প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
চারদিকে দীর্ঘশ্বাস! জীবনের নানামুখী সংকট। দ্রব্যমূল্যের বেপরোয়া ঊর্ধ্বগতি, স্বস্তি ফিরানো যাচ্ছে না জীবনে। একদিকে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জাঁতাকলে মানুষ পিষ্ট, অপরদিকে, রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্তরা তাদের কথায় মানুষের জীবনকে আরও গভীর সংকটের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। বর্তমান সময়ে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে নামিদামি পত্রপত্রিকা কিংবা অন্যান্য মাধ্যমে যে বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেছে সেটি হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম এমন অস্বাভাবিক, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং আকস্মিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। ফলে স্বল্প আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জীবনধারণ ক্রমশ দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে। তাদের কাছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যেন নতুন এক অভিশাপের নাম! এভাবে চলতে থাকলে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে পড়বে। বাজার সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি দেশের মানুষ। নিত্যপণ্যসহ পরিবহণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও খেলাধুলাসহ প্রায় সব ধরনের খাতে চলছে সিন্ডিকেটের নৈরাজ্য। পণ্যের সার্বজনীন অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বাজারে দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতি রোধ করা, সমৃদ্ধি, সামাজিক স্থিতি এবং সমৃদ্ধির সাধনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অযৌক্তিক এবং অকারণেই মূল্য বাড়ানো একটি সমস্যা, এই সমস্যা সমাধান করতে, সরকার, প্রতিষ্ঠান এবং সম্প্রদায়ের আমলে নিয়ে কাজ করতে হবে।
আমাদের দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায় কারণে অকারণে। কোনো একটি অজুহাত পেলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কখনো রোজা, কখনো ঈদ বা কখনো জাতীয় বাজেট ঘোষণার কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করা এক নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা এখন বেড়ে গেছে মাত্রাতিরিক্ত হারে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক এবং আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। করোনা সংক্রামণের শুরু থেকে যে দ্রব্যসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয়েছে এবং তা কোনোভাবেই থামছে না। এখন এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এখানে জ্বালানি তেল ছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্য এমনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, আগে যে পরিমাণ পণ্যসামগ্রী একশত টাকা দিয়ে ক্রয় করা যেত, এখন তা ক্রয় করতে লাগে দুইশত থেকে তিনশত টাকা। শুধু তাই নয়, এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যথেষ্ট ছলচাতুরীর আশ্রয়ও নেওয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আগের মূল্য ঠিক রেখে দ্রব্যের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রায় পঁচিশ শতাংশ। খাদ্যে মূল্যস্ফীতিতে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হার বেড়ে ১২.৫৬ শতাংশে পৌঁছেছে- যা গত বছরের এই সময়ে ছিল ৮.৫০ শতাংশ। গত মাসে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে ছিল ১২.৩৭ শতাংশ- যা গত ১১ বছর ৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশে উঠেছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমলেও বিপরীত চিত্র দেশের বাজারে। বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্যসহ সব পণ্যের দাম এখনো অস্থিতিশীল। ফলে নিয়ন্ত্রণে আসছে না মূল্যস্ফীতির হার। দেশে দেশে মূল্যস্ফীতি কমলেও বাংলাদেশে তা কমানো সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামও মানা হচ্ছে না। এর জন্য দায়ী এ দেশের অসৎ ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা।
কোনো একটি অজুহাত পেলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া হয়। মন চাইলেই ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বৃদ্ধি করছে। জবাবদিহিতা না থাকাও এর একটি অন্যতম প্রধান কারণ। আর এই অশুভ প্রবণতা লক্ষ্য করে আসছি আমাদের সেই ছোটবেলা থেকেই এবং আজও সেই একই ধারা অব্যাহত আছে। বরং বলা যায় যে, সেই প্রবণতা এখন বেড়ে গেছে মাত্রাতিরিক্ত হারে। আর এর অনেক কারণের মধ্যে প্রধানতম কারণ আমদানিনির্ভর ব্যবসা কুক্ষিগত হয়ে আছে গুটিকয়েক বৃহৎ ব্যবসায়ীর হাতে। আরেকটা অন্যতম কারণ দেশে খাদ্য উৎপাদন বিশেষ করে কৃষিপণ্য উৎপাদন পর্যাপ্ত বাড়লেও এর সুফল জনগণ পায় না শুধু আধুনিক স্টোরেজ সিস্টেম এবং মানসম্পন্ন বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারার কারণে। আগে বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নিজেরাই আমদানি করত। ফলে খুচরা বাজারের জন্য অনেক বিকল্প সরবরাহকারী ছিল। পরবর্তী সময়ে ক্ষুদ্র আমদানিকারকের প্রতি ব্যাংকগুলোর এক ধরনের বিমাতাসুলভ আচরণের কারণে তারা আর আমদানি ব্যবসায় টিকে থাকতে পারেনি। এখন সময় এসেছে এসব ক্ষুদ্র আমদানিকারকদের নতুন করে আমদানি ব্যবসায় নিয়োজিত করা। আমাদের দেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ। তাই এই কৃষির সফলতাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হলে আধুনিক স্টোরেজ সিস্টেম এবং সুশৃঙ্খল বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। টিসিবিকে ব্যবহার করে বা বাজার মনিটরিং জোরদার করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা যেতে পারে কিন্তু তাতে দীর্ঘমেয়াদি তেমন কোনো সমাধান পাওয়া যাবে না। দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে হলে প্রয়োজন একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করা। ক্ষুদ্র আমদানিকারকের সক্রিয় করে দেশব্যাপী আমদানি অবারিত করার মাধ্যমে এবং সেইসঙ্গে দেশের কৃষিপণ্য আধুনিক পদ্ধতিতে স্টোরেজ করার সুযোগ সৃষ্টি করার পাশাপাশি সুশৃঙ্খল বাজার ব্যবস্থার প্রবর্তন করলে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার স্থায়ী সমাধান খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অযৌক্তিক ঊর্ধ্বমূল্য মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কষ্টের কারণ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অযৌক্তিকভাবে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিম্ন মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। আসলে এর মূল কারণ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের অনৈতিকতা এবং অতিরিক্ত ও অযৌক্তিক মুনাফালাভের আকাঙ্ক্ষা। কিছু কিছু ব্যবসায়ীর নৈতিকতার অবক্ষয় ও সামাজিক দায়বদ্ধহীনতা তাদের মুনাফা বৃদ্ধির এই আকাঙ্ক্ষাকে তীব্র থেকে তীব্রতর করেছে। কোনো কোনো ব্যবসায়ী পরিকল্পিতভাবে পণ্য মজুত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। অথচ ইসলামে এইরূপ মজুতদারি নিষিদ্ধ। ব্যবসার শর্ত হলো ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের সন্তুষ্টি। অতিমুনাফা বা অনৈতিক গুদামজাত ও সিন্ডিকেট করে উচ্চমূল্যে কোনো দ্রব্য কিনতে সাধারণ মানুষকে বাধ্য করলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির কারণ হচ্ছে ব্যবসায়ীদের অত্যধিক হারে মুনাফা লাভের আসক্তি, অবৈধভাবে যে কোনো পণ্যের মজুত বৃদ্ধি, খাদ্যদ্রব্য কিংবা বাজারের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল ও জ্বালানি সংকট, ন্যায়সংগত ও নির্ধারিত মূল্য নির্ধারণ না করা, বাজার তদারকিতে অনীহা ইত্যাদি। দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতি চলতে থাকলে অতি দ্র¤œত আমাদের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে।
তাই এখনই সরকারকে যুগোপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমে যে কাজটি করা দরকার বলে মনে হয় তা হচ্ছে, বাজার নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সম্পৃক্ত অর্থাৎ দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান যেমন টিসিবি, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজারে দ্রব্যমূল্যের আকস্মিক পরিবর্তন ঘটানো দুষ্কৃতকারীদের মূলোৎপাটন করতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে অবৈধভাবে অধিক হারে পণ্য মজুত করতে না পারে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি আমদানি নির্ভরশীলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য সরকারকে আরো বেশি উদ্যোগী হতে হবে। পচনশীল খাদ্যপণ্যের যথাযথ সংরক্ষণের জন্য উপজেলাভিত্তিক হিমাগার স্থাপন করতে হবে। দেশে সংরক্ষণের অভাবে বছরে ৩০ শতাংশ খাদ্যপণ্য নষ্ট হয়। ফলে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাপ কমাতে এটি অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। সরকারের পাশাপাশি আমাদেরও উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে। অপচয় রোধ করার পাশাপাশি সরকার প্রধানের নির্দেশনা মোতাবেক এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদি না থাকে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। মূলত আমরা যদি আমাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি উৎপাদনে সচেষ্ট হই, তবে একদিকে যেমন আমদানির প্রবণতা কমে আসবে, ঠিক তেমনি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের অসৎ উদ্দেশ্যও নস্যাৎ হবে। মনে রাখতে হবে, বাজার নিয়ন্ত্রণের সামগ্রিক বিষয় আমাদের হাতে থাকে না বটে, কিন্তু আমরা যদি সচেতন হই, তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বগতি নিম্নগামী হতে বাধ্য।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে সবার আগে সরকারকে আন্তরিক হতে হবে। এর জন্য দরকার রাজনৈতিক অঙ্গীকার। তবে এসব সিন্ডিকেটের সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে সরকারের নীতিনির্ধারকরাও জড়িত থাকায় তা কখনই ভাঙা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয় না।
মানুষের কল্যাণে কিছু করতে হলে এ সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। বিশেষ করে পরিবহণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নিত্যপণ্যের মতো অতি জরুরি খাতের সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে মানুষকে স্বস্তি দেওয়া সম্ভব নয়। নিত্যপণ্যের বাজারে তো রীতিমতো তাদেরই রাজত্ব চলছে। যার ফলে সরকার বেঁধে দেওয়া সত্ত্বেও নির্ধারিত দামে বিক্রি হয় না পণ্য। কোনোরকম মনিটরিং ও স্বচ্ছতাণ্ডজবাবদিহিতা না থাকায় চাল, ডাল, ডিম, পেঁয়াজ, রসুন, আলু, দুধ, চিনি, তরিতরকারি, মাছ ও মাংসসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, ৭ দিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। ডিমের ডজন ১৫০ টাকা। ভোক্তা অধিকারের অভিযানের মুখেও আলু ও পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে না সরকার নির্ধারিত দামে। কখনো কখনো দোষী কিংবা দায়ী ব্যক্তিরা চিহ্নিত হলেও তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হয় না। বরং লঘু পাপে গুরু দন্ড দিয়ে লোক দেখানো শাস্তি দেওয়া হয়। আবার কখনো কখনো অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে। বাজার সিন্ডিকেট অবৈধ ও অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়াতে মজুত গড়ে তুলছে। দেশি-বিদেশি সব ধরনের ফলেও বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। বাজার করতে আসা ক্রেতার বক্তব্য হচ্ছে, বর্তমান সময়ে বাজারে এসে একদামে কোনো পণ্য পাওয়া অনেক কষ্টকর। বাজারে যেসব পণ্য আছে তার দাম সকালে এক রকম আবার বিকালে আরেক রকম। আবার এই বাজারে ৪০ টাকা হলে অন্য বাজার তা হয়তো ৪৫ অথবা ৩৫ টাকা। প্রায় সব পণ্যের ক্ষেত্রেই দোকান বা বাজার ভেদে তারতম্য রয়েছে। এ সব হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজারসন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্র¤œত ধনী হবে অবৈধ সম্পদের মালিক হবে এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি, বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, অগ্রগতি হচ্ছে দ্রততম সময়ে, সেই অগ্রগতি ও উন্নয়নের সুফল যেন সাধারণ মানুষ ভোগ করতে পারে সেদিকে সরকারকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এ জন্য দ্র¤œত বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, ভাঙতে হবে বাজার সিন্ডিকেট। স্বস্তি আসুক বাজার, স্বস্তি ফিরুক আমাদের দৈনন্দিন জীবনে- এই প্রত্যাশা দেশের সমস্ত সাধারণের।