বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে
অনলাইন ডেস্ক

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত। তাঁর ইচ্ছে ছিলো বিমানবাহিনীতে যোগ দেয়ার। সুযোগও পেয়েছিলেন। কিন্তু বাবা-মায়ের ইচ্ছেকে গুরুত্ব দিয়ে আপামর গরিব-দুঃখী মানুষের সেবা দিতে তিনি চিকিৎসকের মতো মহান পেশায় আত্মনিয়োগ করেন।

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সম্প্রতি দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের পাক্ষিক আয়োজন ‘চিকিৎসাঙ্গন’ বিভাগের মুখোমুখি হন। সাক্ষাৎকার নেন আল-আমিন হোসাইন।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ রহমতে বেশ ভালো আছি এবং সুস্থ আছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে কোথায়?

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : আমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বরদিয়া গ্রামে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার শিক্ষাজীবন সম্পর্কে জানতে চাই।

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : আমি গোপালগঞ্জ জেলার গোহালা টিসিএএল হাইস্কুল থেকে মেট্রিক এবং ঢাকার তেজগাঁও কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করি। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চিকিৎসক হওয়ার ভাবনাটি সূচনা হলো কীভাবে?

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : আমার ইচ্ছে ছিলো বিমানবাহিনীতে যোগ দেয়ার। সুযোগও পেয়েছিলাম। কিন্তু বাবা-মায়ের ইচ্ছায় চিকিৎসক হই। আপামর গরিব-দুঃখী মানুষের কাছে থেকে সেবা দিতে পারবো তাই বাবা-মায়ের ইচ্ছেকে গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসক হই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চিকিৎসক হিসেবে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতার কথা বলুন।

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : তখন আমি ইন্টার্নি ছিলাম বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। প্রথমদিন একজন শ্বাসকষ্টের রোগী আসেন। আমার সহকারী রেজিস্ট্রার স্যারের সাহায্য নিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে চিকিৎসা শুরু করলাম। ইনজেকশন এবং নেবুলাইজেশন করার পরে রোগীটার শ্বাসকষ্ট অনেকটা কমে গেলো। শ্বাসকষ্টের একজন রোগীকে নিজের সামনে বুকভরে শ্বাস নিতে দেখে আমার খুবই ভালো লাগলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদপুরে যোগদান করেছেন কবে?

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে চাঁদপুরে যোগদান করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদপুরের চিকিৎসাব্যবস্থার সার্বিক দিক নিয়ে কিছু বলুন।

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : চাঁদপুরে চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হই। কিছু রোগী অনেক ধরনের তথ্য গোপন করে আসল যে বিষয়গুলো বলা দরকার সেগুলো সচরাচর বলে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা অতীতের কাগজপত্র দেখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। যা মোটেও ভালো নয়। তবে একটা বিষয় আমার ভালো লাগে, সেটা হলো রোগীদের কোনো পরামর্শ দিলে তারা শোনে এবং ওষুধ কিনে খায়। এখানে সিভিল সার্জন মহোদয়, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মহোদয়, আবাসিক মেডিকেল অফিসারগণ, স্বাচিপ ও বিএমএ নেতৃবৃন্দ যথেষ্ট আন্তরিক।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার কাছে কোন্ ধরনের রোগী বেশি আসে?

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : জ্বর, পেটে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্টের রোগী।

চাঁদপুর কণ্ঠ : রোগীদের কাছে আপনার প্রত্যাশা কি?

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : রোগীরা তাদের যেসব সমস্যা হয় সেগুলো সুন্দর করে গুছিয়ে আমাদের বলবে এবং পরামর্শ অনুযায়ী চলবে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চিকিৎসাজীবনের একটি সুখের এবং একটি দুঃখের স্মৃতির কথা বলুন।

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : সুখের স্মৃতির কথা আমি আগেই বলেছি। দুঃখের স্মৃতি আমাকে এখনো মর্মাহত করে। সেটা হলো আমি ইন্টার্নি থাকাবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের গাইনী ওয়ার্ডে একজন গর্ভবতী মা খিঁচুনী রোগ নিয়ে আসেন। আমাদের সহকারী রেজিস্ট্রার স্যারকে তখনই বিষয়টা জানানো হয়। তখন রাত ২টা বাজে। তিনি তৎক্ষণাৎ সিজার অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। সিজার করার সময় নবজাতক বাচ্চাটাকে আমরা বাঁচাতে পারি কিন্তু মা আমাদের চোখের সামনেই মারা যান। আমরা অনেক চেষ্টা করেও নবজাতক শিশুর মাকে বাঁচাতে পারিনি। এ বিষয়টা আমাকে মর্মাহত করে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে কী কী প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন?

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : বেশি সমস্যা হচ্ছে আমাদের জনবলের অভাব। সবসময় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগী। কর্তৃপক্ষ যদি সবসময় আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতো তাহলে ভালো হতো। বেশির ভাগ মানুষ হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অন্যায় আবদার করে এবং ক্ষমতা প্রয়োগ করতে চায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগী। তাই চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হলে প্রথম যে তিনটি কাজ করতেন?

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : কোনো ইচ্ছে নেই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : রোগমুক্ত জীবনযাপন করতে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে। নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া, হাঁটাচলা ও খেলাধুলা করবে। যে কোনো সময় যে কোনো প্রয়োজনে সরাসরি চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবে। চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ ছাড়া কোনো ধরনের ওষুধ কিনে খাবে না। তাহলে ইনশাআল্লাহ আমরা ধীরে ধীরে রোগমুক্ত সমাজ গড়তে পারবো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : অবসরে কী করেন?

ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান : অবসরে পড়াশোনা করি। ব্যাডমিন্টন ও ফুটবল খেলি। টিভিতে সব ধরনের খেলা দেখি।

* চিকিৎসাঙ্গন বিভাগে লেখা পাঠানোর

ই-মেইল : [email protected]

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়