী বিক্রি করে কামিয়েছেন, কেউ ঠিকাদারি করে, ঠিকাদারি সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করে কামিয়েছেন। আবার কেউ কেউ দখল বাণিজ্য করে, ভূমিদস্যুতা দিয়েও অঢেল ধন সম্পদ গড়েছেন। আইন অঙ্গনেও সরকারি আইন কর্মকর্তা হয়ে একচেটিয়া প্রভাব খাটিয়ে অর্থ সম্পদ গড়েছেন। সেই তারা এখন কোথায়!? দলের অসহায় সাধারণ নেতা-কর্মীদের দুঃসময়ে তারা এখন তাদের পাশে নেই কেনো? অথচ ওইসব নেতার জন্যে এই সাধারণ কর্মী- সমর্থকরা জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকতো। কিন্তু সুযোগ সুবিধা, ভাগ-বাঁটোয়ারা এবং দেনাপাওনার বেলায় তারা থাকতো বহু দূরে, বঞ্চিতদের কাতারে। বিপদে পড়া এসব বঞ্চিত নেতা-কর্মী এবং সমর্থকদের এখন এভাবেই ক্ষোভ ঝাড়তে দেখা যায়। তাদের আরো খেদোক্তি হচ্ছে-- সাড়ে পনর বছরে তো বহু কামিয়েছেন! অনেকে আঙ্গুল ফুলে বটগাছ হয়েছেন! এখন আপনারা কোথায়? আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমাদের খোঁজ খবর নেয়ার মতো বিবেকও আপনাদের নাই! শুধু সময়ের অপেক্ষা! কড়ায়-গণ্ডায় সব বুঝিয়ে দিবো। এভাবেই নেতা-কর্মী সমর্থকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়তে দেখা যায়। তাতে তারা যে অভিভাবকহীন, সে প্রতিচ্ছবিই বারবার ফুটে উঠে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়