প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
মতলব উত্তরের সুলতানাবাদ ইউনিয়নে পরাজিত দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার আমুয়াকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে ৬ জন গুরুতর আহত হন।
আহতরা হলেন আমুয়াকান্দা গ্রামের মৃত জুলমাদ মোল্লার ছেলে মোহন মোল্লা (৪৫), মোহন মোল্লার স্ত্রী রুমা বেগম (৪৭), মৃত দিদার বক্স প্রধানের ছেলে নৌকার চীফ এজেন্ট নূরুল ইসলাম (৬০), একই গ্রামের মজলু বেপারী, সোলায়মান প্রধান, মৃত আলীমুদ্দিন জমাদারের ছেলে শাহজাহান জমাদার (৫৫) ও সোলায়মান জমাদার (৫০)। তবে তাদের মধ্যে শাহজাহান জমাদার চশমা প্রতীকের কর্মী বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তাদেরকে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে নূরল ইসলাম, মোহন মোল্লা ও রুমা বেগমের অবস্থার অবনতি হলে কর্মরত চিকিৎসক ডাঃ জাবেদ ইকবাল তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে মতলব উত্তর উপজেলার সুলতানাবাদ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। ২৮ নভেম্বর নির্বাচনে ভোট গণনা শেষে বেসরকারিভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুবকর সিদ্দিক খোকন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী হাবিবা ইসলাম সিফাত, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজিম উদ্দীন সোহেল আনারস ও জসিম উদ্দিন জমাদার চশমা প্রতীকে পরাজিত হন। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে এ ঘটনার সূত্রপাত।
প্রত্যক্ষদর্শী আমুয়াকান্দা গ্রামের নূরুল ইসলামের স্ত্রী নূরজাহান বেগম জানান, ৩০ নভেম্বর সকাল ৮টার সময় আমার স্বামী বাজার করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে বেড়িবাঁধে উপস্থিত হলে ঘোড়া প্রতীকের কর্মী ও চশমা প্রতীকের কর্মীরা মিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা এলোপাতাড়ি মারধর করে। আমার স্বামীর ডাক-চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করে।
রুমা বেগম বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী হাবিবা ইসলাম সিফাতের নির্বাচন করায় ঘোড়া প্রতীকের আবুবকর সিদ্দিক খোকন, চশমা প্রতীকের জসিম উদ্দিন জমাদারের হুকুমে এ হামলা করা হয়েছে। জসিম জমাদারের ছোট ভাই জুয়েল জমাদার হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে।
এ বিষয়ে পরাজিত আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাবিবা ইসলাম সিফাত বলেন, আবুবকর সিদ্দিক খোকন ও জসিম উদ্দিন জমাদারের কর্মীরা আমার নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের উপর হামলা করেছে। আমি এই সন্ত্রাসী হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে প্রশাসনের নিকট দাবি জানাই।
এ বিষয়ে সুলতানাাবাদ ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবুবকর সিদ্দিক খোকন জানান, আমার বাড়ি থেকে হাবিবা ইসলাম সিফাতের বাড়ি ৩ কিলোমিটার দূরে। সংঘর্ষের ভয়ে ওই গ্রামে আমি প্রচার-প্রচারণা করতেও যাইনি। আমি ফোনে খবর পেয়েছি চশমা প্রতীকের জসিম জমাদার ও নৌকা প্রতীকের হাবিবা ইসলাম সিফাতের কর্মীদের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আমার কোনো হাত নেই। আমার কোনো কর্মীও এই ঘটনার সাথে জড়িত নেই।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) সুদীপ্ত রায় বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে। সুলতানাবাদ ইউনিয়নে ঘটনাটি ঘটেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে আমাদের ধারণা পারিবারিক অথবা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটতে পারে।