প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৮
যানজট নিরসনে সচেতনতা দরকার

চাঁদপুর একটি বাণিজ্যিক ও কর্মব্যস্ত শহর। বিনোদন কেন্দ্র ও ভ্রমণের জন্য চাঁদপুর জেলার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন জেলার মানুষ যাতায়াতের জন্য প্রতিনিয়ত চাঁদপুরের সড়ক ও নদীপথ ব্যবহার করেন। বিশেষ করে চাঁদপুরের নদীপথ ব্যবহার করে বরিশাল বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাসমূহের মানুষগণ যাতায়াত করেন। অতিরিক্ত যানবাহন এবং বড় ট্রাক (তেলবাহী, পণ্যবাহী) ইত্যাদির সমন্বয়ে তৈরি হয় জনদুর্ভোগ ও যানজট। চাঁদপুর জেলার সরু রাস্তা ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত যানবাহন সৃষ্টি করে যানজট। পাশাপাশি শহরের মধ্যে অবস্থিত বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি রোগ নির্ণয় কেন্দ্র (ডায়াগনস্টিক), বেসরকারি হাসপাতালসহ পরিকল্পনাহীন নগরায়ন এই যানজটের মূল কারণ হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। তাছাড়া অদক্ষ ড্রাইভার, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, গাড়িতে অতিরিক্ত মালামাল বহন, অপ্রতুল আইনের প্রয়োগের ফলে এ যানজট প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উল্লিখিত সমস্যার প্রেক্ষিতে নিম্নে কিছু সমাধান তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
অবৈধ পার্কিং, যানবাহন ও অবৈধ রিকশা/অটো/টমটম নিয়ন্ত্রণ করা। পার্কিং এলাকা নির্ধারণ করা এবং শহরের মেইন রোডে পার্কিং নিষিদ্ধ করা।
নির্দিষ্ট রূট ও সময়ভিত্তিক যান চলাচল ব্যবস্থাগ্রহণ। স্কুল ও অফিস টাইমে রিকশা, ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ করা। পণ্যবাহী গাড়ির জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ (যেমন রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা)।
শহরের সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো প্রশস্ত করা ও ডিভাইডার বসানো। বিকল্প সড়ক নির্মাণ/চওড়া বাইপাস রাস্তা তৈরি করে ট্রাফিক চাপ কমানো।
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণ করা। স্মার্ট ট্রাফিক সিগনাল স্থাপন। প্রতিটি মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োজিত রাখা ও তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। সিসি ক্যামেরা দ্বারা ট্রাফিক মনিটরিং ও জরিমানা কার্যকর করা।
ভ্রাম্যমাণ আদালত ও আইন প্রয়োগ। অবৈধ পার্কিং ও লাইসেন্সবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান। নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা ও সতর্কতা।
স্বেচ্ছাসেবীÑযেমন : রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউট, বিএনসিসি ইত্যাদি সংগঠনের সদস্যদের সহযোগিতা নেয়া এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্যম্পেইন করা। সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করা ও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা।
ফুটপাত থেকে হকার ও ভ্রাম্যমাণ পণ্য বিক্রেতাদের সরিয়ে দেওয়া। ফুটপাত দখলকারী দোকান মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া।
সর্বোপরি সকলের সচেতনতাই পারে চাঁদপুর শহরকে যানজট ও সড়কে দুর্ঘটনামুক্ত শহর হিসেবে রূপান্তর করতে।