রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

জ্যোৎস্নাপ্রেমী কবি
অনলাইন ডেস্ক

রোমান্টিক ধাঁচের মানুষ মাত্রই চাঁদ ভালোবাসেন। জ্যোৎস্না রাত পছন্দ করেন, জ্যোৎস্নার কোলে জীবনের রঙিন সময়টাকে সঁপে দিতে চান। আবার পৃথিবীতে এমন মানুষ খুবই বিরল যারা কি না জ্যোৎস্না ভালোবেসে জ্যোৎস্নার আলিঙ্গনে নিজের মৃত্যু কামনা করেছেন। কিন্তু এমন মানুষ কি আছেন যারা জ্যোৎস্না ঝলমল রাতের চাঁদকে চুমু খেতে যেয়ে মৃত্যুর সুধা পান করেছেন? হ্যাঁ, পৃথিবীতে এমনই একজন জ্যোৎস্না প্রেমী মানুষ ছিলেন। আজ তাঁর গল্প শোনাব। বলছি প্রাচীন চৈনিক কবিতার রাজপুত্র লি বাই (৭০১-৭৬২ খ্রিষ্টপূর্ব) এর কথা, যিনি লি বো নামেও পরিচিত। তাঁকে তাঙ সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে গণ্য করা হয়। সাহিত্য বিশ্লেষকগণের মতে, লি বাই সহস্রাধিক কবিতা লিখেছেন।

লি বাই জ্যোৎস্না পাগল তো বটেই, প্রচণ্ড মদ প্রেমিও ছিলেন। তিনি সবসময় মদের পেয়ালায় বুঁদ হয়ে থাকতেন, যাকে কি না বলে টুপভুজঙ্গ। তাঁর কবিতায় প্রচুর পরিমাণে মদ পানের প্রসঙ্গ এসেছে। কবির জীবনের পরতে পরতে ছিল মদ ও জ্যোৎস্না বিলাস। তিনি চাঁদনী পসর রাতের এমনই পাগল ছিলেন যে, ঠিকরে ঠিকরে পড়া চাঁদের আলো পান করতে করতে তিনি মরতে চেয়েছিলেন। কবির জ্যোৎস্না রাতে মৃত্যুকামনা ও মদ পানের বিষয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় তাঁর ‘Drinking Alone in the Moonlight (জ্যোৎস্নায় একা একা মদ পান)’ কবিতায়। কবিতাটির শেষ কয়েক চরণের ভাবানুবাদ পড়লেই সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। যেমন-আমি গান গাইলে চাঁদ তাঁর আলোয় ঝিকিমিকি নাচে,/ আমি নাচলে আমার ছায়াও আমার সঙ্গে নাচন ধরে।/ যখন আমি শান্ত হই তখন আমরা এক সঙ্গে আনন্দ করি,/ যখন আমি সুরাসক্ত হই তখন সবাই নিজের মতো থাকি।/ আমি কসম কাটি অনুভূতি শূন্য এক অনন্ত যাত্রার,/ মেঘমেদুর নক্ষত্রের নদীতে আমাদের আবার হবে দেখা।

লি বাই প্রায়ই চীনের ইয়াংসি নদীতে জ্যোৎস্না স্নানে বেরুতেন। তেমনই এক জ্যোৎস্না ঝরা রাতে চাঁদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে তিনি ইয়াংসি নদীতে নৌকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। নদীর স্বচ্ছ জলরাশিতে জ্যোৎস্নার প্রেম অনাবিল। জ্যোৎস্নায় সাঁতার কাঁটছে নদীর তরঙ্গায়িত জল। চাঁদের আলোকচ্ছটায় যেন নদীর পানি দুধের শুভ্র চাদর গায়ে জড়িয়ে আছে। ভরা জ্যোৎস্নায় যৌবনা চাঁদ নদীর পানিতে বড় রুপোর থালার মতো জ্বলজ্বল করছিল।

মদের নেশায় চুর কবি ভেবেছিলেন যে তাঁর আরাধনায় রূপবতী চাঁদ বুঝি সত্যিই নদীতে নেমে এসেছে।

তিনি আনন্দে আত্মভোলা হয়ে নদীর পানিতে চাঁদের প্রতিবিম্বকে চুমু খেতে গিয়ে নৌকা উল্টে পড়ে যান, আর সে মুহুর্তেই কবি তাঁর পরম আরাধ্য জ্যোৎস্নার কোলে মৃত্যু সুধা পান করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়