শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৪, ০০:০০

কোরবানির পশু কাটাকাটি করতে গিয়ে কোথাও কেটে গেলে করণীয়

ডাঃ শরমিন সুমি
কোরবানির পশু কাটাকাটি করতে গিয়ে কোথাও কেটে গেলে করণীয়

কোরবানির ঈদে অনেকেই একদিনের কসাই বনে যান। অনভ্যস্ত-অপটু হাতে পশু কাটতে গিয়ে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। প্রতি ঈদে হাসপাতালগুলোয় এ ধরনের ‘কাট ইনজুরি’ বা ক্ষত নিয়ে অনেক রোগী ভর্তি হন। যেভাবেই ক্ষত তৈরি হোক না কেন, শরীরের কোথাও কেটে যাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে করণীয় হলো- রক্তপাত বন্ধ করা এবং সংক্রমণ যাতে না হয়, তার ব্যবস্থা নেওয়া। তবে রক্তপাত বন্ধ না হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

কোথাও কেটে গেলে প্রাথমিকভাবে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি

১. একটা পরিষ্কার কাপড় বা গজ দিয়ে কাটা স্থানটি চেপে রাখুন। কাপড় বা গজ না পেলে হাতের তালু কিংবা দুই আঙুল ব্যবহার করে ধরে রাখতে পারেন। টানা ৭ থেকে ১০ মিনিট চাপ দিয়ে ধরে রাখলে রক্ত জমাট বেঁধে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যাবে।

২. পাশাপাশি কাটা স্থানটি একটু উঁচু করে রাখতে হবে। রক্ত বন্ধ হয়েছে কি না, বারবার খুলে দেখা যাবে না।

৩. রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে গেলে টিউবওয়েল বা ট্যাপের বহমান পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। কাটা স্থান জীবাণুমুক্ত এবং পরিষ্কার করার জন্য সাবান বা আয়োডিন ও আয়োডিনজাত অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করুন।

৪. কাটা স্থান পরিষ্কার করার পর ওই জায়গায় পাতলা স্তরে অ্যান্টিবায়োটিক মলম দিয়ে ঢেকে দিন। মিউপিরোসিন, নিওমাইসিন বা এ–জাতীয় মলম সব সময় বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধ হিসেবে রাখা উচিত।

৫. সবশেষে একটি পাতলা গজ বা ব্যান্ডেজ দিয়ে সম্পূর্ণ স্থানটি হালকাভাবে আটকে দিতে হবে।

৬. সাধারণ গজ ব্যান্ডেজ বা স্টিকারযুক্ত ব্যান্ডেজ যা-ই হোক না কেন, ব্যবহৃত ব্যান্ডেজটি দুদিনে অন্তত একবার পরিবর্তন করতে হবে। যদি কাটা জায়গাটা ফুলে যায় কিংবা লাল দেখায়, ব্যথা বেড়ে যায় কিংবা ব্যান্ডেজ ভিজে যেতে থাকে অথবা জ্বর চলে আসে, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এগুলো কাটা জায়গায় সংক্রমণের লক্ষণ।

৭. কেটে-ছিঁড়ে গেলে রক্তপাত হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটলে বুঝতে হবে, রক্তনালি কেটে গেছে। যা সহজে বন্ধ না-ও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে জরুরিভাবে হাসপাতালের বা ক্লিনিকের ইমার্জেন্সিতে যোগাযোগ করতে হবে।

৮. আবার রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা থাকলে, যেমন যকৃতের রোগ, হিমোফিলিয়া, ডেঙ্গু কিংবা দীর্ঘদিন ধরে অ্যাসপিরিন সেবনকারী, এমন রোগীর রক্তপাত সহজে বন্ধ না-ও হতে পারে।

৯. অনেক সময় আঙুল বা হাত শরীর থেকে পুরোপুরিভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অংশটি যদি ধারালো কিছু দিয়ে কাটে তাহলে নিয়ম মেনে ৬ ঘণ্টার মধ্যে যদি প্লাস্টিক সার্জনের কাছে নিয়ে যাওয়া যায়, তাহলে কখনো কখনো এটি আবার শরীরে লাগানো বা প্রতিস্থাপন করা যায়। এটি অত্যন্ত জটিল, সূক্ষ্ম এবং দীর্ঘমেয়াদি কাজ। এটির জন্য বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অংশটুকুকে যত্নের সঙ্গে সংরক্ষণ করতে হবে। নরমাল স্যালাইন বা পরিষ্কার পানি দিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অংশটি পরিষ্কার করে একটা ভেজা নরম কাপড় বা গজ দিয়ে পেঁচিয়ে একটা পরিষ্কার পলিথিনে নিন। এরপর আরেকটা পরিষ্কার পলিথিনে বরফকুচি নিয়ে তার মধ্যে ব্যাগটি রেখে দিন। বিচ্ছিন্ন অংশটি কোনোভাবেই সরাসরি বরফে বা ঠান্ডা পানিতে করে আনবেন না।

১০. কোনো ধাতব নোংরা বস্তুর কারণে ক্ষত তৈরি হলে এক ডোজ টিটেনাস ইনজেকশন নেওয়া প্রয়োজন। তবে ১০ বছরের মধ্যে টিটেনাস টিকা না দেওয়া থাকলে পরিষ্কার ক্ষত হলেও একটি বুস্টার ডোজ নেওয়া ভালো। সেই সঙ্গে টিটেনাসের ইমিউনোগ্লোবিউলিন।

১১. রড বা টেঁটাজাতীয় কোনো বস্তু ঢুকে রক্তপাত হলে এবং ক্ষতস্থানে ওই বস্তু থেকে গেলে ক্ষতস্থানের দুই পাশ চেপে ধরতে হবে। কোনোভাবেই ক্ষতস্থানের ওপর চাপ দেওয়া যাবে না। এমনকি ক্ষতস্থান থেকে বস্তুটি তুলে ফেলারও চেষ্টা করবেন না। ক্ষতস্থান ও বস্তুটির ওপর আলতো করে গজ বা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে দিন। এ রকম আহত ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।

১২. কোরবানি ঈদের প্রস্তুতিতে যোগ করতে হবে ফার্স্ট এইড বক্স। বাড়িতে একটি ফার্স্ট এইড বক্স এখনই প্রস্তুত করে ফেলুন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়