বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৫, ১৪:৪২

খুনি মা ও মেয়ে আটক

পরকীয়া ও টাকা লেনদেনের কারণে খুন হয় শাহরাস্তির আলমগীর

পরকীয়া ও টাকা লেনদেনের কারণে খুন হয় শাহরাস্তির আলমগীর
মো. মঈনুল ইসলাম কাজল

শাহরাস্তি উপজেলার মনিপুর গ্রামের প্রবাসী আবুল হোসেন মানিকের বাসার ছাদে দিনমজুর আলমগীর হোসেন (৩৫) কে জবাই করে হত্যা করার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে শাহরাস্তি থানা পুলিশ। সোমবার (১৭ মার্চ ২০২৫) রাতেই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে বাড়ির মালিক প্রবাসী মানিকের স্ত্রী খোদেজা বেগম ও তার মেয়ে মাহমুদা আক্তার সোনিয়াকে থানায় নিয়ে আসে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর সোনিয়া এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে।

সোনিয়া জানায়, আলমগীরের সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে। আলমগীর তাকে বিরক্ত করতো। এই ক্ষোভের কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে।

সোনিয়া জানায়, উপজেলার চিতোষী বাজার থেকে ১২শ' টাকায় হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি কেনা হয়। সেই ছুরি দিয়েই এলোপাতাড়িভাবে আলমগীরকে আঘাত করে হত্যা করা হয়।

আলমগীরের স্ত্রী তাছলিমা বেগম জানান, আমার স্বামী সোনিয়ার কাছে ১২ লাখ টাকা পাবে। টাকা দিবে বলে সোনিয়া ফোন করে আমার স্বামীকে বাসায় নিয়ে খুন করে। সোনিয়া উক্ত ঘটনায় নিজে দায় স্বীকার করলেও এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত কারো সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তা বলছে না। কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইলে সূত্র ধরে পুলিশ ধারণা করছে, এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে। উক্ত হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করার অপরাধে সোনিয়ার মা খাদিজা আক্তার (৫০)কে পুলিশ আটক করেছে। এদিকে আলমগীরের বড়ো ভাই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। শাহরাস্তি থানা পুলিশ মা ও মেয়েকে চাঁদপুর কোর্টে প্রেরণ করেছে।

শাহরাস্তি মডেল থানার ওসি আবুল বাসার জানান, আলমগীর হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্যে প্রেরণ করা হয়েছে । উক্ত ঘটনায় প্রবাসী আবুল হোসেনের স্ত্রী ও মেয়েকে আটক করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালতে আসামীর ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের আটক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সোনিয়া একাধিক পরকীয়া প্রেমে আসক্ত ছিলো। প্রায় ৬ বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী খিতারপাড় গ্রামের মাইনুল ইসলাম তুষারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের পর সোনিয়ার স্বামী তুষার সৌদি আরব চলে যাযন। সোনিয়ার বাবা সৌদি প্রবাসী আবুল হোসেন দীর্ঘদিন যাবত সেখানে অবস্থান করছেন। তার একমাত্র ছেলে তারেক হোসেনও সৌদি প্রবাসী। ছেলের শ্বশুর বাড়ি একই ইউনিয়নের নাগবাড়ীয়া গ্রামে। ছেলের বৌ বেশিরভাগ সময় বাবার বাড়িতে থাকেন।

খুন হওয়া আলমগীর হোসেন এলাকায় শান্তশিষ্ট স্বভাবের হলেও সোনিয়ার পরকীয়া প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। ৩ সন্তানের জনক আলমগীর খুনের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (১৭ মার্চ ২০২৫) রাত ২ টায় শাহরাস্তি থানা পুলিশ আবুল হোসেনের পরিবারের ৪ সদস্যকে থানা হেফাজতে নেয়। এরা হলেন আবুল হোসেনের স্ত্রী খোদেজা বেগম, মেয়ে সোনিয়া আক্তার, ছোট মেয়ে মেহজাবিন মনিরা ও নাতি তাহমিদ হাসান। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ ২০২৫) দুপুরে ছোট মেয়ে মেহজাবিন ও নাতি তাহমিদ হাসানকে আবুল হোসেনের বড়ো মেয়ে মাকসুদা আক্তারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

পুলিশ জানায়, নিরাপত্তার জন্যে তাদেরকে নিয়ে আসা হয়। সোমবার রাতেই পিবিআইর এডিশনাল ডিআইজি মোস্তাইন হোসাইন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এছাড়াও চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফর রহমান শাহরাস্তিতে ছুটে আসেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়