এ ধরনের উদ্যোগ কৃষিখাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনা সম্ভব

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) পিএলসির ‘ভরসার নতুন জানালা’ শীর্ষক কৃষি সহায়তামূলক প্রকল্পের অধীন চাঁদপুরে কৃষি উদ্যোক্তা সমাবেশ ও প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় চাঁদপুর পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে কৃষির সমৃদ্ধিতে ইউসিবি এগ্রো-সিএসআর প্রকল্প ২০২৩-২৪-এর দিনব্যাপী দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

চাঁদপুর জেলার ৮টি উপজেলা থেকে প্রায় আড়াইশ’ কৃষি উদ্যোক্তা এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি এবং সভাপতিত্ব করেন উপায়-ইউসিবির উপদেষ্টা জিষ্ণু রায় চৌধুরী। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) পিএলসির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কোম্পানী সেক্রেটারি এটিএম তাহমিদুজ্জামান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও কৃষিতথ্য বিশ্লেষক রেজাউল করিম সিদ্দিক, জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান (জুয়েল), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত, পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ইউসিবি ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ ও প্রশিক্ষণার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি আমাদের কৃষি খাত। এই খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক নিজেদের কর্পোরেট সামাজিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে কৃষিখাতে যে সহায়তামূলক প্রকল্প ‘ভরসার নতুন জানালা’ গ্রহণ করেছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অন্য সব ব্যাংকও যদি এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে কৃষিখাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনা সম্ভব।

ডাঃ দীপু মনি আরো বলেন, কৃষিতে তরুণদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করে কৃষিকে লাভজনক পেশায় পরিণত করতে হবে। এজন্য কৃষি উদ্যোক্তার বিকল্প নেই। কৃষি উদ্যোক্তা তৈরিতে ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক ইঞ্চি খালি জায়গাও অনাবাদী রাখা যাবে না। এই কৃষি ক্ষেত্রটা যথাযথ ব্যবহার করতে পারলে বাংলাদেশ কৃষিতে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে। দেশের অভ্যন্তরীণ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিদেশেও খাদ্য রপ্তানী করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যখন ২০০৯ সালে সরকার গঠন করলো তারপর আবার দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলো। এর কারণ হলো জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা। এখন আর কোনো কৃষককে সারের দাবিতে আন্দোলন করতে হয় না। সার এখন কৃষকের দোরগোড়ায়। শেখ হাসিনার সরকার কৃষকের যা যা প্রয়োজন তা নিশ্চিত করেছে, ফলে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কৃষকদের মুখ্য ভূমিকার উপর জোর দেন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) পিএলসির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কোম্পানী সেক্রেটারি এটিএম তাহমিদুজ্জামান। তিনি তাঁর বক্তৃতায় টেকসই কৃষির উন্নয়নে অবদান রাখার জন্যে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করার মাধ্যমে কৃষকদের ক্ষমতায়নে ইউসিবির অবদানের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরেন। দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে কৃষি উদ্যোক্তাদের প্রায়োগিক দক্ষতার উন্নয়ন, বাজার ও বিপণন সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কৃষিঋণ সংক্রান্ত নীতিমালা ও সুদের হারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় ধারণা প্রদান করা হয়।

ভরসার নতুন জানালা প্রকল্পের আওতায় ইউসিবি ইতোমধ্যে ৫৫ হাজার তাল ও অন্যান্য গাছ রোপণ, ৩ হাজার কৃষি উদ্যোক্তার জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, কৃষকদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত স্মার্ট ডিভাইস (আরো মাছ) সরবরাহ এবং তামাকের বিকল্প ফসল গম ও ভুট্টা চাষে অনুপ্রাণিত করার মতো বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে।