বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫  |   ৩৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:১১

এক সম্ভাবনার নাম প্রতিভা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন

সংস্কৃতি অঙ্গন প্রতিবেদক
এক সম্ভাবনার নাম প্রতিভা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন

চাঁদপুরের প্রাণকেন্দ্রের একঝাঁক তরুণ ও শিশু শিল্পীর স্বপ্ন আর সাধনার মিলনমঞ্চ হয়ে উঠেছে ‘প্রতিভা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন’। ২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করা এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন নৃত্যশিল্পী ও নৃত্য প্রশিক্ষক মো. জুয়েল হোসেন ফারাবী। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংস্কৃতি অঙ্গনে এক উজ্জ্বল উপস্থিতি তৈরি করেছে প্রতিভা সাংস্কৃতিক সংগঠনটি।

নৃত্য, সংগীত ও আবৃত্তির সমন্বয়ে এই সংগঠনটি চাঁদপুরের নানা বড়ো আয়োজনকে করেছে প্রাণবন্ত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য : মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৈশাখী মেলা, তারুণ্যের উৎসব এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ব নৃত্য দিবসের বিশেষ অনুষ্ঠান। শুধু শহরেই নয়, জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও তাদের নিয়মিত উপস্থাপনা ও পরিবেশনা প্রশংসিত হয়েছে।

প্রতিভা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের বর্তমানে প্রায় ৫০ জন নিবেদিতপ্রাণ সদস্য রয়েছে। এরা নিয়মিত সপ্তাহে তিন দিন চাঁদপুর সাংস্কৃতিক চর্চাকেন্দ্রে বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে ক্লাস করেন। এখানে শিশু-কিশোর-তরুণ শিল্পীরা নৃত্য, গান ও আবৃত্তির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নিজেদের তৈরি করছে নতুন দিনের জন্যে।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. জুয়েল হোসেন ফারাবী বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আমরা চেষ্টা করেছি রাজনীতিমুক্ত একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তুলতে। আমরা মনে করি, শিল্প ও সংস্কৃতিই পারে মানুষকে মানবিক, নৈতিক ও সৃজনশীল করে তুলতে। চাঁদপুরের মানুষের কাছে আমাদের চেষ্টার স্বীকৃতি পেয়েছি বলেই এতোদূর আসতে পেরেছি। এখন আমাদের স্বপ্ন আরও বড়ো, জাতীয় পর্যায়ের বড়ো মঞ্চেও চাঁদপুরের এই প্রতিভাকে তুলে ধরা। যদি সরকারি বা বেসরকারি কোনো পৃষ্ঠপোষকতা পেতাম, তাহলে আমরা এ সংগঠনকে জেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন মঞ্চে উপস্থাপন করতে পারতাম।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আছিয়া আক্তার মিথিলা বলেন, প্রতিভা শুধু একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন নয়, এটি আমাদের সবার ভালোবাসার জায়গা। এখানে সবাই পরিবারবদ্ধভাবে কাজ করি। সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমরা মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা, বৈশাখী মেলা, তারুণ্যের উৎসবসহ অনেক বড়ো বড়ো আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছি। ভালো পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমরা শিশু ও তরুণদের জন্যে আরও নতুন নতুন কর্মশালা, প্রতিযোগিতা এবং বড়ো মাপের প্রযোজনায় অংশ নিতে পারতাম।

চাঁদপুরের প্রতিভা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মূল শক্তি তাদের শিল্পীদের প্রতিভা আর তাদের অনুশীলনের প্রতি নিষ্ঠা। স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক দিবসগুলোতেও তাদের অংশগ্রহণ এখন নিয়মিত হয়ে গেছে। ফলে চাঁদপুরের সংস্কৃতি অঙ্গনকে প্রাণবন্ত রাখতে এই সংগঠনটির অবদান অনস্বীকার্য।

সময় গড়ালে ‘প্রতিভা’র স্বপ্ন আরও বড়ো হোক, জাতীয় মঞ্চে চাঁদপুরের পরিচিতি আরও উজ্জ্বল করুক, এটাই চাঁদপুরবাসীর প্রত্যাশা। আর সেই স্বপ্ন পূরণের জন্যে দরকার আরও শক্তিশালী পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা, যাতে সংস্কৃতি চর্চার এ দীপ্তি থেমে না যায় কখনোই।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়