প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
শিশুদের সমস্যা আলোচনা করতে হলে, প্রথমেই চিন্তা করতে হবে তাদের পিতা-মাতার শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর কথা। জমিতে ফসল চাষ করতে যেমন ভালো বীজ বাছাই করি এবং জমিকে ভালোভাবে তৈরি করি। ঠিক তেমনিভাবে সুস্থ-সবল শিশু জন্মদানের জন্যে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু সবল হওয়া প্রয়োজন এবং সেই সাথে স্ত্রীকে বাচ্চা ধারণের উপযুক্ত করে তুলতে হবে। অর্থাৎ বিয়ের পরে কমপক্ষে তিন মাস ঋতুস্রাব নিয়মিত হতে হবে।
যৌবনের শুরুতে ছেলেদের শরীরের উত্তাপ বেশি থাকে, যাদের অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হয় অথবা যাদের হস্তমৈথুনের বদণ্ডঅভ্যাস আছে তাদের শুক্রাণু দুর্বল থাকে। আবার যদি মেয়েদের শরীরের উত্তাপ বেশি থাকে এবং অতিরিক্ত সাদা¯্রাব ক্ষয় হয় তাদের ডিম্বাণু দুর্বল থাকে। এজন্যে বিবাহের পরে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে নিম্নের চিকিৎসাগুলো করা একান্ত প্রয়োজন।
* প্রতিদিন সকালে নাভীচক্রের ব্যয়াম করতে হবে।
* দেহের অতিরিক্ত তাপ বের করে দিতে হবে।
* প্রতিদিন লোহা/তামা/রূপা/সোনা দ্বারা চার্জিত পানি পান দু মাস করতে হবে।
* স্বামী-স্ত্রী উভয়ই (স্বামী ১১, ১২ ও ১৪নং বিন্দুতে এবং স্ত্রী ১১, ১২ ও ১৩নং বিন্দুতে) দিনে দুবার একাধারে চার মাস চিকিৎসা করতে হবে।
* অন্য কোনো সমস্যা থাকলে তারও চিকিৎসা করতে হবে।
একটি সুস্থ সবল-দম্পতি দেশের জন্যে মূল্যবান সম্পদ এবং তারা উত্তম পিতাণ্ডমাতা হিসেবে গণ্য।
শিশুদের সমস্যাবলি
কৃমি : যদি কোনো শিশুর আহারের আগ্রহ কমে যায়, পেট ফুলা/ফাঁপা থাকে, অধিক কান্নাকাটি করে অথবা বয়স অনুপাতে বৃদ্ধি না হয় তবে চোখের নিচের পাপড়ির ভেতরের অংশ দেখুন। যদি এটি সাদা থাকে এবং কনিষ্ঠ আঙ্গুলের নখের মাঝামাঝি চাপ দিলে ব্যথা থাকে তবে বুঝতে হবে তার পেটে কৃমি আছে। দ্রুত কৃমির চিকিৎসা করুন।
পাতলা পায়খানা, ডিসেন্ট্রি ও নাভীর চারদিকে ব্যথা : যদি ৮নং বিন্দুতে চাপ দিলে তেমন ব্যথা না থাকে তবে বুঝতে হবে নাভীচক্র যথাস্থানে নেই। সেই ক্ষেত্রে নাভীচক্র ঠিক করে দিলেই এটি ভালো হয়ে যাবে।
খাবারের অনাগ্রহ, পেট ফাপা, বদহজম ও বমি : এসব সমস্যার মূল কারণ হলো হজমশক্তি দুর্বল। আমাদের দেশের মায়েরা শিশুদেরকে ঘন ঘন খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এটি ঠিক নয়, দু-এক বেলা না খেলে কোনো শিশুই মরে যায় না। পাকস্থলি একটি যন্ত্র এটিরও বিশ্রামের প্রয়োজন। এর উপর অতিরিক্ত চাপ পড়লে এটির কর্মক্ষমতা কমে যায়। দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলতে থাকলে থাইরয়েড/প্যারা-থাইরয়েড গ্রন্থির উপর অধিক চাপ পড়ে। এতে পরবর্তীতে টনসিল, মানসিক ও ব্রেইনের সমস্যা হতে পারে।
চিকিৎসা
* দু পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি ধরে নাভীচক্র ঠিক করে দিন।
* প্রতি দিন ঘন ঘন ২/৩ চামচ করে হালকা গরম পানি পান করান।
* দু পায়ের পুরো তালুতে প্রতি দিন ৫ মিনিট ধরে আস্তে আস্তে চাপ দিন।
* মায়ের দুধ ছাড়া অন্য কোনো দুধ পান করানো থেকে বিরত থাকুন।
হার্টে ছিদ্র : হার্টের যে কোনো সামান্য অথবা গুরুতর সমস্যা (হার্টে ছিদ্র) ইত্যাদি সমস্যার জন্যে ৩৬নং বিন্দুতে নিয়মিত চিকিৎসা করলে ভালো হয়ে যায়।
কানে ইনফেকশন : যে সকল শিশু মাতৃদুগ্ধ পান করে অথবা অন্য কোনো দুধ পান করানো হয়, সাধারণত এদের প্রায়ই কানে ইনফেকশান হতে দেখা যায়। ৩১নং বিন্দুতে নিয়মিত চাপ দিলে ভালো হয়ে যায়। যদি কানে পুঁজ থাকে তবে এর সাথে ১৬নং বিন্দুতে চাপ দিতে হবে।
প্রতিবন্ধি অথবা বংশগত সমস্যা : যদি কোনো শিশুর তিনটির অধিক গ্রন্থি বিশেষ করে পিনিয়াল, পিটুইটারী, থাইরয়েড/প্যারাথাইরয়েড ও এড্রিনাল এ গ্রন্থিগ্রলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত থাকে তবে শিশুটি প্রতিবন্ধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে (এর মূল কারণ ভ্রুণ অবস্থায় মস্তিষ্কে আঘাত)। কোনো দুরারোগ্য ব্যাধি যেমন প্যারালাইসিস, বাক্শক্তিহীন, দৃষ্টিশক্তি হীন হতে পারে। বংশগত কোনো মারাত্মক সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। (চলবে)
অধ্যাপক কে. এম. মেছবাহ্ উদ্দিন : বিভাগীয় প্রধান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজ। ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর।
[পরের পর্ব আগামী সংখ্যায় প্রকাশিত হবে]