প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৪, ০০:০০
শিক্ষক সাক্ষাৎকার : দীপক চন্দ্র দাস
খেলাধুলা শরীর ও মনকে সতেজ রাখে
দীপক চন্দ্র দাস চাঁদপুর পৌর শহীদ জাবেদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক (গণিত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি বেসরকারি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে চাকুরিজীবন অতিবাহিত করেন। ২০১৪ সালের ১ এপ্রিল তিনি শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আত্মনিয়োগ করে। গণিতের সব জটিল হিসাব তিনি খুব সাবলীলভাবে শিক্ষার্থীদের শেখানোর কাজটি নিরলসভাবে করে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি তিনি দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ‘শিক্ষাঙ্গনে’র মুখোমুখি হন।
সাক্ষাৎকার নেন : আলআমিন হোসাইন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?
দীপক চন্দ্র দাস : অনেক অনেক ভালো আছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষকতা পেশায় কীভাবে এলেন?
দীপক চন্দ্র দাস : ৪৫ বছর বয়সে শিক্ষকতা পেশায় আসি। তার আগে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, আইসিডিডিআর’বি এবং ১৭ বছর গ্রামীণ ব্যাংকে চাকুরি করি। তারপর বিএড করি। ১০ম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিই। ২০১৪ সালের ১ এপ্রিল শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষক হিসেবে প্রথমদিন কেমন কেটেছে?
দীপক চন্দ্র দাস : বিগত প্রতিষ্ঠানগুলো এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সম্পূর্ণ আলাদা অবস্থান, আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি তাই শিক্ষার্থীদের কাছে প্রথমদিনই গ্রহণযোগ্যতা পেতে সে অনুযায়ী নিজেকে আবিস্কার করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার ছাত্রজীবন সম্পর্কে কিছু বলুন।
দীপক চন্দ্র দাস : আমার থেকে ছাত্রজীবনে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে এসএসসি নির্বাচনী পর্যন্ত দ্বিতীয় স্থান কেউ নিতে পারেনি। কিন্তু আমি শতভাগ চেষ্টা করেও প্রথম হতে পারিনি। তবে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে স্কুলে প্রথম হয়ে নিজের প্রাপ্তিটা লাঘব করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনাদের সময়ের শিক্ষাব্যবস্থা ও বর্তমান সময়ের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে কী পার্থক্য লক্ষ্য করেন?
দীপক চন্দ্র দাস : আমাদের সময়ের শিক্ষাব্যবস্থা ছিলো শিক্ষকদের লেকচার সবাই গলধকরণ করা, কিন্তু এখন ছাত্র-ছাত্রীরাই নিজেদের কাজ নিজেরাই করে, শিক্ষক শুধু গাইড করে। অতি আধুনিকতার নামে বর্তমানে শিক্ষকদের প্রতি সম্মান করা ছাত্র-ছাত্রীরা বেমালুম ভুলে গেছে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি শিক্ষামন্ত্রী হলে বিশেষ যে তিনটি কাজ করতেন?
দীপক চন্দ্র দাস : আমি শিক্ষামন্ত্রী হলে যে কোনো মূল্যে পাসের হার ধরে রাখা নীতি বাস্তবায়ন রোধ করতাম। শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে সকল ভাতা শতভাগ সরকারি নিয়মে বাস্তবায়ন করতাম। প্রকৃত বিশেষজ্ঞদের দ্বারা শিক্ষানীতির পরিবর্তন/পরিমার্জন করতাম।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষার্থীদের জন্যে খেলাধুলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
দীপক চন্দ্র দাস : শিক্ষার্থীদের জন্যে খেলাধুলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ খেলাধুলা শরীর ও মনকে সতেজ রাখে। খেলাধুলা ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি করে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : এ বিদ্যানিকেতনটি সম্পর্কে কিছু বলুন।
দীপক চন্দ্র দাস : চাঁদপুর পৌর শহীদ জাবেদ স্কুল অ্যান্ড কলেজ চাঁদপুর পৌরসভা পরিচালিত এমপিওভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। আমাদের প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে দ্বৈত প্রশাসনের অধীনে কাজ করতে হয়, যা অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং। বর্তমানে জরাজীর্ণ টিনশেড ঘর থেকে চারতলাবিশিষ্ট ভবন, স্কুল থেকে কলেজের দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রিয় শিক্ষার্থী কারা? কেনো প্রিয়?
দীপক চন্দ্র দাস : আমার প্রিয় শিক্ষার্থী তারাই যারা তাদের অধ্যবসায় বজায় রাখতে শতভাগ সচেষ্ট। পাশাপাশি শিক্ষকসহ সকল স্তরের মানুষকে তাদের নিজ নিজ অবস্থানে সম্মান করে। মানবিক গুণাবলিসমূহ রপ্ত করে তা পালন করে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষকতা জীবনের একটি আনন্দের ঘটনা বলুন।
দীপক চন্দ্র দাস : আমার পরিবার এ পর্যন্ত কখনোই আমার জন্মদিন পালন করেনি। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে দশম শ্রেণির একদল শিক্ষার্থী কেক কেটে আমার জন্মদিন পালন করে। ওইটাই এ পর্যন্ত আমার প্রথম জন্মদিন পালন, যা ছিলো খুবই আনন্দের।