শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

একদিনের ভ্রমণ কাহিনী
অনলাইন ডেস্ক

‘‘ভাবো ভাবো ভাবা প্র্যাকটিস করো’’

ছোটবেলায় পড়ার টেবিলে এক শিক্ষক এর মুখে এই কথাটি শুনেছিলাম। তো আর কি? যেমন কথা তেমনি কাজ। তখন থেকে ভাবতে খুব ভালো লাগে নিজেকে ভাবনার জগতে হারিয়ে ফেলতে ও খুব ভালো লাগে। যেন নিজেকে স্বর্গীয় সুখ দিচ্ছে। এক কথায় ভাবনাগুলো আমার বন্ধু হয়ে যায়। ভাবনাগুলো যেন আমারি এক একটি অংশ হয়ে গিয়েছিল। এমনি ভাবনা গুলো হয়ে গিয়েছিল যে, ডাইরী, গল্প কবিতা এমনকি নিত্যদিনের কথা ও লিখা শুরু করলাম। ভাবতে ভাবতে প্রাকৃতিকের প্রেমে পড়ে গেলাম। যেন প্রকৃতিক আমাদের ডাকছে, যেন প্রকৃতি এখন আমাকে ছাড়া চলেই না, যেন আমি প্রকৃতির বন্ধু। এমনি চলতে লাগলো দিন গুলো, এখন আর গাড়ি ভালো লাগে না, হেঁটে হেঁটে প্রাকৃতিকের সাথে কথা বলতে বলতে যেকোন ছোট খাটো জায়গায় যেতে ভালো লাগে। এবং আমি স্কুলে কলেজে প্রাইভেটেও বেশির ভাগ সময় হেঁটে যেতাম আর ভাবতাম, জগৎ থেকে সব থেকে প্রিয় হয়ে ওঠে ভ্রমণ করা। ভ্রমন করতে খুব ভালো লাগতো। যেকোনো ছোট কিংবা বড় বড় ভ্রমণ হলেই মিস করতে না চাইলেও পরিবারের কড়া শাসনে যেতে পারতাম না কোথাও। কোন ভ্রমণেই যেতে দিত না বাবা -মা। আসলে মেয়ে মানুষ তো তাই সামাজিক ক্ষেত্রে বাবা একটু ভয়টা বেশি পেতো। বাবার উপরে কথাও বলতাম না। তাই আমার যেতে ইচ্ছে করলেও কখনো যেতে পারতাম না। তবে পরিবারের সাথে যে ভ্রমণে যায়নি তাও না। গিয়েছি অনেক জায়গায়। বাবা যদিও দূরে না নিতো তবে আমার প্রিয় জায়গাটাতে ঠিক শুক্রবারে নিতে কখনোই ভুলতো না। পরিবারকে নিয়ে এমনই একটি ভ্রমণ কাহিনী আপনাদের সাথে আলোচনা কররো।

আমাদের মতে বাধ্য সন্তানরা কখনো বাবা মায়েদের অমতে কোন সিদ্ধান্ত নেয় না। এবং সেই আমাদের মতোই ছাত্রীরা নতুন নতুন জায়গায় বেড়াতে যাব এটাই স্বপ্ন। বেড়াতে যাওয়া বার বার সু্যােগ হয়েও যেতে না পারা আমরা। কিন্তু বাবা এবার কেন জানি হঠাৎ সাত সকালে সবাইকে ডেকে তুলে বলে-

বাবা : শোন সবাই, আমরা সবাই ঘুরতে যাবো। তাও পুরো ৪দিনের জন্য।

মা : হঠাৎ ঘুরতে কেন যাবো?

আমি : আম্মু কথা বলো না এত,যাই না একটু এমন কিছু বলো না যেন আব্বুর মত পাল্টিয়ে ফেলে।

বাবা : কালেই চট্টগ্রাম যাবো। এবং ভোরে ট্রেনে। সবাই সবার বেগ গোছাও।

আমি তো বাবার কথা শুনে মহা খুশি। কত মজা আমরা ঘুরতে যাবো, ভেবেই আনন্দে দিশে হারা। আমি রুমে এসেই বেগ গোছাতে লাগলাম। জামা কাপড়ের সাথে পেন এবং ডাইরি ও নিলাম। যেন কোন সুন্দর জায়গা দেখলেই সাথে সাথে লিখে রাখতে পারি। আর সব থেকে বড় কথা ওখানে আমরা তিন দিন থাকবো। তাই প্রতিদিন কি হয় না হয় সব লিখে লাগবো।যেন সেগুলো পড়ে মনে করতে পারি আর ভালোভাবে কাটানো দিন গুলোর কথা ভেবে আনন্দ পাই।

তাই সকালে উঠেই রওনা হলাম। মা, আমি আর বাবা, ভোরে আবহাওয়া যে এতো সুন্দর আগে কখনো উপলব্ধি করিনি, এই প্রথম এত কাজ থেকে উপলব্ধি করছি। পুরো শহরটা যেন মায়ায় ভরা। যেন প্রকৃতি ঘুমাচ্ছে।মনে হচ্ছে আমার তার উপর দিয়ে হাঁটছি। তার উপর দিয়ে ঠকঠক শব্দে প্রাকৃতিকের ঘুম ভাঙ্গাছি, প্রাকৃতিকে যত দূর চোখ যাচ্ছে ততই মুগ্ধ হচ্ছি। প্রতিটি হাওয়া প্রতিটি নিঃশ্বাসে উপলব্ধি করতে পারতেছি প্রাকৃতের পবিত্রতা। কতই না মিষ্টি এই প্রকৃতি। এইভাবে মন ভরে যাচ্ছে। ট্রেন চলছে আপন গতিতে আমি মা বাবা বসে আছি সিটে। বাবা মা কথা বলছে। আমি বাইরে চেয়ে আছি। এখনো সূর্য পুরোপুরি উঠে নি। যত চাচ্ছি ততই অন্ধকার কেটে আলো জ্বলে উঠছে। প্রকৃতির হাওয়া এসে এক অজানা অনুভূতি টানে ফিরে এসেছে। শ্রীগ্নতার মায়া এক উল্লাসে বয়ে চলেছে। মন টিকছে না ট্রেনে, মন চাচ্ছে এখনি নেমে গিয়ে প্রকৃতির সাথে মিশে যাই, ঠকঠক শব্দেও ফিরে পাচ্ছি তার নবীনতা। কেটে গেছে তার সেই রূপ তার অপেক্ষায় চেয়ে আছি। এসেছে সেই প্রতীক্ষিত উন্মাদনা। সেই অনুভূতি, সেই ভালোবাসা ছোঁয়া। এত মিষ্টি, এত সুন্দর অথচো আমার তার থেকে বঞ্চিত ছিলাম এতদিন। যতদূর যাচ্ছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি। রোদটা আবছা আবছা দেখা দিয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই রোদ উঠে গেল কি অপূর্ব ভাবেই না উঠেছে। যা আমি বিশ্লেষণ করলেও খুব কম হবে। তার সৌন্দর্য এতটাই যে আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।

গাছের ফাঁকে ফাঁকে রোদরা খেলা করে। ঘন সবুজের মাঝে হালকা হাওয়া এসে ভিড় করে। নীল আকাশের বুকে লাল টকটকে সূর্যি মামা দেখা দিয়েছে তার প্রকৃতির সংসারে। ফিরে এলো তার রাজ্যে রাজার রূপ নিয়ে।

বাবার ডাকে ঘোড় ভাঙ্গালো।

বাবা : কিরে কথা বলছিস না যে কোন সেই ট্রেনে উঠার পর থেকেই বাহিরে তাকিয়ে আর ডাইরিই লিখছিস, কত ডাকলাম সারা দেস না কেন?

আমি : সরি বাবা, খেয়াল করি নি।

বাবা : আচ্ছা, আচ্ছা, বল কি নাস্তা করবি এখন। এই লাকসাম থামবে কিছুক্ষণের মধ্যে, কি খাবি বল ওখান থেকেই নাস্তা নিয়ে নিবো।

আমি : তুমি নিও কিছু একটা।

বাবা : আচ্ছা।

মা আর আমি গল্প করছি সেখানে গিয়ে কি করবো না করবো তা নিয়েই। হঠাৎ বাবার সিদ্ধান্তে কোন রকম গোছিয়ে চলে এসেছে, কি করবো না করবো সেসব আলোচনা করার সুযোগ ও পাইনি। তো আরকি বাবা নাস্তা আনতে চলে গেছে আমি আর মা মিলে আলোচনায় মেতে উঠলাম। কখন যে ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে বুঝতেই পারি নি । মা আমি , বাবা গল্প করতে করতে চট্টগ্রামে খুব কাছে চলে এলাম। দূর থেকেই চট্টগ্রামের নানান দালান কোঠা দেখা যাচ্ছে।

নিত্য নতুন বড় বড় ফেক্টরি নতুন নতুন পার্ক কি যে সুন্দর করে সাজানো। দেখেই মন ভরে গেলো। দীর্ঘ ৫ ঘন্টা ভ্রমণের পর চট্টগ্রামের প্লাটফর্মে এসে পৌঁছলাম। পৌঁছতেই কিছু কুলিওয়ালা ভাই এসে গিরে ধরেছে।

কুলিওয়ালা : দাদা বেগ নিতে হবে কি? দেন দেন আমাকে দিন এগিয়ে দিচ্ছি।

বাবা : এতো জন দিয়ে কি করবো। এক জন এসো বেগ গুলো নিয়ে আমাদের পিছন পিছন।

অনেকগুলো কুলিওয়ালা ঠেলে মেলে বাবার থেকে বেগ গুলো হাতে নিয়ে একজন মধ্যবয়স্ক লোক বাবার হাত থেকে বেগ গুলো নিয়ে আমাদের পিছন পিছন আসতে লাগললেন। আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। দেখলাম শুধু তারাই নয়। আরো অনেক লোক আছে। তারা এভাবেই ঘন্টার পর ঘন্টা শুধু মাত্র ২-৪ টাকা রোজগার করার জন্য বসে থাকে। যদি দুই একটা টাকা পায় তবে তারা তাদের বাচ্চার জন্য কিছু খাবার নিতে পারবে যেই আশায়, প্লাল্ট ফর্মের বাহিরে আসতেই দেখি শত শত ঈঘএ দাঁড়িয়ে আর সবাই বলেছে দাদা কই যাইবেন? আইয়েন আমার অটোতে। আপা কোথায় যাবেন। আসেন পৌঁছে দিবো। চট্টগ্রামে আমাদের পরিচিত কেউ থাকে না। তাই কোনদিন যাওয়া হয়নি। তাই এবার হোটেলেই উঠবে বাবা। একটা ঈঘএ নিলাম সীতাকুন্ড আসলাম এখন একটা হোটেলে উঠলাম। এখানে আশেপাশে নাকি অনেক দেখার মত জায়গা আছে। তাই এখান থেকেই ঘুরাঘুরি টা খুব ভালো মনে হচ্ছে। দুইটার মধ্যেই হোটেলে উঠে গেলাম, ফ্রেশ হয়ে ঘুরতে বের হলাম। যেহেতু অনেক অনেক ঘুরবো তাই আজ থেকেই এক একটা জায়গা ঘুরে নেবো।চলে এলাম পতেঙ্গ সৈকতে। কি যে সুন্দর লাগছে। মৃদূ হওয়া, অসমন্ত লাল সৈকত। চোখ যতদূর যাচ্ছে যেন সৌন্দর্য বেড়েই চলেছে। হাজার মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছি প্রকৃতির সৌন্দর্যে। যেন মনে হচ্ছে মিশে যাই প্রকৃতির সাথে। সমুদ্রে পার দিয়ে হাঁটছি আর তার আছড়ে পড়া ঢেউগুলো কে গুনছি। তবে আমার চোখে ছেদ করে ঢেউগুলো যেন আমার সঙ্গে নৃত্য করছে। যতবার গুনতে যাই ততবারই হারিয়ে ফেলছি ঘেউ গুলো কে। তাদের সাথে এরকম নৃত্য খেলতে আমার খুব ভালোই লাগছে। এখানে এসে দেখতে পেলাম নানান জেলার মানুষ নানান রকমের সংকেতের সাথে মেতে উঠেছে এই পতেঙ্গ সৈকতে। এলাকাতে ফুটপাত ও অনেক রেস্টুরেন্ট রয়েছে। যা দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। আর এই কারনে প্রাকৃতিকের সাথে স্বাদ মিলিয়ে সব থেকে ভালো সময় উপভোগ করা অসম্ভব। কিছু দূরে দেখি ঘোড়া, আর পিঠে চড়ে আছে এক রমণী নারী। ঘোড়ার গলায় দড়ি আছে। দড়ি ধরে আছে এক যুবক বয়সের যুবক। আমি কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম তাদের দিকে ভালোই লাগছিল। মনে হচ্ছিলো আমিও চড়ি। তবে না, লোক লজ্জায় উঠিনি। ঘুরতে ঘুরতে প্রায় বিকেল হয়ে গেলো। শহরের অলি গলি ঘুরতে রাত ৯ টায় হোটেলে উঠলাম। ফ্রেশ হয়ে এক কাপ কফি খেয়ে শুয়ে পড়লাম। বেশ ক্লান্ত লাগতে তবে অনেক বেশি ভালো লাগছে। কারণ, বছরের শেষ সময় এখন কলেজ বন্ধ দিয়েছে কিছুদিন। সবাই ঘুরাঘুরি করছে আর এই সময় কলেজ থেকে ট্যুরে গেছে, বাবা আমাকে যেতে দেয়নি। তবে এমন ভাবে বাবা যে আমাকে ঘুরতে নিয়ে আসবে কখনো ভাবি নি। আর এত সুন্দরভাবে যে এত সুন্দর জায়গাতে ও যে যেতে পারবো তা তো স্বপ্নেও ভাবিনি। তবে ইচ্ছে ছিল পতেঙ্গ সৈকতে ঘুরতে আসার। এভাবে যে, সফল হবে তা কখনো ভাবি নি। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি নয়টা বেজে গেছে। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নিলাম। তবে ইচ্ছে ছিল সকালের সূর্যদয়টা দেখবো, কালকে ক্লান্ত মাখা শরীর আর উঠতে পারিনি। যাইহোক রেডি হয়ে আবার বের হয়ে গেলাম মোহামায়া লেগ দেখতে, হোটেল থেকে অনেকটাই দুর তবে না দেখে তো যাবো না চাঁদপুর। অনেক দিন পর এই আনন্দের দিন, হাত ছাড়া করছি না। তাই বাবাকে বলে মোহামায়া লেগে চলে এলাম। এই লেগটা অনেকটা ছোট ছোট জায়গা নিয়ে বিস্তারিত। ছোট ছোট পাহাড় সবুজ সব পাহাড় গুলো ভরপুর। দেখতেই মন ভরে যায়। রাস্তার দু'পাশে ছোট ছোট পাহাড় আর বড় বড় গাছ। মনে হচ্ছে পাহাড়া দাররা দাঁড়িয়ে আছে। টিকেট কেটেই নৌকার উঠে প্রায়৪ বর্গ কিলোমিটার নদী ঘুরলাম। ছোট ছোট নদী পাহাড়ের চিপায় দিয়ে বয়ে চলেছে এই নদী এবং বেশ কিছু ঝর্না ও রয়েছে। অনেক ঘুরা ঘুরি করার পরে আবারো ফিরে এলাম হোটেলে। অনেক দুরের গিয়েছিলাম তাই এসেই ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।

নানান জায়গায় নানান রকমের লোক বসবাস করে থাকে। আমরা ভ্রমণ না করলে বুঝা বড় দায়। যত ভ্রমণ করা যাবে ততই মানুষ জাতি প্রকৃতি সম্পর্কে কথা জানা যাবে, অন্যথায় নয়। মহামায়া লেগের পাশেই অনেক লোক বসবাস করে তাদের জীবনগুলো আমাদের মতো বিলাস বহুল নয়। খুব সাধারণভাবে তারা জীবন ধারণ করে। জীবন বাঁচতে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই হলেই তাদের যথেষ্ট। তার চেয়ে বেশি তাদের দরকার নেই। ঘুম থেকে উঠেই দেখি পাঁচটা বাজে। আমার খুশি কে দেখে, ঘুরতে এসে সূর্যোদয় না দেখে ঘুরতে যাওয়াটা বেশ হেলামির মতো মনে হয়। আজ তৃতীয় দিন চট্টগ্রামে আমাদের। আর আজকেই শেষ দিন গুলার।

নামাজ পরে সূর্যদয় উধিত হওয়া দেখলাম আহ মনটা ভরে গেলো। আজ সীতাকুণ্ডু থেকে গুলিয়াখালি বীচ যাবো। তাই সকাল সকাল নাস্তা করে আমরা বেরিয়ে পড়লাম। গুলিয়াখালি বীচের উদ্দেশ্যে এই জায়গাটা কক্সবাজারের থেকেও কম কিছু নয়। কক্সবাজারে যেমন সমুদ্র সৈকত তেমনি গুলিয়াখালি বীচ ও তার কম কিছু নয়। এখানে কক্সবাজারের মতোই সমুদ্রের পানি গুলো আচড়ে পড়ছে। প্রকৃতিটা জাস্ট অসাধারণ। মনে মনে ভাবছি, আমি যদি পানি হতাম নৃত্য করতাম প্রতিটা ঢেউয়ের সঙ্গে। নৃত্যের মাঝে মানুষদের ভরিয়ে তোলতাম আমার ঢেউয়ের খেলা। নৃত্যই যাদের পথ চলা তাদের মধ্যে আমার নৃত্য বেশ জমে তেতো । ভাবতেই মন খুশিতে ভরে উঠছে।

বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকতের অন্যতম একটি সৈকত। এখানে এসেই মনটা ভরে গেল। ভাবতে পারিনি বাংলাদেশে এত সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে এবং জায়গাটা এত সুন্দর ভাবে উপভোগ করতে পারব। যা গল্প শুনেছি তা এখন বাস্তবে অনুভব করছি এবং দৃশ্য দেখছি। সর্বপ্রথম যা দেখে আমি অবাক হলাম তা হল এখানে সমুদ্র সৈকত। অদ্ভুত করার বিষয় হলো এখানে বালু তম কিছুই দেখছি না তবে প্রাকৃতিকের গাছপালা দিয়ে আবরণে ঢাকা এ সমুদ্র সৈকতটি। পানিগুলো একদম আছড়ে আসছে । কিন্তু কিনারায় এসে পাচ্ছে না কোন বালি পাচ্ছে শুধুই গাছে শিকড়, হানা দিয়ে ঢেউগুলো এসেও নেই কোন বালি শুধু বড় বড় গাছের শিকড়। তেমনি এই সৈকতের কিনারায় রয়েছে অনেক পালিত গবাদি পশু পাখি, রয়েছে চারা গাছ । সৌন্দর্য বাড়াতে আর কি লাগে । পাহাড় ও সবুজ প্রকৃতিকে ছোঁয়া এই চোখ জুড়ানো জায়গা বেশ মনোমুগ্ধকর হলাম। এটা একটা দ্বীপ বললেই চলে। কারণ এখানে যেমন সৈকত রয়েছে তেমনি প্রাকৃতিকের সাথে মিশে আছে আর তাই গাছের গোড়ায় গোড়ায় এই সমুদ্রের পানি এসে জোয়ার জোয়ার ঢেউ এসে বাড়ি দিয়ে যাচ্ছে। এখানে যেমন ঘুরতে রোমাঞ্চকর তেমনি ভয়ঙ্কর বটে। এখানে কক্সবাজারের মত গোসল করা যায় তবে বেশি ঠিক নয়। যেতে ইচ্ছে করেছিল তবে ঢেউয়ের বয়ে যায়নি। এখানে কক্সবাজারের মতন পানি গুলো নয় মূলত এখানে অনেক গাছের থেকেই গাছের শিকড় পর্যন্ত পানি গুলো এসে পৌঁছায় তবে এখানে গভীরতা অনেক বেশি। দূর থেকে মানুষদের আনন্দ দেখে নিয়ে নিজে খুশি হলাম ঘুরাঘুরি করে সন্ধ্যার পরে হোটেলে এলাম কালকে চাঁদপুরে চলে যাব তাই মনটা যেমন খারাপ তেমনি একদম আনন্দ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকাল ৮টায় ট্রেন ধরলাম। চলে এলাম প্রাকৃতিকের হাওয়া খেতে খেতে। তবে এক বুক আনন্দ রয়েছে মনে। প্রাকৃতিকের নানান প্রভৃতির নানান ভাবে দেখে এলাম। নানান অঞ্চলের নানান রকমের মানুষের সাথে পরিচিত হলাম। নানান রকমের জায়গায় নানান রকমের আনন্দ এক বুকে নিয়ে এলাম। প্রকৃতি টা আসলেই নীলাভূমি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়