রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   বয়ারচর সংযোগ ব্রিজ ও বেড়িবাঁধ রক্ষায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন
  •   জার্মানিতে কঠিন হচ্ছে রাজনৈতিক আশ্রয়
  •   ইতালির দ্বীপে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ২১
  •   অভিভাবকহীনতায় দিশেহারা চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা
  •   আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৪, ০০:০০

চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে ‘চলেন হাঁটি’ কার্যক্রম জোরদার

জয়নাব ॥
চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে ‘চলেন হাঁটি’ কার্যক্রম জোরদার

প্রকৃতির নির্মল আলো-বাতাসে শরীর আর মনকে চাঙ্গা করতে নানা বয়সী নারী, পুরুষ, শিশু প্রতিদিনই যুক্ত হচ্ছেন চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠের ‘চলেন হাঁটি’ কার্যক্রমে। কেউ সকালে কেউ বা বিকেলে একা কিংবা পরিবার পরিজন বা বন্ধু বান্ধদের নিয়ে আসছেন কলেজ মাঠের এই ‘চলেন হাঁটি’ কার্যক্রমে অংশ নিতে। সেখানে আসার পর কেউ হাঁটছেন, কেউ বা ব্যায়াম করছেন, আবার কেউ বাস্কেটবল বা ফুটবল নিয়ে খেলাধুলায় মেতে উঠছেন।

বিশেষ করে ‘চলেন হাঁটি’ কার্যক্রমে সাড়া দিয়ে শহরের অনেক নারী কলেজ মাঠের পূর্বপাশে লেকের পাড়ে এবং পুরুষরা কলেজ মাঠের চারপাশে হাঁটাহাঁটি করে সব ক্লান্তি দূর করে নিজেকে ঝরঝরা করে নিচ্ছেন। দেখে মনে হবে নানান পেশা ও শ্রেণির সব বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে ‘চলেন হাঁটি’ যেন একটি সামাজিক আন্দোলনে রূপ নিচ্ছে। সেই সাথে উদ্যোক্তা সামাজিক সংগঠন ‘একটি উদ্যোগ’-এর কার্যক্রমটি দিন দিন জোরদার হয়ে উঠছে।

হাঁটতে আসা কলেজ শিক্ষক শাহজাহান সরকার বলেন, আমি নিয়মিত শহরের বিভিন্ন সড়কে হাঁটতাম। পরে একটু প্রশান্তির জন্যে বড়স্টেশনে তিন নদীর মোহনায় অন্যদের সাথে মিলিত হতাম। এখন বাড়ির কাছে কলেজ মাঠে আমরা সেই প্রশান্তির ছোঁয়া পাই।

প্রবীণ রাজনীতিবিদ সফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমিও রাস্তায় হাঁটতাম, কিন্তু নানা কারণে নিরাপদ মনে হতো না। এখন এই কলেজটি হাঁটার জন্যে সবচেয়ে নিরাপদ। আমি বলবো, সব বয়সী নারী-পুরুষ সুস্থ থাকতে হলে এই কলেজ মাঠে যেন নিয়মিত হাঁটতে আসেন। নাজিরপাড়ার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা প্রায় ৮০ বছরের বৃদ্ধা রগ্নগর্ভা মা ভগবতী সরকার বলেন, আমি ডায়াবেটিস, প্রেসার ও পায়ে ব্যথা নিয়ে রাস্তায় নিয়মিত হাঁটতাম। কিন্তু অনেক যানবাহন বলে সড়কে ভয় হয়। তাই নিয়মিত হাঁটতে মন চায় না। কলেজ মাঠে হাঁটার ব্যবস্থা করায় এখন নিয়মিত হাঁটতে পারছি।

চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বলেন, সুস্থ থাকতে হলে একটা বয়সে এসে সব মানুষের সকাল অথবা বিকেলে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটা অত্যন্ত জরুরি। আমি নিয়মিত হাঁটি। চাঁদপুর কলেজ মাঠটি হাঁটার সবচেয়ে উপযোগী ও সুন্দর জায়গা। তাই সবাইকে বলবো, আমি ও আপনি সকলে নিয়মিত হাঁটি।

চাঁদপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষ্টক্যাফের মালিক অজিত সাহা বলেন, আমি সব সময় শহরে হাঁটি। কিন্তু যখন থেকে কলেজ মাঠটি সবার জন্যে উন্মুক্ত করা হলো, তখন আর শহরের রাস্তায় নয়, নিরাপদে কলেজ মাঠে আমি প্রতিদিন ঘড়ি ধরে এক ঘন্টা হাঁটি।

কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ বলেন, এই কলেজটি চাঁদপুরবাসীর সম্পদ এবং প্রাণের জায়গা। আমরা এই সরকারের বদৌলতে এই কলেজটি নান্দনিক রূপ দিয়েছি। এখানে প্রতিদিন সবাই হাঁটতে আসুক, খেলাধুলা করুক আমিও চাই। এ জন্যে উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এর সৌন্দর্য রক্ষা করা সবার দায়িত্ব।

‘চলেন হাঁটি’র প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা সাংবাদিক আলম পলাশ বলেন, নিজ দায়বদ্ধতায় আমি গত ১ জুন থেকে ফেসবুকে আহ্বান জানিয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় কলেজ মাঠে এই হাঁটার আন্দোলন শুরু করি। তবে এখানে যারা হাঁটতে আসছেন তাদের অধিকাংশই শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বা নদী পাড়ে গিয়ে হাঁটতেন। এই কলেজ মাঠটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মনে করে অনেকেই এখন রাস্তা ছেড়ে মাঠে চলে এসেছেন। তবে ফেসবুকে এই হাঁটাহাটির কার্যক্রম দেখে নতুন নতুন অনেকেই কলেজ মাঠে যুক্ত হয়েছেন। প্রতিদিনই এর সংখ্যা বাড়ছে। তাছাড়া আমাদের উদ্যোগে বাস্কেটবল একাডেমির সহযোগিতায় আমরা মেয়েদের একটি বাস্কেটবল দলও তৈরি করছি। আমি বলবো, আপনারা যারা এখনো হাঁটতে আসছেন না তারা মিস করছেন। সুস্থ থাকতে হলে আসুন প্রতিদিন হাঁটি। আর সবাইকে বলুন ‘চলেন হাঁটি’।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়