প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২১, ০০:০০
আমাদের শৈশব ছিলো যতো সেসব দুরন্তপনাময়
আর চঞ্চলতায় ভরা এক রঙিন সময়।
ভোরের আলো থেকে বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা হতো যদিও,
আমাদের থামানো যেতো না; জোয়ার শেষে থামতো নদীও।
আমরা ছিলাম বিভূতিভূষণের ‘পথের পাঁচালী’;
দেখতাম কাশবন রেলগাড়ি আর গাছে গাছে পাখণ্ডপাখালি।
আমরা ঘুরতাম বনেণ্ডবাদাড়ে পাখির বাসার খোঁজে,
আমাদের অবুঝ মনের ভাবনা সাধ্য কার বোঝে।
আমরা ছিলাম কাজী নজরুলের কাঁঠবিড়ালির মতো,
পাড়ার গাছে ডালে ডালে যতো আম জাম লিচু
পেয়ারা আর বাগানের ফুল আরও যা আছে কিছু,
কপালের লিখন মায়ের শাসন, পড়শির বকুনি কতো।
আমরা যেতাম পুকুর ঝিলে, নদীজল খালণ্ডবিলে,
ছোট ছোট হাতে মাছ ধরে পাতিলে রেখেছি ভরে।
আমরা হাঁটতাম মেঠোপথ ধরে নদীতীর বালুচরে,
দলবেঁধে মেতেছি জলের খেলায় গোসলে গোসলে।
আমরা খেলতাম ডাংগুলি গোল্লাছুট কানামাছি চড়ুইভাতি,
পূর্ণিমা চাঁদ জোনাকী পোকা এরাও ছিলো যে খেলার সাথী।
বৃষ্টিতে ভিজেছি বন্ধুরা মিলে মাঠেণ্ডমাঠে বল নিয়ে,
কখনো বা রেলগাড়িতে সব ছুটেছি স্কুল পালিয়ে।
আমরা ভেসেছি আকাশে আকাশে মেঘের ভেলায়,
নাটাই সুতোয় ঘুড়ি উড়াতাম এলোমেলো দখিণা হাওয়ায়।
আমরা ছিলাম প্রজাপতি; স্বপ্ন রাঙ্গিয়ে সারাটা বেলা,
ফিরেছি শেষে মায়ের কোলে সাঙ্গ করে খেলা।
আমাদেরও ছিল পাঠশালা মক্তব আর মসজিদ,
পড়ার সাথী খেলার সাথী আরো কত প্রিয়জন।
বৈশাখী মেলা শীতের পিঠা দলবেঁধে বনভোজন,
রোজার শেষে চাঁদ হেসে আসতো যে খুশির ঈদ।
হারানো সেই শৈশব মনে পড়ে এখনও,
আনমনে হাসি কাঁদি সময়কে কী দিয়ে বাঁধি?
আজ স্মৃতিময় সেইদিন ফিরে আমি পাই যদি!
জানি আসবেনা সেইক্ষণ এ জীবনে আর কখনও।