প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
৮০ বছরের পুরানো কাচারি ঘর রাতের আঁধারে গায়েব করে ফেলা হয়েছে। ঘরের কিছু অংশ পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকি অংশ ‘৯৯৯’ নাম্বারে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশ জব্দ করেছে। কাচারি ঘর গায়েবের ঘটনাটি বাড়ির সম্পত্তিগত বিরোধে হয়ে থাকলেও ভাড়া করা স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী গভীর রাতে এমন কা- ঘটায় বলে বাড়ির অধিকাংশ লোকজন জানিয়েছেন। গত শনিবার দিবাগত রাতে ঘটনাটি ঘটে হাজীগঞ্জের ৫নং সদর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া ভূঁইয়া বাড়িতে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, ভূঁইয়া বাড়ির কাচারি ঘরটি ১৯৪১ সালে নির্মাণ করা হয়। প্রায় ৮০ বছরের পুরানো ঘরটি অনেকটাই জরাজীর্ণ ছিলো। ঘরটি যতোই পুরানো হোক, এতে টিকাদান কেন্দ্রসহ বাড়িতে আজ যারা বড় হয়েছে তাদের বিয়ে-শাদি ও আরবি শিক্ষা হয়েছে। সময়ের পরিবর্তনে বাড়ির সবার বসতঘরের পরিবর্তন হলেও কাচারি ঘরটির তেমন পরিবর্তন হয়নি। বাড়িতে পরিবারগুলোর সদস্য বাড়ার সাথে সাথে নতুন করে বসতঘর তৈরির প্রয়োজন পড়ে। সেই প্রয়োজন থেকে বাড়ির কিছু পরিবার কাচারি ঘরটি স্বস্থানে রাখার পক্ষে আবার কিছু লোক এটি সরিয়ে অন্যস্থানে নেয়ার পক্ষে। এ নিয়ে বেশ কয়েটি সালিস হয়েছে। সালিস করা হলেও এতে সমাধান না হয়ে বিরোধ আরো তুঙ্গে উঠে। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার দিবাগত রাতে বাড়ির একটি পরিবার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে কাচারি ঘরটি গায়েব করার ঘটনা ঘটায়। রাতে কাচারি ঘরটি ভাঙ্গাকালে কে বা কারা ‘৯৯৯’ নাম্বারে ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা সবাই পালিয়ে গেলেও ট্রাকে ওঠানো কাচারি ঘরের মালামালসহ একটি পিকআপ জব্দ করে।
কাচারি ঘরটি রাখার পক্ষে মৃত আবুল কাসেমের ছেলে আবুল হাসেম (৬৭) ও মৃত ইদ্রিস ভূঁইয়ার ছেলে আঃ হাই ভূঁইয়া (৬৫) জানান, গভীর রাতে বাড়িতে যারা সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে কাচারি ঘরটি মাটির সাথে গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল পুকুরে ডুবিয়ে দিয়েছে ও ট্রাকে করে নিয়ে গেছে তারাও এ কাচারি ঘরে আরবি পড়েছে। বাড়িতে পথসহ নানা সমস্যা রয়েছে, সমাধানও রয়েছে। কিন্তু তাই বলে গভীর রাতে মাস্তান বাহিনী এনে এভাবে পুরো কাচারি ঘর গায়েব করে ফেলবে-এটাতো হতে পারে না। এ বিষয়ে আমরা আইনের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার চাইবো।
বাড়ির অধিকাংশ পরিবারের অভিযোগে অভিযুক্ত পরিবারের সদস্য মেহেদী হাছানের ছেলে মজিবুর রহমান তার পরিবারের পক্ষে জানান, বাড়িতে আমরা কয়েকটি পরিবার চাচ্ছি কাচারি ঘরটি বর্তমান স্থানের দক্ষিণপাশে পুকুর পাড়ে নেয়ার জন্যে। এজন্যে আমরা খরচের টাকা দিতে রাজি আছি। এছাড়া বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্যে ভালো একটি পথ তৈরিতে কাচারি ঘরটি এখান থেকে সরানো দরকার ছিলো।
কাচারি ঘরের মালামাল জব্দকারী হাজীগঞ্জ থানার উপ-সহকারী পরিদর্শক আব্দুল আজিজ জানান, ‘৯৯৯’ নাম্বারে ফোন পেয়ে আমরা সাথে সাখে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাঙ্গা কাচারি ঘরের কিছু মালামালসহ একটি পিকআপ দেখতে পাই। এরপরেই সেগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হারুনুর রশিদ জানান, কাচারি ঘরের কিছু মালামাল আমরা জব্দ করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।