প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
শৈশবের ঈদ
শৈশবের ঈদ মানে অন্যরকম এক আনন্দ ছিলো। আমার বাবা সরকারি চাকুরি করতেন। তেমন স্বচ্ছলতা ছিলো না পরিবারে। দুই ঈদে নূতন জামা-কাপড় পেতাম। জায়নামাজ পেতাম। তাই ঈদ আমাদের কাছে ছিলো আকাঙ্ক্ষিত। ঈদে মায়ের হাতের পায়েস খাওয়া ছাড়া ঈদ অসম্পন্ন মনে হতো। সেই স্মৃতি আজ রোমন্থন করা ছাড়া উপায় নেই। ছোটবেলার ঈদের খুশি আর আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না, বলেও বোঝানো যাবে না। এ আনন্দের রেশ থাকত ঈদের কয়েকদিন আগ থেকে কয়েকদিন পর পর্যন্ত। ঈদের দিনের ভালা লাগা ছিলো অতুলনীয়। আজও ঈদগাহে গেলে ছোট ছেলে-মেয়েদের দুরন্তপনা দেখলে নিজের ছোটবেলায় চলে যাই।
এখন বড় হয়েছি। অনেক দায়িত্ব। সংসার, সমাজ ও পেশার প্রতি দায়িত্ব পালন করতে হয়। ঈদের সময় যখন নামাজ পড়তে ঈদগাহে যাই তখন ছোটবেলার স্মৃতিরা ভিড় মনে করে। ফিরে যাই সে সময়ে, যখন নিজেকে ছাড়া অন্য কোনো দায়িত্ব বা কর্তব্য মাথায় ছিলো না। নিজেকে নিয়েও এতো চিন্তা ছিলো না তখন। ইচ্ছা করলেও এখন আর সে অবস্থায় ফেরার সুযোগ নেই, পারবোও না।
ছাত্রজীবন থেকেই মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। পড়াশোনার চাপ থাকে। আমার মনে আছে, মেডিকেলে পড়াবস্থায় তৃতীয় পেশাগত পরীক্ষা ঈদের মধ্যে পড়ে। প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়েছে সে সময়। তাই সে বছর ঈদে বাড়ি যেতে পারিনি। হোস্টেলেই ঈদ করেছি। মেয়েরা সহপাঠীরা ঈদের সময় রান্না করে এনে খাইয়েছিলো। স্থানীয় বন্ধুদের বাড়িতে গিয়ে ঈদ করতে হয়েছে।
এবার ঈদে সুস্থতা নিয়ে কিছু বলি। ঈদের সময় কিছুটা ভালো-মন্দ খাওয়া হবে। ঈদের আনন্দে সব খাবারই আমাদের খেতে ইচ্ছা করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে পরিমিতভাবে খেতে হবে। তেল-চর্বিযুক্ত খাবারের ব্যাপারে সাবধান হতে হবে। ঈদের পর ছুটি থাকার সুযোগে আমরা বেশ কয়েকদিন দাওয়াতে যাই। সেখানেও প্রচুর খাওয়া হয়। মাথায় রাখতে হবে, তেল-মশলাযুক্ত খাবার গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই যেনো দুধজাতীয় খাবার, মিষ্টি আমরা বেশি না খেয়ে ফেলি। ঈদের সময় খাদ্য তালিকায় প্রচুর তেল, চর্বি, মশলার সমন্বয়ে তৈরি খাবারের পাশাপাশি যেনো কিছু হালকা ধরনের স্বাস্থ্যসম্মত খাবারও থাকে, সেদিকে নজর দেয়া জরুরি। সকলের ঈদ আনন্দময় হোক।
ডাঃ মোঃ মিজানুর রহমান খান : সাবেক লেকচারার, শের-ই-বাংলা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল।
চেম্বার : নোভা এইড, মিশন রোড, চাঁদপুর।