রবিবার, ০৯ মার্চ, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৫

সলফে সালেহীনদের দৃষ্টিতে শবে বরাত

অনলাইন ডেস্ক
সলফে সালেহীনদের দৃষ্টিতে শবে বরাত

অতএব জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে; [সুরা নাহল- ১৬:৪৩]

যুগশ্রে’অসংখ্য হাদীছের ইমামগণ স্ব-স্ব কিতাবে শবে-বরাতের উপর আলাদা অধ্যায় রচনা করে শবে-বরাতের উপর বর্ণিত হাদীছগুলো সংকলন করেছেন। যেমন : ইমাম ইবনে মাজাহ্ (জন্ম: ২০৯ হিজরী) তার 'সুনানে ইবনে মাজাহ্' শরীফে শবে বরাত নিয়ে আলাদা অধ্যায় করেছেন। অধ্যায়ের নাম [বাবু মা জাআ ফী লাইলাতিন-নিসফে মিন শা'বান অর্থাৎ এই অধ্যায় শাবানের মধ্যবর্তী রাত সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছগুলোর অধ্যায়]

ইমাম তিরমিজির 'সুনানে তিরমিজি' শরীফে। অধ্যায়ের নাম- [বাবু মা জাআ ফী লাইলাতিন-নিসফে মিন শা'বান অর্থাৎ এই অধ্যায় শাবানের মধ্যবর্তী রাত সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছগুলোর অধ্যায়]

হাদীছ শাস্ত্রের অন্যতম ইমাম ইবনে হিব্বান (জন্ম: ২৭০ হিজরী) উনার 'সহীহ্ ইবনে হিব্বান'-এ। অধ্যায়ের নাম [মুশরিক এবং অপর মুছলিম ভাইয়ের প্রতি বিদ্ধেষ পোষণকারী বৈ তাবৎ বান্দার প্রতি শাবানের মধ্যবর্তী রজনীতে মহান আল্লাহর ক্ষমা প্রসঙ্গে]

ইমাম বায়হাকী (জন্ম : ৩৮৪ হিজরী) উনার 'সুনানে', 'শুয়া'বে' এবং 'ফাদায়িলুল আওকাতে' -ইমাম বাগাভি (জন্ম : ৪৩৩ হিজরী) উনার 'শরহুছ ছুন্নাহ্'-তে।

ইমাম আব্দুর রাজ্জাক (জন্ম: ১২৬ হিজরী) উনার 'মুসান্নাফে'

ইমাম ইবনে আবি শায়বা (জন্ম: ১৫৯ হিজরী) উনার 'মুসান্নাফে'

পুর্ববর্তী যুগেও অনেক বড় বড় ইমামগণ শবে-বরাতের উপর কিতাব রচনা করেছেন।

যেমন : বিশ্ববরেণ্য ইমাম হাফেজ ইবনে আছাকের আদ-দামেশকি (জন্ম: ৪৯৯ হিজরী) শবে-বরাতের উপর আলাদা কিতাব রচনা করেছেন এবং নাম দিয়েছেন।

ইমাম ইবনে হাজর মাক্কী (জন্ম: ৯০৯ হিজরী) রচনা করেন শবে-বরাতের উপর তার অনবদ্য কিতাব

হাফেজ আবু আব্দুল্লাহ্ গুমারী আল-মাগরিবী (জন্ম: ১৯১০ সনে) রচনা করেন

মুসলিম আইয়িম্মায়ে কেরামের এই কাজগুলো দিয়ে শবে-বরাতের ফজিলত ও বিশেষত্ব স্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয়। এই রাতের ফজিলতের ব্যাপারে কখনো কারো মধ্যে এখতেলাফ ছিলোনা। অর্থাৎ সবাই এই ব্যাপারে একমত যে, এটা বরকতময় রাত, এই রাতে আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর শান অনুযায়ী দুনিয়ার আকাশে 'নুযুল' করেন এবং তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করেন।

কিন্তু কেউ কেউ এই রাতে একত্রিত হয়ে রাত জেগে এবাদত করার ব্যাপারে এখতিলাফ করেছেন। যেমনঃ ইবনে আবি মুলাইকা ও ইমাম মালেক (রাহঃ)। কিন্তু সলফে সালেহীনের অধিকাংশের মতে এই রাতে মসজিদে একসাথে হয়ে ইবাদত করা শুধু জায়েজ নয় বরং মুস্তাহাব। সলফে সালেহীনের সময় শাম তথা সিরিয়ার অধিবাসীরা এই রাতে মসজিদে জড়ো হয়ে ইবাদত করতেন। তাদের মধ্যে তাবেয়ীনদের অংশগ্রহণ ছিল। যেমনঃ খালেদ ইবনে মা'দান, লুকমান ইবনে আমের, ইমাম মাকহুল, ইমাম আওঝায়ী।

অনুরূপভাবে তখনকার যুগে মক্কার অধিবাসীরাও এই রাতে মসজিদে জড়ো হয়ে ইবাদত, জিকির ও দোয়ার মাধ্যমে এই রাত কাটাতেন। ইমাম আবু আব্দুল্লাহ্ ফাকেহী (মৃত্যুঃ২৭২ হিজরী) তার কিতাব 'আখবারু মাক্কা'-তে মক্কাবাসীরা এই রাত কিভাবে পালন করতেন বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন : অর্থাৎ : মক্কাবাসীরা অতীতকাল থেকে আমাদের সময়কাল পর্যন্ত শবে-বরাতে মসজিদে হারামে নামাজ আদায় করতেন, কোরআন তেলওয়াত করতেন, আল্লাহ্ তায়ালার নৈকট্য হাসিলের উদ্দেশ্যে দোয়া করতেন, শবে-বরাতের বরকত পাওয়ার আশায় অসুস্থদের যমযমের পানি দিতেন।

ইমাম বায়হাকী (জন্ম:৩৮৪ হিজরী) উনার ‘সুনানুল কুবরা' মধ্যে ইমাম শাফেয়ী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন :

অর্থাৎ : আমরা শুনেছি পাঁচটি রাতে আল্লাহ্ তায়ালা দোয়া কবুল করেন, জুমার রাত, কুরবানির রাত, ঈদুল ফিতরের রাত, রজবের প্রথম রাত এবং শবে-বরাতের রাত।

(এখানে 'আমাদের কাছে পৌঁছেছে' কথাটি থেকে স্পষ্টরূপে বুঝা যায় যে, এই রাতের এবাদত উনার পূর্ববর্তী সলফে সালেহীনের মধ্যে বহুল প্রচলিত ছিল।)

লেখক : শাইখ মুহাম্মদ সাইফুল আজম আল আজহারী।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়