মাছের ঘের নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে চান্দ্রা-সেকদী সড়ক

পুরানো এবং খুপরি ঘরে চলছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১নং বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। এছাড়াও মাদক এবং রাস্তাঘাটের সমস্যায় ভুগছে ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ। মাছের ঘের নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে চান্দ্রা-সেকদী সড়কটি। ৩ ওয়ার্ডের প্রায় ২০ হাজার মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।

বাজারের ভেতরে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি থাকার কারণে নানান সমস্যায় ভুগছেন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ জনগণ। ভবনের প্রবেশ পথটি খুবই সরু। পাশে ছাগলের হাট। পরিবেশ যাচ্ছেতাই। অথচ ইউনিয়নটি বেশ সমৃদ্ধ। এ ইউনিয়নে বহু গুণী মানুষ জন্মালেও এখানে দুটি ওয়ার্ড রয়েছে, যেখানে বিদ্যালয় নেই। ১ ও ৯নং ওয়ার্ডে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই।

এ ইউনিয়নে একটি রাস্তার জন্য ৩টি ওয়ার্ডের ২৫ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। রাস্তার অভাবে ইউনিয়ন পরিষদে আসতে তাদের কষ্টের শেষ থাকে না। চান্দ্রা-টুবগি রাস্তাটি প্রশস্ত এবং পাকা করা ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের জনগণের প্রাণের দাবি। চান্দ্রা বাজার এবং ইউনিয়ন পরিষদে আসার একমাত্র রাস্তা এটি। রাস্তাটিকে নদী এবং চর আস্তে আস্তে গিলে খাচ্ছে। কোথাও কোথাও রাস্তার দুই পাশ ভেঙ্গে সরু আইলে পরিণত হয়েছে। রাস্তাটি চলাচল উপযোগী হলে চান্দ্রার মানুষ অতি অল্প সময়ের মধ্যে জেলা সদর চাঁদপুরেও পৌঁছতে পারবে। এখানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২০টি মাছের ঘের রয়েছে। এই ঘেরের কারণে রাস্তা টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। সরেজমিনে গেলে জানা যায়, একজনেরই ৮/১০টি মাছের ঘের রয়েছে। সেকদী-মদনেরগাঁও ব্রিজের পশ্চিম অংশ ২০০৪ সালে কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ হয়। রাস্তা যখন ভালো ছিলো তখন এ পথটি ব্যবহার করতো হাজার হাজার মানুষ। বর্তমানে রাস্তাটির অধিকাংশ অংশ মাছের ঘেরে হেলে পড়েছে। সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এখন একটি রিক্সাও যাতায়াত করতে পারছে না। সেকদী-মদনেরগাঁও ব্রিজের পূর্ব অংশ চান্দ্রাবাজার পর্যন্ত সড়কটি এখন আইলে পরিণত হয়েছে। এখানে অতীতে রাস্তা ছিলো বলে মনে হয় না।

সেকদী ও মদনেরগাঁওয়ের বাসিন্দা ইয়াছিন, মোমিন তপাদার ও দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, রাস্তার দুপাশে প্রায় বিশটি মাছের ঘের রয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে ঘেরগুলো তৈরি করার কারণে রাস্তাগুলো ভেঙ্গে গেছে। যদি গাইডওয়াল দেওয়া হতো, তাহলে রাস্তাগুলো ঠিক থাকতো। তারা আরো বলেন, ধানুয়া, প্রত্যাশী, শোভান এবং বাগড়া বাজারের লোকজনও রাস্তাটি ব্যবহার করতো। প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের অবহেলা এবং নজরদারি না থাকার কারণে এমন অবস্থা হয়েছে।

৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ মানছুর খান এ প্রতিনিধিকে বলেন, মাছের ঘেরের কারণে রাস্তাটি নষ্ট হয়ে গেছে। ওরা প্রভাবশালী। আমাদের কথা শুনে না।

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তাই কাঁচা। তবে চান্দ্রা-টুবগি রাস্তাটির জন্য আমি প্রস্তাব দিয়েছি। এ রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তিন ওয়ার্ডে প্রায় ২০ হাজার মানুষ বসবাস করছে। এ রাস্তার অভাবে তারা ইউনিয়ন পরিষদ এবং বাজারে আসতে পারছে না। তিনি আরো বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটিও করা দরকার।

উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবরার আহম্মদ এ প্রতিনিধিকে বলেন, পুকুর এবং মাছের ঘের রাস্তা নষ্ট করার অন্যতম প্রধান মাধ্যম। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ আমলে নিয়েছে এবং আমাদেরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি। ফরিদগঞ্জ বিশাল এরিয়া। তাই একটু সময় লাগবে। আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবো।