প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
দেশে দ্রুত জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে নগরায়নের পরিধি ও নতুন নতুন আবাসস্থল। যে কারণে দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে কৃষি জমি এবং অবাধে কাটা হচ্ছে বৃক্ষ। আর এর ফলে খাদ্য উৎপাদনসহ পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এরই মাঝে আশার আলো দেখিয়ে সম্ভাবনার দ্বার খুলছে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা শখের ছাদ বাগান। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই ছাদ বাগান।
সম্প্রতি সরেজমিনে উপজেলার একাধিক ছাদ বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ছাদে কেউ কেউ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের ফল, সবজি ও ফুলের বাগান গড়েছেন। এই ছাদ বাগান থেকেই পরিবারের পুষ্টির চাহিদা জোগান দিচ্ছে এবং বাজারে বিক্রি করেও অর্থ উপার্জন করছেন তারা।
উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের মদনের গাঁও গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম পাটওয়ারী নিজ বাড়ির ছাদেই দেশি-বিদেশি জাতের বিভিন্ন রকম ফল ও ঔষধি গাছ লাগিয়েছেন। ইতিমধ্যে বাহারি জাতের ফল গাছ শোভা পাচ্ছে তার ছাদে।
এর মধ্যে রয়েছে ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের জাম্বুরা, ভিয়েতনামি মাল্টা-৩, চায়না কমলা, দার্জিলিং কমলা, কিউজাই, পালমার আম, রূপালি আম, ত্বিন ফল, ড্রাগন ফল, আঙুর, লেবু, পেয়ারা ও সফেদা। এ ছাড়াও সবজি হিসাবে ঢেঁড়শ, বরবটি, পুঁইশাক রয়েছে একই ছাদ বাগানে।
বাকিবিল্লাহ জানান, মৌসুমে ছাদ বাগানে যে শাক-সবজি করেন, তা দিয়েই পরিবারের চাহিদা মেটে তার।
ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা মামুনুর রশিদ ছাদ বাগানেই ফল, ফুল ও শাক সবজি আবাদ করেন। আম, লেবু ও কমলাসহ নানা জাতের ফল তার ছাদ বাগানে দৃশ্যমান। তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি আবাদ করি এই ছাদ বাগানে। তা দিয়েই প্রায় পরিবারের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করি। বাজার থেকে তেমন শাকসবজি কেনা লাগে না আমার পরিবারের জন্য। বরং নিজেদের চহিদা মিটিয়ে স্বজন ও প্রতিবেশীদের দেওয়া হয়।
পাটওয়ারী বাজারের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান নিজের চার তলা ভবনে গড়েছেন বিশাল ছাদ বাগান। ছাদ বাগানে প্রবেশ করলেই মনে হবে যেন বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত কোন সবজি ও ফলের বাগান। প্রায় ৬০ জাতের সবজি ও ফলের গাছ রয়েছে এই বাগানে। তিনি বলেন, এই বাগানে দেশি-বিদেশি আরও ফলের গাছ লাগানো হবে। ইতিমধ্যে তিনি সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, অনেকেই শখ করে ছাদ বাগান করেন। তবে এটা অনেক কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। সরকারিভাবে ছাদ বাগানের ওপর কোনো প্রকল্প চালু নেই। তবে কেউ যদি ছাদ বাগান করতে আমাদের সহযোগিতা চায় আমরা অবশ্যই করবো। আমাদের প্রত্যেক ইউনিয়নে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আছেন। তাদের ফোন নম্বর নিয়ে যে কোনো সময় সহযোগিতা নিতে পারবেন এবং সরাসরি উপজেলায় এসে আমাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।